পিদিম জ্বলা পরাণকাব্য
১০ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:৪৮
ভোরের আলো ফোটার যে ক্ষণ, যে সময়টাকে সূর্যের সঙ্গে আকাশের মিতালী হওয়ার মুহুর্ত বলে মৃন্ময়, সময়টা তার খুব প্রিয়। সময়টা যে সবসময় সে গভীর ঘুমে কাটায় তা নয়, আধো ঘুম- আধো জেগে থাকা। একান্ত নিভৃতে কাটানোর এ সময়টাতে কাক ডাকার শব্দও তার কাছে অসহ্য লাগে।
আধো ঘুমে কাঁথামুড়ি দিয়ে বিছানায় থাকা মৃন্ময়ের মোবাইলে, যাকে অফিসের ভাষায় সে মুঠোফোন বলে, সেখানে কারও অনুচ্চারিত বার্তা পৌঁছানোর শব্দ তাকে সচকিত করল, কিছুটা বিরক্তও। ঘুম ঘুম চোখে মুঠোফোনটি নিয়ে বিরক্তির চেয়েও বেশি হল বিস্মিত, বার্তা পাঠিয়েছে বহ্নি, ‘জান….কি কর?’
দীর্ঘ সময়ের সম্পর্কে বহ্নি তাকে নাম ধরে ডেকেছে, কখনও কখনও আবেগের আতিশয্যে কিছু অদ্ভুত সম্বোধনও সে করে। কিন্তু ‘জান’ সম্বোধন সে বহ্নির মুখে এই প্রথম শুনল। এ সম্বোধন মৃন্ময় তার বন্ধু সোহেলের প্রেমিকার মুখেই শুনত। ডাক শুনে হাসত মৃন্ময় আর বহ্নি। ঠোঁট ফুলিয়ে বহ্নি বলত, হাইব্রিড সম্বোধন।
সোহেলের প্রেমিকার হাইব্রিড সম্বোধন এখন বহ্নির মুখে। সেই হাইব্রিড ডাকে বিস্ময়ের ঘোর না কাটতেই দ্বিতীয় বার্তা মুঠোফোনে, ডার্লিং, লাভ ইউ। ভিড়মি খেয়ে যায় মৃন্ময়। পড়িমড়ি করে বিছানা ছেড়ে উঠে বসে সে- বহ্নির কি হয়েছে ! বছরের পর বছর চেষ্টা করেও যে মেয়েটার মুখ দিয়ে কিংবা ম্যাসেজে একবারও বাক্যটি উচ্চারণ করাতে পারেনি মৃন্ময়, এমনকি মৃন্ময়ের মুখ থেকে অবলীলায় বাক্যটি শুনে লজ্জায় বিনম্র হত যার চোখের পাতা, সেই বহ্নি এসব কী ছাইপাশ লিখছে?
বিস্ময় কাটাতে সাত সকালে একবার বহ্নির মোবাইলে সরাসরি ফোনও করে ফেলল মৃন্ময়, এসব কি ম্যাসেজ পাঠাচ্ছ বহ্নি? মুহুর্ত পেরুনোর আগেই জবাব মিলল বহ্নির–আমি ডুবসাঁতারের ভালবাসা চাই। যতটা দ্রুততার সঙ্গে বহ্নির জবাব মিলেছে, তার চেয়েও বেশি দ্রুততায় লাইন কেটে দিল সে। আচরণটা খুব নিষ্ঠুর লাগল মৃন্ময়ের কাছে। এরপর আবারও ফোন দিল মৃন্ময়, কিন্তু মোবাইল বন্ধ।
ডুবসাঁতারের ভালবাসা-এ আবার কেমন? মৃন্ময়ের অনুভবে তখন এমন জিজ্ঞাসা ডালপালা ছড়াচ্ছে। বামপন্থী ছাত্র রাজনীতিতে এক সময়ের মাঠ কাঁপানো নেতা মৃন্ময়, অমিমাংসিত যে কোন পরিস্থিতির সমাধান সে করতে পারে খুব সহজেই। এরপরও তার স্বভাবটাই এমন যে মনের মধ্যে কোনও প্রশ্ন জাগলে সেটার উত্তর না মেলা পর্যন্ত শান্ত হতে পারেনা সে। সেই মুহুর্তটায় মৃন্ময়ের চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে উঠে স্মৃতির পাতায় তোলপাড় তোলা কিছু মুহুর্ত।
তারও কিছুদিন আগে, যখন বর্ষার আগমণের সুর প্রকৃতিতে, একদিন মীরসরাইয়ের আবুতোরাব গ্রামে বৃষ্টির জল আর মানুষের চোখের জল মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল। চল্লিশ ছাত্রের মৃত্যুতে সেদিন লাশের জনপদে পরিণত হয়েছিল আবুতোরাব গ্রাম। সেখান থেকে ফিরে খুব বেশি মন খারাপ ছিল মৃন্ময়ের। মনটাকে হালকা করার জন্য মধ্যরাতে ফোন দিল বহ্নির মুঠোফোনে। কিন্তু মুঠোফোন বন্ধ, একবার, দুবার, তিনবার, দশবার…..রাতজুড়ে অজস্রবার ফোন। সেই রাতে আর সচল হয়নি বহ্নির মুঠোফোন। অমিংমাসিত অনুভূতি নিয়ে ঘুমোতে যাওয়া মৃন্ময় ভোর হতেই আরেকবার ফোন দিল বহ্নির মোবাইলে। না, তখনও বন্ধ।
তারও কিছুদিন পর একদিন ঝুম বৃষ্টিতে ভেজার শখ হল মৃন্ময়ের। মাঝে মাঝে সে এমনটা করে, বৃষ্টি নেমেছে আকাশ ছাপিয়ে, হঠাৎ ইচ্ছে হল মোটর সাইকেলের পেছনে বহ্নিকে বসিয়ে ছুটে যাবে সাগর পানে।
সেদিনও এমনই এক বৃষ্টির বিকেলে আকুতি ছিল মৃন্ময়ের মধ্যে, আকুতি ছিল বহ্নির মধ্যেও। সহকর্মী টিটুর মোটর সাইকেল ধার নিয়ে চেপে বসে বহ্নিকে নিয়ে। আকাশ ভেঙ্গে নেমে আসা বৃষ্টির জলে একাকার হয়ে তারা একসময় পৌঁছে সাগর সীমানায়, উত্তাল তরঙ্গ সেদিন ভাসিয়ে নেয় চোরাবালির চর। বৃষ্টির জল, সাগরের জল এক হয়ে মিশে যায় দূর পাহাড়ের ছায়ায় থাকা মানব-মানবীর আবেগের জলে।
না, এটি নয় কোন অরণ্যচারী মানবের নির্জন সেগুন পাতার ঘর। এক জনমের হংসমিথুন কিংবা ঘোর শ্রাবণের কোনও এক বিনিদ্র রজনীতে শোনা বেহুলা লক্ষ্মীন্দরের কল্পিত বাসরঘরও নয়। তারপরও নিজেকে অশেষ করা স্বপ্নচারী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর বহ্নির আবেগ মৃন্ময়কে সংক্রমিত করার চেয়েও বেশি বিস্মিত করল। প্রগতির রাজনৈতিক শিক্ষা তাকে মুহুর্তের জন্য বহ্নির কাছ থেকে কিছুটা দূরে সরিয়ে আনল।
সকালে মুঠোফোনে বহ্নির ম্যাসেজ পাবার পর মৃন্ময়ের চিন্তায় আগের সেই বিস্ময়ের ঘোর। এক এক করে জমা হওয়া অনুষঙ্গগুলো জানাতে মৃন্ময় একবার হিল্লোলকে ফোন দিল। বহ্নির সহপাঠী হিল্লোল, মৃন্ময়ের কাছের জন, দুষ্টুমি করে যাকে সে ডাকে ‘কমপ্ল্যান বয়’ বলে। বন্ধ হিল্লোলের মুঠোফোন। অমিংমাসিত অনুভূতির সমাধান পেতে নিরুপায় মৃন্ময় আরেকবার ফোন দিল বহ্নির মোবাইলে, যথারীতি তখনও বন্ধ সেটা।
কিছু আপাত প্রশ্ন, কিছু আপাত উত্তর-এমন অমিমাংসিত অনুভূতি নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে অফিসের উদ্দেশে রিক্সায় উঠল মৃন্ময়। মইনুলটার ইদানিং কি হয়েছে, ভূমিকা না দিয়ে যেন সে কথাই বলতে পারেনা। রিক্সায় ওঠার পর রিং বাজল মৃন্ময়ের, কল করেছে মইনুল। এ মুহুর্তে সে যে ধরনের কথাবার্তা বলার চেষ্টা করছে, তার কিছুটা হলেও আঁচ করে বুঝতে পারল মৃন্ময়, বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু মইনুলের মাইল পেরুনো ভূমিকায় একসময় ফোন কেটে দিল মৃন্ময়- তুই অফিসে আয়, কথা হবে।
অমিমাংসিত অনুভূতি মৃন্ময়ের মেজাজকেও কিছুটা খিটখিটে করে দিল, পুরো বিষয়টা এভাবে না বুঝলেও কিছুটা হলেও বুঝতে পারল তার অফিসের কনিষ্ঠ সহকর্মী নিশা। অফিস অ্যাসাইনমেন্ট একবার বুঝিয়ে দেওয়ার পর দ্বিতীয়বার প্রশ্ন করাতে মৃন্ময় যেভাবে ক্ষ্যাপে গেল, তাতে বিলম্ব না করে অ্যাসাইনমেন্ট কাভারের উদ্দেশ্যে চলে যাওয়াকেই এ মুহুর্তের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত মনে করল কিছুটা নাক উঁচু স্বভাবের মেয়েটি।
নিশা বেরিয়ে যাবার পর কম্পিউটার সাট ডাউন দিল মৃন্ময়। চেয়ারে বসে মাথায় হাত দিল মৃন্ময়, অমিমাংসিত অনুভূতি নি:সৃত প্রতিক্রিয়া তার বোধে। মইনুল কি এত সিরিয়াস কথা বলতে চায় তার সাথে, হিল্লোল কি তাকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে, ইদানিং বহ্নিও কি তাকে এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করছে, সব সব প্রশ্ন ঘিরে ধরেছে তাকে।
মৃন্ময় ভাবতে চাইল তার আচরণে কোন সমস্যা আছে কিনা। এক, দুই, তিন করে মেপে মেপে সে ভাবল, বহ্নি কিংবা হিল্লোলের সঙ্গে তার আচরণের কথা। কিন্তু এতে তেমন অসঙ্গতি না পেলেও এতটুকু ভাবল মৃন্ময়, অমিমাংসিত অনুভূতির মৃত্যু ঘটাতে হলে তাকে এসব প্রশ্নের উত্তর পেতে হবে।
উত্তর খোঁজার তাগিদ মৃন্ময়কে বারবার হিল্লোলকে ফোন করতে প্রলুব্ধ করল। মৃন্ময়ের নির্ভরতার জন হিল্লোল বহ্নির কাছেও নির্ভর করার মত একজন। দীর্ঘসময়ের সম্পর্কে হিল্লোলকে বহ্নি একজন ভাল বন্ধু, নিজের ভাইয়ের মত জানে, সেটাই জেনে এসেছে মৃন্ময়।
অমিমাংসিত অনুভূতির মৃত্যু ঘটাতে তাই হিল্লোলের ওপরই নির্ভর করতে চাইল মৃন্ময়। কিন্তু কিভাবে, ফোন যে বন্ধ। এই একটি পরিস্থিতিতে মানুষ যে কতটা অসহায় হয়ে পড়ে, কত ভাবনা যে এসে ভিড় জমায় মনে, টেলিফোনে বলা মৃন্ময়ের কথায় বুঝতে পারল সহকর্মী টিটু।
অমিমাংসিত অনুভূতির সমাপ্তি ঘটাতে গিয়ে স্বভাববশত কিছুটা রহস্যের ইঙ্গিত দিয়ে যখন টিটু বলল- চিন্তা করে দেখ, বহ্নি হয়ত সেই ম্যাসেজ অন্য কারও জন্য লিখে রেখেছে, ক্রসফায়ারে সেটা চলে এসেছে তোর মোবাইলে। তখন নখ খুটতে শুরু করল মৃন্ময়, কোন বিষয় নিয়ে খুব বেশি উদ্বিগ্ন হলে সবসময় মৃন্ময় যেটা করে।
টিটু ফোন কেটে দেওয়ার পরই বহ্নির নম্বর ডায়াল করছিল মৃন্ময়, কিন্তু বিপত্তি ঘটাল মইনুল। যতটা সিরিয়াস ভঙ্গিতে মইনুল মৃন্ময়ের অফিসে ঢুকল, তার চেয়েও বেশি সিরিয়াস হয়ে কিছু বলতে যাচ্ছিল, এবার ব্যাঘাত ঘটাল মৃন্ময়ের ফোন।
ফোন করেছেন ঢাকার বড় কর্তা, শহরের সব আলো-আঁধারির চারণক্ষেত্রগুলোর ময়নাতদন্ত করবেন তিনি। কাজ পাগল মৃন্ময় ছুটল আলো-আঁধারের খোঁজে, সঙ্গী স্বপ্ন বিনির্মাণের সহযাত্রী মইনুল।
পাহাড়ের খাঁজে যেখানে বসতি প্রাণহীন বাঘের, তার থেকে কিছুদূর গেলে রেলওয়ের বড় বাবুদের কান্ডকারখানা চোখে পড়ে আর ধীর হয়ে যায় ত্রিচক্রযানের গতি। ঠিক সেই ধরনের একটি মুহুর্তে অনিষ্পন্ন অনুভূতির মৃত্যু ঘটাতে মইনুলের হাত চেপে ধরল মৃন্ময়। পরামর্শ মইনুলের- বসতে হবে সামনা-সামনি, উজাড় করে দিতে হবে জমে থাকা যত না বলা কথা।
মইনুলের না বলা কথা’র পরামর্শ মৃন্ময়কে এ মুুহুর্তে একবার শত ব্যস্ততা ঝেড়ে সিআরবিতে গাছের ছায়ায় বসতে প্রলুব্ধ করল। নিস্তরঙ্গ এই সময়ে যখন সূর্যের তপ্ত রশ্মিকেও আটকে দেয় গাছের শাখা, তখন মৃন্ময়ের নাকের ডগায় বিন্দু বিন্দু ঘাম।
উদ্বিগ্নতা যখন সীমা ছাড়াল ব্যক্তিত্বও তখন সীমানা ছাড়িয়ে গেল, মৃন্ময়ের কপোল বেয়ে গড়িয়ে পড়ল কয়েক ফোঁটা জল। মৃন্ময়ের পিদিম জ্বলা পরাণকথা ঝলসে উঠে মইনুলের কাছে। উদ্বিগ্নতার চিহ্ন তখন মইনুলের কপালেও। যখন শুনে যতই ঘনিয়ে আসছে সময়, ততই বহ্নির গতি হয়ে যাচ্ছে স্তব্ধ, আবেগ স্পর্শ করে মইনুলকেও।
কোন এক জ্যোৎস্না রাতে কর্ণফুলীর তীরে সবুজ ঘাসের উদ্যান সাক্ষী হয়েছিল এক হংসমিথুনের জনম জনমের ভালবাসার, ডুবসাঁতারে সুখ খুঁজে নেয়া যে পানকৌড়িরা চুপি চুপি তীরে এসে শুনেছিল সেই ভালবাসার গল্প, তারা কি জেনে যাবে সবটাই আসলে পরিণত হচ্ছে মিথ্যার বেসাতিতে? মৃন্ময় আর মইনুলের অনুভবে এমন হাজারো প্রশ্ন।
মইনুলের পরামর্শেই নিজের মুঠোফোনে একবার বহ্নির টাইমলাইনে গেল মৃন্ময়। বহ্নির স্ট্যাটাস- ‘বদলে গেছে মুঠোফোনের সিম, বদলে গেছি আমি, বদলে গেছে আমার ডুবসাঁতারের সহযাত্রী’।
মৃন্ময়ের বুকের ভেতর শুরু হল তোলপাড়। হঠাৎ আকাশ ভেঙ্গে নেমেছে বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি পাহাড়ের উপর থেকে ঢল হয়ে এসে যেন ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তাকে। এক ঝাপটায় মৃন্ময়ের মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে হিল্লোলের টাইমলাইনে গেল মইনুল- ‘বদলে গেছে মুঠোফোনের সিম, বদলে গেছি আমি, নতুন করে পেয়েছি আমি ডুবসাঁতারের সহযাত্রী’।
অঝোর বৃষ্টি আর মৃন্ময়ের চোখের জল এক হয়ে গড়িয়ে পড়ে জমা হয় সবুজ ঘাসের উপর বিন্দু বিন্দু জলকণা হয়ে। মুহুর্তের পর মুহুর্ত পেরোয় নিশ্চুপ থেকে। অব্যক্ত অনুভূতির বোধহয় প্রকাশ ঘটে মৌনতায়। মৃন্ময় এক এক করে ভাবতে থাকে তার সীমাবদ্ধতার কথা। হুট করে রিক্সায় চাপতে পারেনা সে, এমন কোন বন্ধু নেই যাকে বললেই সাঁই সাঁই করে ছুটে আসবে বিলাস যান, মাসান্তে দু’বার পোড়া মাংসের স্বাদ নিতে গেলে ধেয়ে আসে যাপিত জীবনের বোঝা, একেই কি বলে অক্ষমতা নাকি অযোগ্যতা?
দূর সরোবরে ফোটে যে কমল, পিদিম জ্বালিয়ে মধ্যরাতে সেই কমল তুলে তার হাতে দেওয়ার নাম যদি হয় ভালবাসা, তবে সেই ভালবাসা কি কখনও শর্তের বাঁধনে বন্দি হয়? রাত জেগে টিনের চালে টুপটাপ শিশির পড়ার শব্দে যে পেয়েছিল আলিঙ্গণের আতিথেয়তা, সত্যিকারের ভালবাসা কি তার কাছে এত তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে ইতিকথা? দুর্মূল্যের বাজারে ভালবাসা যদি এত সস্তায় বিকোয়, তবে তারুণ্যে নেয়া নৈতিকতার শপথ কি ছিল শুধু ক’টা কাগুজে বুলি? নাকি গতিবেগের বিজ্ঞান আবেগ কেড়ে নিয়ে ভালবাসার সংজ্ঞা পাল্টে দিয়েছে? নিজের কাছেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে মৃন্ময়।
তারপর ব্যস্ত নাগরিকদের এই শহরে একদিন গোধূলী বেলায় কিচির-মিচির করে পাখির নীড়ে ফেরার শব্দ শুনে মৃন্ময়। আলো-আঁধারির সেই বেলায় লোডশেডিংয়ের ফাঁকে আকাশ থেকে উঁকি দিচ্ছিল চাঁদ। এই বেলাতেই একবার আলো-আঁধারির নিরাপদ সরোবরের ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে মৃন্ময় আর মইনুলের চোখ স্থির হয় আরেকটি আলিঙ্গনের আতিথেয়তার মুহুর্তে।
সারাবাংলা/এসবিডিই