আমি কি রকমভাবে বেঁচে আছি (অষ্টম পর্ব)
১০ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:০১
সম্মোহন
ঠিক ঘুম নয়, একটা ঘুম ঘুম তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাবের মধ্যেই যেন আধো ঘুম আধো জাগরনে থাকে সামিউল। সেই অদ্ভুত অবস্থার মধ্যেই সে বুঝতে পারে তার জায়গা বদল হয়েছে। সে এখন আর তার রুমে নেই. অন্য কোন রুমে। সে আর বিছানায় শুয়ে নেই। গদিওয়ালা আরামদায়ক বিশেষ চেয়ারে হেলান দিয়ে খুব আরামেই বসে আছে। রুমটাকেও কেমন যেন চেনা চেনা লাগছে। ওই তো, বলতে গেলে তার প্রায় পাশেই বিছানায় আধ শোয়া হয়ে আছে খালি গায়ের বৃদ্ধ, কেমন জ্বলজ্বলে চোখে যেন তার দিকে তাকিয়ে আছে। এতোটাই নেশার মতো লাগছে যে সামিউল চোখ মেলে রাখতে পারছে না। সামিউল বুঝতে পারছে তার এক্ষুণি এই মুহুর্তে এখান থেকে উঠে যাওয়া দরকার। কিন্তু শীতের রাত, জানালাটা খোলা, ঠান্ডা বাতাস আসছে, জানালাটা বন্ধ করা দরকার, কিন্তু গরম বিছানা আর লেপ ছেড়ে উঠতে ইচ্ছে করছে না, তার অবস্থাটা এখন এমন দাড়িয়েছে।
বৃদ্ধের এই রুমে সে অনেকবার এসেছে, কিন্তু কখনও এই হাতওয়ালা গদিআটা চেয়ারটাকে সে আগে দেখেনি। চেয়ারে আরাম করে হেলান দিয়ে বসে দুই হাত দুই গদিআটা হাতলের উপর রাখা, পা দুটো মেঝেতে, মনে হচ্ছে কেউ তাকে ধরে এই আরামদায়ক পজিশনে রেখে দিয়েছে। আরামে আপনিতেই দুচোখ বন্ধ হয়ে আসছে। মনে হচ্ছে সে ঘুমিয়ে পড়বে, কিন্তু আবার ভেতরের কেউ যেন তাকে বলে দিচ্ছে ঘুমিয়ে পড়লে চলবে না, ঘুমিয়ে পড়া যাবে না, কে বলছে এই কথা? তার ভেতরের অবচেতন মন?
বৃদ্ধ চাপা স্বরে বিরক্তিমাখা গলায় বললেন, ‘তোমার এই অংভং ভংচং আর কতক্ষণে শেষ হবে? ওর কথাবার্তা কতক্ষণে শুরু হবে? আমি ওর ভেতরের কথাগুলো শুনতে চাই, জানতে চাই। প্রতিটি মানুষের ভেতরে গভীরের আরো গভীরে না বলা অনেক কথা থাকে, যা সে পৃথিবীর কাউকে বলতে চায় না, অনেক অপরাধ ও অপরাধবোধ থাকে, আমি সেই অপরাধ ও অপরাধবোধটাই শুনতে চাই, তাহলে আমার কাজ হাসিল হবে!’
নির্জন এই ঘরটা প্রায়ান্ধকার, ঘরের মধ্যে কড়া আলো না থাকা, হৈহট্টগোলের তেমন কোন সম্ভবনা নেই, নার্স মেয়েটা ছুটিতে চলে গেছে, মন্ডল আছে নিজের কাজে, কলিংবেল চেপে না ডাকলে আপাতত এই ঘরে ঢোকার অনুমতি নেই তার। শুধু শরবত খাওয়ানোর পর ঘুম ঘুম ভাবের সামিউলকে তার রুম থেকে হাটিয়ে এই রুম পর্যন্ত এনে দেওয়াটাই তার কাজ ছিল। ধীর লয়ের ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক খুব আস্তে শোনা যায় না এরকম ভাব জলতরঙ্গের মতো শব্দে হিপনোসিসের মিউজিক বেজে চলেছে।
চেয়ারের পেছনে দাড়িয়ে থাকা সম্মোহনকারী মাঝ বয়সী লোকমান গোলদার যে নিজেকে হিপনোটিস্ট লোকম্যান বলে পরিচয় দেয়, সে ঠোটে আঙুল দিয়ে ইশারা করার পাশাপাশি প্রায় শোনা যায় না, এরকম একটানা একঘেয়ে গলায় বলল, ‘স্যার ও এখন প্রায় হিপনোসিসের পর্যায়ে চলে গেছে, আর কিছুক্ষণের মধ্যেই চেতন স্তর থেকে অবচেতন স্তরে চলে যাবে। আজ আমরা আশা করছি, অবচেতনের সর্বোচ্চ গভীর স্তরে যাবে, তাহলে আমরা ভেতরের আসল খবরটা বের করে আনতে পারব।’
বৃদ্ধ আগের মতোই চাপা অথচ বিরক্ত স্বরে বললেন, ‘আগের দিনও তো একই কথাই বলেছিলে। তাতে লাভের মধ্যে তেমন কোন লাভ হয়নি। তেমন কিছু বের করতে পারিনি যা দিয়ে ওকে ব্লাকমেইল কতে পারি। শুধু প্রেমের সাতকাহন শুনে আমার কি লাভ?’
হিপনোটিস্ট লোকম্যান আগের মতোই একঘেয়ে একটানা স্বরে বলল, ‘স্যার আপনি যা শুনতে চাইছেন সেরকম কোন কিছু ওর জীবনে যদি না থাকে? যদি একেবারে নির্ভেজাল নিষ্কণ্টক জীবন থাকে?’
ব্দ্ধৃ দুদিকে মাথা নাড়লেন কিনা স্বল্প আলোয় বোঝা গেল না, তবে তার কণ্ঠস্বরে বোঝা গেল, ‘আমি তা বিশ্বাস করি না। কোন মানুষের জীবনে কোন না কোন অপরাধ থাকবে না আর তাই নিয়ে সে অপরাধবোধে ভুগবে না এমনটি হতে পারে না। আর একজন মানুষের কাছে কোনটা যে অপরাধবোধ বোধ সেটাই তার কাছে মুখ দিয়ে বের করতে হবে। কারোর কাছে যৌনতা অপরাধবোধের কারণ হতে পারে, কারোর কাছে তা নাও হতে পারে, এটা মানুষের মগজের নিজস্ব চিন্তার কারণে হতে পারে। অনেক খুনীও নিজেকে অপরাধবোধ মুক্ত রাখতে পারে আবার অনেকেই খুব সামান্য কারণেই কাউকে বলে ফেলা একটা কথা থেকেও অপরাধ বোধে ভুগতে পারে। আমি চাই ওর ব্যাপারটা কি সেটা জানতে।’
হিপনোটিস্ট লোকম্যান এবার চেয়ারের পেছন দিক থেকে সামনের দিকে এলো, ডান হাতের দুআঙুলের ফাকে হিপনোসিসের রুপালি রঙের চেনওয়ালা লকেটটা ঝুলছে, তার হাতের ট্যাবের মতো একটা ডিভাইস, সেই ডিভাইসের মধ্যে স্বল্প আলোয় চাকার মতো একটা রেখা ঘুরে ঘুরে চক্রাকার গভীর থেকে গভীরে চলে যাচ্ছে, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ওটার আর কোন দরকার নেই। লোকমান একঘেয়ে গলায় কথা বলে যেতে লাগল, যেন কথাটা শুধু বৃদ্ধকেই নয়, সামিউলকে শোনাচ্ছে, ‘ মহাশক্তিশালী অবচেতন মনকে নিজের ই”ে তিনটি স্তর আছে হালকা বা লেথার্জিক স্তর, মাঝারি বা ক্যাটাে গভীর বা সমনববুলিি লপটিক স্তর ও স্টক স্তর। গভীর বা সমনবুলিস্টিক স্তরে পৌছালে মানুষ তার ভেতরের যত অজানা তথ্য প্রকাশ করতে থাকে। অবচেতন মনের গতি প্রকৃতি চেতন মন থেকে আলাদা। এর কাজকারবার সোজা সাপ্টা, কোন ম্যারপ্যাচের ধার ধারে না। কোন কোন ক্ষেত্রে শিশুর মতো, যা বলা হচ্ছে তাই বুঝবে তাই উত্তর দেবে। চেতন মন অনেক কিছুই ভুলে যায়, ভুলে থাকতে চায় কিন্তু অবচেতন মন কিছুই ভোলে না। অনেক ঘটনা স্মৃতি যা আপনার চেতন মন ভুলে গেছে বা ভুলে যাওয়ার ভান করছে কিন্তু সেসব জমা আছে অবচেতন মনে, সম্মোহনে তা উগরে দেয়।
বৃদ্ধ আগের চেয়ে গলায় বিরক্তি মিশিয়ে কিছুটা শব্দ করেই বললেন, ‘তোমার ওইসব জ্ঞানের কথা রাখো। তোমার ওইসব জ্ঞানের কচকচানি শোনার জন্য আমি তোমাকে কাড়ি কাড়ি টাকা দেই না। টাকা দেই কাজের ফলাফলের জন্য। আমার কাজের ফলাফল কি? শূন্য। গত দুটো সেশনে তুমি ভেতরের তেমন কোন খবরই বের করতে পারোনি।
‘সেটাই আপনাকে বলতে চাইছি স্যার।’ লোকম্যানের গলায় তেমন কোন ওঠাপড়া নেই। ‘আমার প্রথম দুই সেশনে সাবজেক্ট মোটামুটি লেথার্জিক ও ক্যাটাটয়িন স্তরে পৌছে গিয়েছিল, যা থেকে ওর জীবনের জানা কথাগুলোই আমরা মোটামুটি ওর কাছ থেকে বের করতে পেরেছি। আর ওর যাতে কোন ক্ষতি না হয় সেজন্যই সেই সময়ে তেমন কোন চাপ দেইনি। কিন্তু আজকের ওর শরীরের অভিব্যক্তি দেখে মনে হচ্ছে ও সমনমবুলিস্ট স্তরে বা সোজা বাংলায় বললে গভীর স্তরে পৌছে গেছে, যে স্তরে পৌছালে মানুষের ভেতরের যত অব্যক্ত কথা সব বের করে আনা যায়। সম্মাহিত অবস্থায় শরীরের পেশীগুলো শিথিল হয়ে যায়, ভাবলেশহীন হয়ে যায় মুখের চেহারা। শ্বাস-প্রশ্বাস অপেক্ষাকৃত গভীর হয়ে যায়, পালস বিট কমে যায় অনেকখানি, চোখের পাতা বন্ধ অবস্থায় চোখ দুটি নড়াচড়া করতে থাকে, এখন এই অবস্থায় চলে এসেছে সাবজেক্ট।’
বৃদ্ধর গলা থেকে বিরক্তির ভাব কিছুটা কমেছে, তিনি জানতে চাওয়ার মতো করে বললেন, ‘মূল কাজটা শুরু করবে কখন?’
‘এই তো এখনই। অবচেতন মনের গতি প্রকৃতি চেতন মন থেকে আলাদা। এর কাজকারবার সোজা সাপ্টা, কোন ম্যারপ্যাচের ধার ধারে না। কোন কোন ক্ষেত্রে শিশুর মতো, যা বলা হচ্ছে তাই বুঝবে তাই উত্তর দেবে। চেতন মন অনেক কিছুই ভুলে যায়, ভুলে থাকতে চায় কিন্তু অবচেতন মন কিছুই ভোলে না। অনেক ঘটনা স্মৃতি যা আপনার চেতন মন ভুলে গেছে বা ভুলে যাওয়ার ভান করছে কিন্তু সেসব জমা আছে অবচেতন মনে, সম্মোহনে তা উগরে দেয়। সম্মোহনের সাহায্যে মানুষ অতীতে ফিরে যেতে পারে, সেই অতীতের ঘটনায় ফিরে যেতে পারে মানুষ। আমাদের জীবনে আজ পর্যন্ত যা কিছু ঘটেছে, আজ পর্যন্ত যা কিছু দেখেছি, শুনেছি বা অনুভব করেছি, সবই জমা আছে আমাদের স্মৃতিতে।’
‘তুমি এখন চেতনার গভীর স্তরে আছো। সুগভীর স্তরে তলিয়ে আছো তুমি। তুমি কি আমার কথা শুনতে পাচ্ছো? শুনতে পেলে ঠোট নেড়ে শুধু বলো হ্যা অথবা না। আর কিছু বলার দরকার নেই তোমার। ;
‘হ্যা।’
‘আগের চেয়ে আরো অনেক গভীরভাবে সম্মোহিত হবে তুমি আজ। সম্মোহনের অনেক গভীর স্তরে সর্বোচ্চ গভীর স্তুরে পৌছু যাবে তুমি এখন। আমি যা জানতে চাইব, তোমার ভেতরের যত না বলা কথা, যত ভয়, ভালবাসা, অপরাধবোধ সবই তুমি বলবে আমাকে আজ।’
‘বলবো।’
‘তোমার ভাবভালবাসার কথা বলো। তুমি কি নতুন করে আবার কারোর প্রেমে পড়েছো?’
‘বুঝতে পারছি না।’
‘তোমার আগের প্রেমিকাকে সরিয়ে মনের মধ্যে কেউ কি জায়গা করে নিতে শুরু করেছে? আমাদের নার্সকে কি তোমার ভাললাগতে শুরু করেছে? ভালবাসতে ইচ্ছে করছে?’
‘হ্যা।’
‘তাহলে তোমার শেলীর কি হবে? সেও তো এখন একা আছে? তার সাথে তোমার দেখাসাক্ষাৎ হচ্ছে। তুমি তো তাকেও ভালবাসতে। এখন কি আর শেলীকে ভালবাস না?’
‘জানি না।’
‘তোমার মন কি বলছে?’
‘মন শেলীকেও চাইছে আবার নার্সকেও চাইছে।’
হিপনোটিস্ট লোকম্যান অর্থপূর্ণ দৃষ্টিতে বৃদ্ধের দিকে তাকাল, কিন্তু বৃদ্ধের দৃষ্টিতে এখনও বিরক্তি ঝরে পড়ছে যেন বলতে চাইছেন কি প্রেম ভালবাসা নিয়ে ফ্যাদরা প্যাচাল পাড়তে শুরু করেছো? আসল কথা জিজ্ঞেস করো।
‘এখন যদি শেলী আবার তোমার কাছে ফিরে আসবে কি করবে তুমি? আর নার্সও যদি তোমাকে ভালবাসে?’
‘জানি না।’
‘আচ্ছা, শেলীকে নিয়ে তোমার যে অবসেশন আছে সেটা কি মনের ভালবাসার চেয়ে শারীরিক ভালবাসার ব্যাপারস্যাপার? শেলীর সাথে তোমার ফিজিক্যাল রিলেশন ছিল?’
‘হ্যা।’
‘অন্য কারোর সাথে?’
চুপ!
‘তার মানে অন্য কারোর সাথে তোমার ফিজিক্যাল রিলেশন ছিল? কে সে?’
‘কহিনুর। স্বামী পরিত্যাক্তা। আমাদের গ্রামের। বাড়িতে মায়ের জন্য রান্নাবান্না কাজটাজ করে দিতে আসতো।’
‘সেই কহিনুরের পরে কি হলো?’
‘সে বাসাবাড়ির কাজ নিয়ে সৌদিতে চলে গেছে। তারপরে আর জানি না।’
বৃদ্ধের মুখ থেকে বিরক্তি সরে কি কৌতুহল দেখা দিল, তিনি ইশরায় জানতে চাইলেন এসব স্বীকারোক্তি ঠিকঠাকভাবে রেকর্ড হচ্ছে কিনা!
‘কহিনুরের সাথে মেলামেশাই কি তোমাকে সবসময় এক ধরণের অপরাধ বোধ তাড়িয়ে বেড়ায়?’
সম্মোহিত সামিউল দুদিকে মাথা নাড়ল, ঠোট নড়ল না।
‘তুমি ভেতরে ভেতরে এক ধরণের অপরাধবোধে ভোগো, সেটা তাহলে কহিনুরের কারণে না?’
‘না।’
‘তাহলে কি কারণে?’
‘মায়ের কারণে?’
‘মায়ের কারণে অপরাধবোধে ভোগ কেন? তুমি মায়ের জন্য যা করেছো, যেভাবে সেবা করেছো, পৃথিবীর কোন সন্তান বোধ হয় এরচেয়ে বেশি কিছু করতে পারে না, করোনি?’
‘করেছি।’
‘তাহলে অপরাধবোধে ভুগছো কেন? মায়ের কারণে শেলীর প্রেমকে ছেড়ে দিতে হয়েছে বলে? বয়স পেরিয়ে গেলেও বিয়ে করতে পারনি বলে? নাকি নিজের ক্যারিয়ারের দিকে তাকানোর সময় পাওনি বলে?’
‘না, তা নয়।’
‘তাহলে কি? তুমি মায়ের এতো যোগ্য সন্তান! গোটা গ্রামবাসির কাছে মায়ের সেবাই তুমি অনন্য দৃষ্টান্ত। তোমাকে তো বলতে গেলে তারা ফেরেশতার মতো জানে, তাহলে তুমি অপরাধবোধে ভুগছ কেন? মানুষের এক সময় না এক সময় মৃত্যু হয়। অসুখে ভুগে রোগে শোকে তোমার মা মারা গেছে বলে?’
‘হ্যা। মায়ের মৃত্যুর কারণে।’
‘হুম, সেটাই তো বলছি। কিন্তু মৃত্যুর মতো নিয়তিতে তো মানুষের কোন হাত থাকে না।’
‘থাকে।’
‘মানে? কি বলতে চাইছো তুমি?’
‘আমিই আমার মায়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী!’
‘বুঝতে পারছি, হয়তো একা একা মায়ের সেবা করেছো, পরিচর্যা করেছো, কিন্তু প্রপার ট্রিটমেন্ট হয়তো দিতে পারোনি, এজন্যই এরকমটি ভাবছো, কিন্তু কোনটা প্রপার ট্রিটমেন্ট তা কে বলতে পারে?’
‘তা নয়।’
‘তাহলে কি?’
‘আামি আমার অসুস্থ মাকে নিজের হাতে খুন করেছি!’
চলবে…
সারাবাংলা/এসবিডিই
আমি কি রকমভাবে বেঁচে আছি (অষ্টম পর্ব) ঈদুল ফিতর ২০২৪ উপন্যাস প্রিন্স আশরাফ