ঢাকা: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনে ম্যানুয়ালি ভোট গণনা, সিসিটিভির আওতায় ভোটকেন্দ্র আনা, মনিটরের মাধ্যমে সরাসরি ভোট গণনা সম্প্রচার, ভোটারদের সুবিধার্থে পৃথক এন্ট্রি ও এক্সিট গেট নিশ্চিত করাসহ সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্নের দাবি জানিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) শিক্ষক সমিতির লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন। বক্তব্যের শুরুতে তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে কাঙ্ক্ষিত মান ও পর্যায়ে উন্নীত করতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত শক্তির কোনো বিকল্প নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কল্যাণ এবং গণতান্ত্রিক চর্চা বিকাশে জকসু নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি স্বচ্ছ, সুন্দর ও স্বতঃস্ফূর্ত নির্বাচনের মধ্য দিয়েই শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব বিকশিত হবে, যারা বিশ্ববিদ্যালয় বিনির্মাণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতা ও উদ্ভূত প্রশ্নগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন কোনো ধরনের ত্রুটি বা বিতর্কের সুযোগ না থাকে, সে বিষয়ে শিক্ষক সমিতি সচেতন।’ এ লক্ষ্যে আসন্ন জকসু নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে ম্যানুয়ালি ভোট গণনা, সিসিটিভির আওতায় ভোটকেন্দ্র আনা, মনিটরের মাধ্যমে সরাসরি ভোট গণনা সম্প্রচার, ভোটারদের সুবিধার্থে পৃথক এন্ট্রি ও এক্সিট গেট নিশ্চিত করা এবং ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় অপ্রয়োজনীয় জটলা রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকর ভূমিকা নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি। একইসঙ্গে অমোচনীয় কালির কার্যকারিতা নিয়েও যেন কোনো প্রশ্ন না ওঠে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এ ছাড়াও তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা পরিহারের আহ্বান জানান এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের প্রতি নির্মোহ ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের উদাত্ত আহ্বান জানান।
বক্তব্যের একপর্যায়ে অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সহকর্মী সহযোগী অধ্যাপক ড. তারেক বিন আতিকের বিরুদ্ধে কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ওই সংবাদগুলো মিথ্যা ও প্ররোচিত এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই। সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা লিখিতভাবে বিভাগীয় চেয়ারম্যানকে জানিয়েছেন যে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।‘ ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক মিথ্যা সংবাদ প্রচারকারী পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন বলেও তিনি জানান।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এ ধরনের সংবাদ আসন্ন জকসু নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে।’ এ বিষয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের শেষাংশে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন বলেন, ‘সাংবাদিকদের প্রতি শিক্ষক সমিতির আন্তরিক আহ্বান বিবেকের দায়বদ্ধতা থেকে সত্য ও সঠিক তথ্য উপস্থাপনে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। কোনো ব্যক্তির চরিত্রহননমূলক ও মিথ্যা সংবাদ প্রচারের ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।’
সংবাদ সম্মেলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মেঅশাররাফ হোসেনসহ শিক্ষক সমিতির অন্যান্য নেতারা, বিভিন্ন দফতরের পরিচালক এবং সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।