ঢাকা: দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলা করে অগ্নিসংযোগ এবং সাংবাদিক নুরুল কবিরকে হেনস্তা করার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজেএ)।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বিপিজেএর সভাপতি একে এম মহসীনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গণী চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, প্রথম আলোর উপসম্পাদক লাজ্জাত এনাব মহছি, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল তালুকদার, সিনিয়র ফটোসাংবাদিক, বুলবুল আহমেদ আনিসুল ইসলামসহ সংগঠনের সদস্যরা।
মানববন্ধনে কাদের গণী চৌধুরী বলেন, ‘সরকার যদি প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলার বিচার না করে, তাদের গায়ে কলঙ্কের তিলক থাকবে।’
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে ন্যাক্কারজনক হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব বলেন, ‘প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখেছি। অসহায় সাংবাদিকরা প্রাণ বাঁচাতে ছোটাছুটি করছে। ডেইলি স্টারের ছাদের উপরে আশ্রয় নিয়েছে একজন বোন। তার সেই দিনের কাকুতি মিনতি বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে। এ দৃশ্য আমরা দেখতাম উনিশশো একাত্তরে। এ কেমন সভ্যতা! এ কেমন মানবতা!’
তিনি আরও বলেন, ‘যে মানুষকে পুড়িয়ে মারে, তাকে সভ্যতা বলব কীভাবে? মানবতা বলব কীভাবে? এটা গণতন্ত্রের ওপর হামলা। এ কর্মকাণ্ডকে আমি রাষ্ট্রদ্রোহ কর্মকাণ্ড হিসেবে চিহ্নিত করতে চাই। কোনো দেশপ্রেমিক, সভ্য মানুষ, যার মধ্যে ন্যূনতম মনুষ্যত্ব বোধ আছে, তারা এ কাজ করতে পারে না। এসব রাষ্ট্রদ্রোহীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারকে আহ্বান জানাই। না হয়, এ অপকর্ম বাড়তেই থাকবে।’
কাদের গণী বলেন, ‘অনেকে বলছে, নয়াদিগন্ত ও আমার দেশে হামলা হয়েছে। তার জন্যতো এদেশের মানুষ জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে তাদের দেশ থেকে তাড়িয়েছে। তাদের কালিমা আমরা মুছে দিচ্ছি না। মানুষ তো বলবে, তাদের চাইতেও তুমি খারাপ করছো।’
বাংলাদেশের মূলে আঘাত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না, আর কোনো গণমাধ্যমের ওপর আঘাত আসুক। আমরা চাই না, আর কোনো সংবাদ মাধ্যমের কর্মীর ওপর আঘাত আসুক। আমরা বাক স্বাধীনতা চাই। আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চাই। আমরা একটা মানবিক বাংলাদেশ চাই। সাংবাদিকরাই সাংবাদিকতাকে বাঁচাতে পারে। তাই আমাদের প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধতা। এ আঘাত প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের ওপর না, এটা বাংলাদেশের মর্ম মূলে আঘাত। আমরা বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি করার ফলে এ ধরনের হামলাকারীরা সুযোগ পায়। আমরা চাই না, আর কোনো গণমাধ্যমের ওপর হামলা হোক।’
অন্যান্য বক্তরা বলেন, গণমাধ্যমে আঘাত করা মানে স্বাধীন সাংবাদিকতা, গণতন্ত্র ও বাংলাদেশের নির্বাচন বানচাল করার একটা চক্রান্ত। বিগত সময়ে আমরা দেখেছি, কেউ কোনো আক্রমণ করলে হেলমেট পরে আসতো। এবারের আক্রমণে তারা মুখ খোলা রেখেই এসেছে। কারণ তারা জানে, তাদের কিছুই হবে না। এ হামলাকারীদের মুখের পেছনের মুখ খুঁজে বের করতে হবে।