ঢাকার উড়ালপথে গাড়ির গতি হবে ৮০ কি.মি.
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৩:২৮
।। সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: রাজধানীর এক লাখ যানবাহন রাস্তা থেকে সরিয়ে উড়ালপথে নিয়ে যাওয়া হবে। যেখানে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার বেগে ছুটবে গাড়ি। রাজধানীর ভেতরে ৩১টি স্থান থেকে উড়ালপথে উঠা-নামা করা যাবে। এটি হচ্ছে ঢাকার প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। ৫ থেকে ৬ তলা ভবনের সমান উঁচু হচ্ছে উড়াল এ সড়কপথ।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে থেকে রেললাইনের ওপর দিয়ে যাচ্ছে এই উড়াল সড়কপথ। ইতোমধ্যে বনানী পর্যন্ত উড়ালপথের পিলার গাঁথা শেষ হয়েছে। শুরু হয়েছে স্প্যান তোলা। তারপর স্প্যানের ওপর সড়কপথ তৈরি করে দেওয়া হবে। বনানী পর্যন্ত চলতি মে মাসে শেষ করার পরিকল্পনা করেছে সেতু বিভাগ। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। নির্মাণ করছে ইটাল-থাই আর অর্থ সহযোগিতা দিচ্ছে চীনের সিনোহাড্রো।
ঢাকা ফাস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের (ডিএফএএ) প্রকল্প পরিচালক এএইচএমএস আক্তার সারাবাংলাকে বলেন, বিমানবন্দর সড়কের পাশে দু’টি স্প্যান তারা তুলেছেন। এ পর্যন্ত ১ হাজার ৩০৪টি পাইল, ২৮০টি পাইল ক্যাপ, ৬২টি ক্রস বিম, ১৬৩টি কলাম, ৮৪টি আংশিক কলাম এবং ১৮৬টি আই গার্ডার নির্মাণ শেষ হয়েছে।
মে মাসের শেষ নাগাদ বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত প্রায় ৮.৯ কিলোমিটার উড়াল সড়ক হয়ে যাবে। তবে এই অল্প দূরত্বে উড়াল সড়ক চালু করতে চায় না সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। প্রকল্পের আরেক অংশ মগবাজার পর্যন্ত সেতু শেষ হলে যানচলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, আগামী বছরের জুনে মগবাজার পর্যন্ত কাজ শেষ হবে। তখন এর সুফল পাওয়া শুরু হবে। সাধারণ যানবাহনের জন্য খুলবে ঢাকার প্রথম উড়াল সড়ক। প্রকল্পের সাবেক পরিচালক ও সেতু বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী কাজী ফেরদৌস আহমেদ জানান, প্রায় ৮০ কিলোমিটার বেগে একেকটি গাড়ি উড়াল সড়ক ধরে ঢাকার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে চলে যাবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ধরে দিনে এক লাখ যানবাহন পার হবে। প্রকল্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাজধানীর ৩১টি স্থান থেকে গাড়ি এক্সপ্রেসওয়ে উঠা-নামা করার র্যাম্প যুক্ত হবে।
প্রাইভেট কার থেকে শুরু করে সব ধরনের গাড়ি এক্সপ্রেসওয়ে থেকে ১শ থেকে ৪শ টাকা টোল দিয়ে চলবে। কোনো ট্রাফিক সিগন্যালে গাড়িকে থামতে হবে না। মিনিট বিশেক সময়ে বিমানবন্দর থেকে মগবাজার হয়ে কমলাপুর এবং আধা ঘণ্টায় গিয়ে নামা যাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের যাত্রাবাড়ী অংশের কুতুবখালিতে। এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে ঢাকা শহরের অন্তত ৩০ ভাগ গাড়ি চারলেন প্রশস্ত এ এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের সুযোগ পাবে। মূল সড়কে তখন চাপ অনেকটাই কমবে। প্রায় ১শ’ বছরের স্থায়িত্ব থাকবে এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের। নির্মাণ কালে সাড়ে ৩ বছর সহ ২৫ বছর বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান থাইল্যান্ডের ইটাল-থাই এখান থেকে টোল আদায় করবে। পিপিপি ভিত্তিতে এটি নির্মাণে ব্যায় হচ্ছে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা। প্রাইভেটকারের মতো হালকা যানে ১শ’ এবং ভারি যানে ৪শ’ টাকা টোল দিতে হবে। দুই চাকার মোটরসাইকল বা তিনচাকার গাড়িকে এটি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। এক্সপ্রেসওয়েতে জরুরি কারণে গাড়ি থামানোর প্রয়োজন পড়লে, কিছুদূর পর পর থাকা সার্ভিস লেনে দাঁড়ানো যাবে।
সারাবাংলা/এসএস/এটি