‘মালিক-শ্রমিকে ঐক্য নয়, শ্রমিকে-শ্রমিকে ঐক্য হতে হবে’
১ মে ২০১৯ ১২:৪৪
ঢাকা: বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, মালিক-শ্রমিকে ঐক্য নয়, শ্রমিকে শ্রমিকে ঐক্য হতে হবে। ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলন ছাড়া কোনোভাবেই অধিকার আদায় করা সম্ভব হবে না। ক্ষেত মজুর কৃষকসহ শ্রমজীবী মানুষের জন্য আলাদা পেনশন স্কিম চালু করতে হবে। পেনশন স্কিম চালু করতে হবে যেন শ্রমিকরা তাদের জীবনের নিশ্চয়তা পায়।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, ‘১০ হাজার পোশাককর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তিন হাজার শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে, এটি হতে পারে না। টিআইবি রিপোর্ট দিয়েছে শ্রমিকদের মজুরি তো বাড়েই নাই, বরং ৩৭ শতাংশ কমে গেছে।’
পুরানা পল্টন মোড়ে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাশেদ খান মেনন এ সব কথা বলেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন।
আমিরুল হক আমিন বলেন, ‘অনেক কারখানায় এখনও নূন্যতম মজুরি বাস্তবায়ন হয়নি। সকল কারখানায় সরকার ঘোষিত নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন করতে হবে। যাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাদের পুনর্বহাল করতে হবে। যাদের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে আমরা তা প্রত্যাহারের দাবি জানাই। ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার চাই।’
বিভিন্ন ডান বাম সংগঠনের পাশাপাশি ধর্মভিত্তিক ইসলামী দল ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন নামের একটি সংগঠনকেও মে দিবসে বর্ণাঢ্য র্যালি করতে দেখা গেছে। চরমোনাই পীরের ওই সংগঠনটি ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়নের দাবি জানায়।
অধিবাসীদের শ্রমিক সংগঠন শ্রমজীবী ফ্রন্ট নামের একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রমিক নেতা মাইকেল চাকমাকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানানো হয়। এই সংগঠনের পক্ষে অভিযোগ করা হয় পাহাড়ের শ্রমিক নেতারা তাদের এলাকায় প্রবেশ করতে পারছে না।
গ্রাম পুলিশের একটি সংগঠনও সমাবেশ করেছে। তাদের পক্ষে ১৬ হাজার টাকা মজুরি দাবি করা হয়েছে। বর্তমানে সাড়ে ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা বেতন রয়েছে গ্রাম পুলিশের। সংগঠনটির পক্ষে দেশের বিভিন্ন এলাকার চেয়ারম্যান দ্বারা মহল্লাদার ও দফাদারদের নির্যাতিত হওয়ারও প্রতিবাদ জানানো হয়।
উল্লেখ্য, বর্ণাঢ্য র্যালী ও সমাবেশের মধ্য দিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক শ্রম দিবস। বুধবার (১ মে) সকাল ৯টার পরপরই শ্রমিক নেতারা রাস্তায় নেমে আসেন। রাজধানীর পুরানা পল্টনের মোড়ে একাধিক শ্রমিক সংগঠনের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মে দিবসকে ঘিরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব, পুরানা পল্টন মোড়, মুক্তাঙ্গন, গুলিস্তান মোড়, বিজয় নগর পানির ট্যাংক ও কাকরাইল এলাকায় চলে বিভিন্ন সংগঠনের মিছিল। এসব সভা সমাবেশ থেকে শ্রমিকের অধিকার আদায়ে স্লোগান ওঠে।
বিভিন্ন র্যালি আর সমাবেশ থেকে ‘দুনিয়ার মজদুর, এক হও’ ‘এক হও এক হও, লড়াই করো’, ‘পোশাক কারখানার শ্রম আইন ও বিধিমালা সংশোধন কর’, ‘ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত কর’, ‘সর্বস্তরে গণতান্ত্রিক শ্রম আইন বাস্তবায়ন কর, চাকরিচ্যুত পোশাককর্মীদের পুনর্বহাল কর, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করাসহ বিভিন্ন স্লোগান উঠে আসে।
সারাবাংলা/ইএইচটি/একে
আরও পড়ুন
শ্রমিক সমাগমে মুখরিত পল্টন এলাকা