Sunday 08 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফুলবাড়িয়া স্টেশনে টিকিট আছে যাত্রী নেই, তেজগাঁওয়ে স্বস্তি


২৩ মে ২০১৯ ১৭:৫৪
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: ‘একঘণ্টা ধরে একজন যাত্রীও আসেননি। সবগুলো লাইন ফাঁকা পড়ে আছে। টিকিট সংগ্রহের তিনটা কাউন্টার, কাউন্টারম্যানরা অলস বসে আছেন। সকাল ৯টা থেকে ৩ ঘণ্টা টিকিট সংগ্রহের পর আর কোনো যাত্রী নেই। গতকালও এমন ছিল। অর্ধেক টিকিট ফেরত পাঠানো হয়েছে। আজও যাত্রী নেই। কিন্তু পর্যাপ্ত টিকিট আছে।’

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সারাবাংলাকে কথাগুলো বলছিলেন রাজধানীর ফুলবাড়িয়া রেল স্টেশনের (পুরাতন রেলভবন) ক্যাশ ইনচার্জ আফজালুর রহমান। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যেই লাইনে থাকা যাত্রীরা টিকিট নিয়ে ফিরে গেছেন।

আফজালুর রহমান বলেন, ‘খুব স্বাচ্ছন্দ্যে যাত্রীরা ঈদযাত্রার টিকিট পাচ্ছেন। গতবারের মতো এবার টিকিট সংগ্রহে যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে না।’

বিজ্ঞাপন

ফুলবাড়িয়া স্টেশনের ক্যাশ ইনচার্জ আফজালুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘এবার ঈদ যাত্রায় কমলাপুর ছাড়াও আর চারটি স্থান থেকে ট্রেনের টিকিটের ব্যবস্থা করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। সেসব স্থানের একটি হলো আমাদের ফুলবাড়িয়া রেলস্টেশন। কিন্তু কমলাপুরে যেভাবে যাত্রীদের ভিড় সে রকম ভিড় এখানে নেই।’

টিকিট বিক্রির পরিসংখ্যান তুলে ধরে রেলওয়ের এই কর্মকতা বলেন, ‘গতকাল টিকিট বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ৭২ হাজার ৩৩৩ টাকার। এখানে টিকিট বরাদ্দ আছে ২ হাজার ২৭৪টি। টিকিট বিক্রি হয়েছে এগারশটি। অবিক্রিত বাকি টিকিটগুলো কমলাপুরে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আজকেও একই অবস্থা। অর্ধেকের মতো টিকিট আছে। কিন্তু যাত্রী নেই।’

এবার ঈদ যাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকেটের জন্য রাজধানীর কমলাপুর, তেজগাঁও, বনানী, বিমানবন্দর এবং ফুলবাড়িয়া রেলস্টেশনে বসানো হয়েছে আলাদা কাউন্টার। ফলে প্রতিবারের মতো এবার নেই যাত্রীদের তেমন কোনো দুর্ভোগ। তবে অধিকাংশ যাত্রী নির্ধারিত স্টেশন সম্পর্ক অবহিত না হওয়ায় কমলাপুর রেল স্টেশনে ভিড় করছেন। শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে ফিরেও আসছেন যাত্রীরা। কারণ এবারের ট্রেনের টিকিট নির্দিষ্ট অঞ্চলের জন্য নির্দিষ্ট স্টেশন নির্ধারিত করা হয়েছে।

এবার ঈদ যাত্রায় রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, পঞ্চগড়, চিলাহাটি, লালমনিরহাট, সিরাজগঞ্জ ও ঈশ্বরদীসহ সমগ্র পশ্চিমাঞ্চলগামী ট্রেনের টিকিট মিলবে কমলাপুর স্টেশন থেকে। চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী ট্রেনের টিকিট মিলবে বিমানবন্দর স্টেশন থেকে। ময়মনসিংহ ও জামালপুরগামী সকল আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট মিলবে তেজগাঁও রেল স্টেশন থেকে। নেত্রকোনাগামী ট্রেনের টিকিট মিলবে বনানী স্টেশন এবং সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী সকল ট্রেনের টিকিট মিলবে ফুলবাড়িয়া রেল স্টেশন থেকে।

এদিকে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তেজগাঁও রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, পুরুষ কাউন্টারে অর্ধশতাধিক যাত্রী টিকেটের জন্য লাইনে দাঁড়ালেও ওই স্টেশনের নারী কাউন্টারে সে সময় যাত্রী ছিলেন মাত্র ছয়জন। যাত্রীরা বলছেন কমলাপুরের তুলনায় অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে এ স্টেশনে।

জামালপুরের একজন যাত্রী রাইসুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘সোয়া ৯টার দিকে লাইনে দাঁড়াইছি। ৯টা ৪০ মিনিটে টিকিট পেয়েছি। ২০/২৫ মিনিট লাইনে দাঁড়ায়ছি। কিন্তু কমলাপুর স্টেশন হলে লাইনে দাঁড়িয়ে সকাল থেকে বিকেল হলেও কাউন্টার পর্যন্ত আসতে পারতাম না। গতবার কিন্তু এমন কষ্ট হইছিল। এবার কোনো কষ্টই হয়নি।’

অপর যাত্রী ছিদ্দিকুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, এবার কমলাপুর ছাড়া আর কোথাও ট্রেনের টিকেটের জন্য তেমন কষ্ট করতে হচ্ছে না। আজ টিকিট নিতে এসে স্বস্তি পেয়েছি।’

তেজগাঁও স্টেশন ইনচার্জ এম এ আজিজ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের এখানে যাত্রীদের টিকিট পেতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। ১০ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে লাইনে দাঁড়িয়ে যাত্রীরা টিকিট পেয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া যাত্রীদের তেমন চাপ নেই।’

ঈদের আগাম টিকিটের বিষয়ে কমলাপুর রেল স্টেশনের ম্যানেজার আমিনুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করেই আগে থেকেই অঞ্চলভিত্তিক স্টেশন নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে যাত্রীদের সুবিধা হচ্ছে। যাত্রীরা যে অঞ্চলের তারা নির্ধারিত এলাকার কাউন্টার থেকে টিকিট নিচ্ছেন। এতে কমলাপুর স্টেশনের ওপর থেকে চাপ কমেছে।’

এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘অন্যান্য স্টেশনে যেসব টিকিট বিক্রি হয়নি সেসব টিকিট পরদিন যাত্রীরা সংগ্রহ করতে পারবেন। অর্থাৎ ২২ মে দেওয়া হয়েছে ৩১ মে’র টিকিট। এটি যদি অবিক্রিত থাকে তবে এটি পরের দিন ২৩ মে কমলাপুর স্টেশন থেকে ৩১ মে’র টিকেট যাত্রীরা নিতে পারবেন।’

উল্লেখ্য, রাজধানীর পাঁচটি রেল স্টেশন থেকে বৃহস্পতিবার দেওয়া হয়েছে ১ জুনের টিকিট। শুক্রবার (২৪ মে) দেওয়া হবে ২ জুনের টিকিট। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিলে ৪টা পর্যন্ত টিকিট দেওয়া হবে।

সারাবাংলা/এসএইচ/একে

আগাম টিকিট কমলাপুর টিকিট রেলওয়ে

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর