Friday 18 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আজিজ সুপার মার্কেটে কদর বেশি পাঞ্জাবির


২৪ মে ২০১৯ ২১:১৫
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: একসময় ঢাকার মানুষের সাংস্কৃতিক তীর্থ ছিল আজিজ সুপার মার্কেট। দেশের প্রথিতযশা সব কবি, সাহিত্যিক ও প্রকাশকরা আড্ডা দিতেন এই এলাকায়। এখানে ছিল বিখ্যাত সব বইয়ের দোকান। তবে কালের পরিক্রমায় সেই দিন ফুরিয়েছে, কবি, সাহিত্যিকদের আড্ডা শেষ হওয়ার মতো শেষ হয়েছে বইয়ের ব্যবসাও। পুস্তক প্রকাশনীর জায়গা দখল করে নিয়েছে কাপড়ের মোকাম।

আজিজ সুপার মার্কেট এখন দেশীয় পোশাকের বিশাল বাজার হিসেবে অধিক পরিচিত। এই মার্কেটের তিন তলা পর্যন্ত শতাধিক দোকানে পাওয়া যায় টিশার্ট, পলো শার্ট, শাড়ি, ফতোয়া, সালোয়ার-কামিজ, থ্রিপিস, পাঞ্জাবিসহ শিল্পমান সমৃদ্ধ নানান ঢঙের পোশাক। এসব পোশাক বাজারজাত করার আগে সেখানে ফুটিয়ে তোলা হয় শতভাগ বাঙালিয়ানাও।

বিজ্ঞাপন

আসন্ন ঈদুল ফিতরের কেনাকাটা করতে ইতোমধ্যেই আজিজ মার্কেটে ভিড় জমিয়েছে ক্রেতারা। এ মার্কেটে আসা ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় মূলত টিশার্ট ও পাঞ্জাবি কিনতেই আজিজে এসে ভিড় জমাচ্ছেন তারা। এর বাইরে পছন্দ মত অন্যান্য পোশাকও কিনছেন অনেকে। অনেকে আবার প্রিয়জনদের চমকে দিতে কিনছেন মূল্যবান উপহার।

ধানমন্ডি থেকে স্বামীর জন্য পাঞ্জাবি কিনতে আজিজে এসেছেন শামসুন্নাহার রুশি। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ঢাকার অন্যান্য বাজারে যে পাঞ্জাবি পাওয়া যায় সেগুলোর তুলনায় আজিজের পাঞ্জাবি অনেক বেশি রুচিশীল। এদের পাঞ্জাবিতে আমাদের দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ছোঁয়া পাওয়া যায়। দামও নাগালের মধ্যে রয়েছে। এজন্যই যেকোন উৎসবের কেনাকাটা সারতে আজিজকে আমি বেশি অগ্রাধিকার দেই।’

কলাবাগান এলাকা থেকে পাঞ্জাবি কিনতে এসেছেন রায়হান রাইন। তিনি বলেন, ‘আজিজের পাঞ্জাবির নিজস্বতা রয়েছে। যে কারও পরনে আজিজের পাঞ্জাবি দেখামাত্র আপনি চিনতে পারবেন। ঢাকার আর কোনো বাজারের পাঞ্জাবির ক্ষেত্রে এই অনুমান খাটে না। এখান থেকে পাঞ্জাবি কেনার এটিই বড় কারণ।’

আজিজে এবছর ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে পাঞ্জাবি। তবে দুই-একটি ক্ষেত্রে পাঞ্জাবির দাম ৩ হাজার পর্যন্ত উঠছে। তবে ক্রেতারা ৮০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকার পাঞ্জাবি গুলোই বেশি কিনছেন বলে জানিয়েছেন দোকানিরা।

মেঘ নামে একটি দোকানের কর্মকর্তা রাসেল বলেন, ‘ঈদের কেনাকাটা এখনো সেইভাবে শুরু হয়নি। তবে বিক্রি মন্দ নয়। পাঞ্জাবি বেশি বিক্রি হচ্ছে, একই সঙ্গে টি-শার্টও বিক্রি হচ্ছে প্রচুর। আশা করছি, এ সপ্তাহ থেকেই ঈদের কেনাকাটার ধুম পড়বে।’

অরণ্য, ইজি, নিত্যউপহার, দেশালসহ বেশ কয়েকটি দোকানে কথা বলে জানা যায়, ঈদের কেনাকাটা ধীরেই শুরু হচ্ছে তাদের। তবে বছরের অন্য যেকোনো দিনের তুলনায় বিক্রি অনেক বেড়েছে। এসব দোকানে ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে থ্রিপিস, পাঞ্জাবি, টি-শার্টের মতো কাপড় গুলো।

নিত্যউপহার, সুঁইসুতা, বাঙ্গাল, নক্ষত্র, ক্যানভাস, সারাবেলা, রঙ, সাদাকালো, পৌষ, টোটেমের মতো দোকানগুলোতে কথা বলে জানা যায়, ১৭০ থেকে ৩৯০ টাকার মধ্যে টি-শার্ট বিক্রি করছেন তারা। ক্ষেত্রবিশেষে পোলো শার্টের দাম পাঁচশো টাকাও রাখা হচ্ছে।

এ ছাড়া অন্যান্য পণ্যের মধ্যে থ্রি পিস এক হাজার থেকে এক হাজার ৩৫০, শার্ট ৪০০ থেকে ৫৫০, টি-শার্ট ১৩০ থেকে ২০০, শাড়ি এক হাজার ৫০ থেকে দুই হাজার ৫০০, ফতুয়া ৩৮০ থেকে ৪৫০ ও চাঁদর ৪৫০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সালোয়ার-কামিজ ৭০০ থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত বেচাকেনা হচ্ছে।

আজিজে সিল্কের পাঞ্জাবির পাশাপাশি রয়েছে সুতি, খাদি, সিল্ক এবং তাঁতের কাপড়ের পাঞ্জাবি। হাতের কাজ, এম্ব্রয়ডারি ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে এসব পাঞ্জাবিতে। ৮০০ থেকে ৩০০০ টাকায় কেনা যাচ্ছে পাঞ্জাবি।

ঈদ উপলক্ষে আজিজের ছোটদের পোশাকের দারুন পসরা সাজিয়েছেন দোকানিরা। নদী, নন্দন ও শীতল নামের দোকানগুলোতে শিশুদের জন্য সব ধরনের পোশাক বিক্রি হচ্ছে। বাহারি নকশা বড়দের পোশাকের চেয়েও এগুলো কোন অংশে কম নয়। নকশা ও কাপরভেদে পোশাকগুলো ৫০০ থেকে ৪০০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

শাহবাগ মোড় থেকে কাটাবন মোড়ের মাঝামাঝি জায়গায় আজিজ মার্কেটের অবস্থান। মঙ্গলবার সাপ্তাহিক ছুটি ছাড়া প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত এ মার্কেটে কেনা বেচা চলে। পোশাক ও বইয়ের দোকানের ফাঁকে এখানে বেশ কয়েকটি কফিশপও রয়েছে। এছাড়া আজিজের মিষ্টির দোকান ও নানা পদের ভর্তা-ভাতের সুনাম তো রয়েছেই।

সারাবাংলা/টিএস/একে

আজিজ মার্কেট কেনাকাটা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর