সময়সূচি মানছে না লঞ্চ, বেশি যাত্রী পেয়ে আগেভাগেই ছেড়ে যাচ্ছে
৩ জুন ২০১৯ ২১:৩৬
ঢাকা: সময়সূচি মেনে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে সোমবার সময়সূচি মানেনি বেশকিছু লঞ্চ। বেশি যাত্রী পেয়ে কর্তৃপক্ষ আগেভাগেই লঞ্চ ছেড়ে দিয়েছে। ফলে পছন্দের লঞ্চে যেতে না পেরে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) পরিবহন পরিদর্শক (টিআই) হুমায়ুন কবির সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঈদের ছুটি শুরুর এখনও একদিন বাকি থাকলেও অনেকেই আগেই বাড়ির পথে রওয়ানা দিয়েছেন। তাই গতকালের চেয়ে সোমবার যাত্রীদের চাপ আরও বেড়েছে।’
মঙ্গলবার (৪ জুন) যাত্রীদের চাপ আরও বাড়বে বলে মনে করেন বিআইডব্লিউটিএ’র ওই কর্মকর্তা।
লঞ্চ আগেভাগে ছেড়ে যাওয়ার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে লোকমান হোসেন নামে এক যাত্রী বলেন, ‘ভোলার চরফ্যাশনে যাব। এমভি ফারহান লঞ্চ শুনলাম সাড়ে তিনটায় ছাড়বে। কিন্তু ৩টার সময় ঘাটে এসে দেখি যাত্রী বেশি হওয়ায় লঞ্চ দুপুর আড়াইটায় ছেড়ে চলে গেছে।’
‘তবে তারা (লঞ্চ কর্তৃপক্ষ) বলল, সন্ধ্যার পর আরও কয়েকটি লঞ্চ আছে। হতাশ হওয়ার কিছু নেই। টার্মিনালের দ্বিতীয় তলায় গিয়ে বসতে বলল’ বলেন ওই যাত্রী।
ওই যাত্রী বলেন, ‘গুলিস্তান থেকে জ্যামের কারণে পাঠাওয়ে ভিক্টোরিয়া পার্ক পর্যন্ত আসছি ১ ঘণ্টায়। কিন্ত পার্কের ওই জায়গা থেকে লঞ্চের পল্টুনে আসতেই লেগে গেছে দেড় ঘণ্টা। এত ভিড়। শুধু লঞ্চের কাছে আসা পর্যন্ত ভিড়। তাই এ ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে আর কোনো ঝামেলা হবে না।’
রফিকুল ইসলাম নামে অপর এক যাত্রী সারাবাংলাকে বলেন, ‘এক ছেলে দুই মেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে ঝালকাঠি যাব। তাই ঘণ্টাখানেক আগেই লঞ্চে উঠলাম। রাস্তায় জ্যাম এবং ঘাটে ভিড় থাকবে এ জন্য ঘণ্টা দুয়েক আগেই রওনা দিয়েছিলাম। আজকে ভিড় বেড়েছে। তবে যাই হোক। ভিড় ঠেলে লঞ্চে উঠতে পেরেছি তাতেই খুশি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদরঘাট নৌ-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘যাত্রীরা যেন নির্বিঘ্নে লঞ্চে উঠতে পারে সেজন্য প্রতিটি পল্টুনের প্রবেশ মুখে পুলিশ-র্যাব ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন । তাই আগের তুলনায় এবার কোনো বিড়ম্বনা নেই। যদিও আগের চেয়ে কিছুটা যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে।’
ঢাকা রেঞ্জের নৌ-পুলিশ সুপার (এসপি) ফরিদুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘যাত্রীদের তুলনায় পর্যাপ্ত লঞ্চ রয়েছে। কিন্তু যাত্রীরা না বুঝে কাউকে না জিজ্ঞেস করেই লঞ্চের কাছে চলে যাচ্ছেন। কিন্তু সেখান গিয়ে দেখেন যে তিনি যে জায়গায় যাবেন সেখানকার লঞ্চটি হয়ত ছেড়ে দিয়েছে আর না হয় ঘাটে এসে ভিড়ছে। এমন অবস্থায় যাত্রীদের কোনোভাবেই টার্মিনালে নেওয়া যায় না। তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা পল্টুনে দাঁড়িয়ে থাকে। এতে বাড়তি ভিড়ে দুর্ভোগের শিকার হওয়া আশঙ্কা থাকে।’
সদরঘাটে যাত্রীচাপ বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএ’র উপপরিচালক (পরিবহন) মিজানুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘সোমবার (৩ জুন) দুপুরের পর থেকেই যাত্রীদের চাপ শুরু হয়েছে। তবে লঞ্চ সংকটের আশঙ্কা নেই। এমনকি কোনো লঞ্চ অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছে না। যাত্রী ভর্তি হয়ে গেলেই লঞ্চ ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
সারাবাংলা/এসএইচ/একে