মুজিববর্ষে প্রশাসনকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার না করার আহ্বান
২৯ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:৫০
ঢাকা: মুজিববর্ষে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রশাসনকে ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থে ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়েছে প্রজন্মের চেতনা নামে একটি সংগঠন। এমন অনিয়ম-দুর্নীতি হলে তা মুজিববর্ষকে ব্যর্থ করা হবে জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ আহ্বান জানায় সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ছাত্র-যুবকদের সমন্বয়ে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু-অবাধ ও গ্রহণযোগ্যতার লক্ষ্যে ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করাসহ ভোটকেন্দ্রে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক বিচারে ব্যবস্থা এবং প্রশাসনকে ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থে ব্যবহার হতে না দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ৩০ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিন ধার্য করেছিলেন নির্বাচন কমিশন। অথচ ওই দিনটিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা থাকায় শুরু হয় বিতর্ক। সরকার ও কমিশন প্রথমে বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব না দিলেও পরে তারিখ পরিবর্তনে বাধ্য হয়। এমনকি প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই অনেক প্রার্থী রিটার্নিং কর্মকর্তার দফতরে একের পর এক আচরণবিধি লঙ্ঘন এবং একপক্ষ আরেক পক্ষকে নির্বাচনি প্রচারণায় বাধাসহ হামলার ঘটনার সুস্পষ্ট অভিযোগ দাখিল করলেও, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক এখন পর্যন্ত তেমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
বক্তারা আরও বলেন, হাইকোর্ট কর্তৃক পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বিবেচনায় ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় লেমিনেটেড পোস্টার ছাপা ও প্রদর্শন বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার পরেও এ ধরনের পোস্টার অপসারণ করা হয়নি। এ বিষয়ে কমিশন নির্বিকার থাকেছেন। অথচ বিশেষ কোনো প্রার্থীকে সুবিধা প্রদানসহ বিজয়ী করা নির্বাচন কমিশনের কাজ নয়। তাদের উচিত সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে জনআকাঙ্ক্ষাখাকে সম্মান দেখানো।
জাতির কাছে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন কাম্য নয় জানিয়ে বক্তারা বলেন, ইভিএম ভোট দেওয়া নিয়ে যেমন জনমনে শঙ্কা আছে, তেমনি ভোটাররাও ভোটাধিকার প্রয়োগ করা নিয়ে উদ্বেগ আর উৎণ্ঠায় আছে। তাই ভোটারদের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য নির্বাচন কমিশনকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু-অবাধ ও গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে সকল কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনোরূপ ভোট জালিয়াতি, ভোট কারচুপি হলে নির্বাচন কমিশন শুধু প্রশ্নবিদ্ধ হবে তাই নয়, জনগণও তাদের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলবে।
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, সরকারের খেয়াল রাখা উচিত ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেন জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীকে কোনোভাবেই কলঙ্কিত করা না হয়। তাই নির্বাচনের ওপর জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার মূল দায়িত্ব নিতে হবে সরকারকেই। এ দায়িত্ব পালনে ক্ষমতাসীন সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। আর বিরোধীদলগুলোকেও নির্বাচন সুষ্ঠু-অবাধ ও গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে সরকারকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করার দায়িত্ব নিতে হবে। তাহলেই এদেশে গড়ে উঠবে সুষ্ঠু নির্বাচনী সংস্কৃতি আর বাড়বে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনমনে শ্রদ্ধা ও আস্থা।
মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন সংস্কৃতিকর্মী আনোয়ার ফরিদী, সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ গোলাম নবী হোসেন, যুগ্ম-আহ্বায়ক এম এম রাশেদ রাব্বি, শাজাহান কবির সুমন, সদস্য মো. মাসুদ আলম, মো. ছালেক-উর-রহমান (সুমন), নাট্যকার, নির্দেশক মাজহারুল হক পিন্টু, নাট্য সংগঠক দীন ইসলাম শ্যামল ও প্রজন্মের চেতনার শুভাকাক্ষী জাফর হোসেন প্রমুখ।