Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাজারে মিলছে না মাছ, দাম আকাশ ছোঁয়া


২৭ মার্চ ২০২০ ১৮:০৭

ঢাকা: করোনা পরিস্থিতির কারণে দেওয়া লক ডাউনের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাজারে। এরইমধ্যে মাছের বাজারে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সরবরাহ একেবারই কম থাকায় মিলছে না মাছ। আর দামও আকাশ ছোঁয়া।

শুক্রবার (২৭ মার্চ) রাজধানীর সুত্রাপুর, যাত্রাবাড়ী ও কারওয়ান বাজার মাছের বাজার ঘুরে এ সব চিত্র দেখা গেছে।

সকাল ৯টার দিকে সুত্রাপুর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, যেখানে ১০০ জন মাছ ব্যবসায়ী মাছ বিক্রি করত, সেখানে মাত্র ২০ থেকে ২৫টি মাছের দোকান। মাছও তেমন বেশি নেই। আর যা মিলছে সেগুলোর দামও আকাশ ছোঁয়া। রুইয়ের পোনা প্রতি কেজি ২৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। যার দাম আগে ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি। মলা মাছের দাম ছিল ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, সেই মাছ বিক্রি করছেন ৬০০ টাকা কেজি। টেংরা মাছ বিক্রি করতেন ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি সেই টেংরা বিক্রি করছেন ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি। ছোট টাকি মাছ বিক্রি করতেন ১৫০ টাকা কেজি আজ সেই টাকি মাছ বিক্রি করছেন ৩৫০ টাকা থেকে ৩৮০ টাকা কেজিতে।

চারদিন আগেও যে ইলিশ বিক্রি করতেন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আজ সেই ইলিশের দাম ৭৫০ টাকা কেজি। কেন এত মাছের দাম জানতে চাইলে বিক্রেতারা জানান, ঘাটে মাছের সরবরাহ কম। কিনতে হয়েছে বেশি দামে তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে।

সুত্রাপুর বাজারে মাছের ক্রেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সবাই আগেই মাছ কিনে রেখেছে। আমার টাকা ছিল না তাই কিনতে পারিনি। আজ কিনতে এসে দেখি দাম বেশি। যারা আগে কিনে রেখেছে তারা ভালো করেছে।’

সকাল ১০টায় যাত্রাবাড়ী মাছের বাজার গিয়ে দেখা যায়, লোকজন অনেক কম। আগে যেখানে মাছ বিক্রেতা ছিলেন প্রায় ৫০০। আজ সেখানে মাছ বিক্রি করছেন প্রায় ১০০ মতো। পাঙ্গাস মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজিতে। যেখানে তিন দিন আগেও এই পাঙ্গাস বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা কেজিতে। সিলভার কার্প মাছ বিক্রি হয়েছে তিন দিন আগে ১১০ টাকা কেজিতে আজ সেখানে প্রতি কেজি সিলভার কার্প মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকা কেজি। টুনা মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজিতে। যা তিনদিন আগেও বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা কেজিতে। মাছ কিনতে আসা ক্রেতারা মাছের আকাশ ছোঁয়া দাম দেখে হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেকে।

বিজ্ঞাপন

হতাশা প্রকাশ করে আলমগীর হোসেন বলেন, কদমতলী থেকে মাছ কিনতে এসেছেন তিনি। দাম শুনে হতাশ। আগে যে টাকায় কয়েক কেজি মাছ হতো আজ সেই টাকায় এক থেকে দুই কেজি হচ্ছে। করোনার এই দিনগুলোতে কিভাবে চলবে তা নিয়ে সন্দিহান তিনি।

যাত্রাবাড়ী ভাই ভাই মাছের আড়তের স্বতাধিকারী আব্দুল আজিজ বলেন, এই আড়তে প্রতিদিন মাছ বিক্রি হতো ১০০ মণ। আজ সেখানে মাছ এসেছে ২০ মণ। আমার মতো প্রত্যেক আড়তেই মাছ কম আসছে। চাহিদা থাকায় আগেই শেষ হয়ে যায়। মাছ চাষীরা বেশি দাম নিচ্ছেন তাই আমরাও বেশি দামে বিক্রি করছি। যতদিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না ততদিন এরকম দাম থাকবে বলে জানান তিনি।

শুধু মাছের দামই নয় শুক্রবার মাংসের বাজারেও দাম চড়া দেখা গেছে। সূত্রাপুর বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম ৬০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। অথচ গত সপ্তাহেও এই দাম ছিল ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা।

দাম বেশির ব্যাপারে জানতে চাইলে বিক্রেতা আসলাম মিয়া বলেন, গাবতলীতে গরু সংকট। চারটা গরু আগেই কিনে এনেছিলাম। তাই জবাই দিয়ে বিক্রি করছি। চাহিদা বেশি বিপরীতে আমদানি নেই। তাই দাম বেশি। খাসির মাংসের দামও বাড়তি। ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে খাসির মাংস।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, সেখানেও মাছের দাম আগের চেয়ে বৃদ্ধি। শিং মাছের দাম ছিল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। যা কয়েকদিন আগেও ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ছিল। ছোট আকারে শোল মাছ আজ বিক্রি হয়েছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজিতে। যা আগে ছিল ৪০০ টাকা। মাছ বিক্রেতারা জানান, মোকামে মাছের সরবরাহ কম। মাছ চাষিরা কম করে মাছ ধরছেন। মোকামেই বেশি দামে মাছ কিনতে হচ্ছে বিধায় বাজারেও বাড়তি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার কাচা বাজারে তেমন একটা ঝাজ ছিল না। লেবু ছাড়া সকল কাচা তরি তরকারি আগের দামেই বিক্রি হয়েছে। করলা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ, ৬০ টাকা, বেগুন ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পটল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ থেকে ৬০ টাকা, আলু ২০ টাকা, পাট শাক ১০ টাকা আটি, পুঁই শাক ২০ টাকা ও শসা ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর লেবু ছিল ৬০ থেকে ৮০ টাকা হালি। অভিযান চালানোর ফলে পেঁয়াজের বাজারে স্বস্তি এসেছে। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা।

মুদি দোকানগুলোতে সবকিছু আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। নতুন করে কোনো কিছুর দাম বাড়েনি। সয়াবিন খোলা ১০২ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। চাল কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা কমেছে। আটা চিনি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। তবে সব ধরনের বেকারি বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। রুটি, বিস্কুট, কেকসহ অন্যান্য জিনিসপত্র বিক্রি করতে পারছে না মুদি দোকানগুলো।

মুদি দোকানি আক্কাছুর রহমান বলেন, ‘বেচা বিক্রি অনেক কম। কারণ করোনা আতঙ্কে সবাই আগেই বেশি বেশি কেনাকাটা করেছে। যার ফলে এখন চাহিদা কম এবং বিক্রিও কম হচ্ছে।’

আকাশ ছোঁয়া করোনা করোনাভাইরাস মাছের দাম লক ডাউন

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

সিটিকে সরিয়ে শীর্ষে লিভারপুল
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:২০

পদ্মায় কমেছে পানি, থামছে না ভাঙন
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:১৯

সম্পর্কিত খবর