Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বৈশাখের আগে নগর মাতিয়ে দিল চৈত্র সংক্রান্তি


১৩ এপ্রিল ২০১৮ ২২:২৯

।। মাকসুদা আজীজ, অ্যাসিট্যান্ট এডিটর ।। 

ঢাকা: ১৪২৪ সালের শেষ দিন ৩০ চৈত্র। আগামী কাল পহেলা বৈশাখ, ১৪২৫। রাজধানী ঢাকার সবচেয়ে বড় উৎসবের দিন। তবে বাঙালিদের সংস্কৃতি হালে নাগরিক হাওয়ায় ভেসেছে। এই জনপদের হাজার বছরের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে গ্রামীণ পরিবেশে।

পহেলা বৈশাখের একদিন আগে থেকেই নগর জুড়ে শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ। এখানে সেখানে মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বাউল গান, পুতুল নাচ সব মিলে জমজমাট উদযাপন শুরু হয়ে গিয়েছে। চৈত্রের শেষের দিন চৈত্র সংক্রান্তি পালনও এ জনপদের মানুষের প্রাচীন আচার।

নাগরিক পরিবেশে গ্রামীণ সভ্যতার আমেজ দিতে শিল্পকলা একাডেমী আজ পালন করছে নানান উৎসব। বিকাল থেকে শুরু হওয়া এ উৎসবের মধ্যে আছে লাঠি খেলা, পালাগান, বাউল গান, থিয়েটার গ্রুপ ফেডারেশনে আয়োজনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মিলন মেলা।

শুক্রবারের সুযোগে দুপুর থেকেই শিল্পকলার সামনে বেশ ভিড়। একদিকে চলছে ফ্রাইডে মার্কেট, অপর দিকেই খই, নাড়ু, বাতাসা, মিছরি নিয়ে বসে পড়েছেন দোকানিরা। বিকাল না হতেই বেলুনওয়ালার লম্বা বেলুন রাখার থামটা খালি হয়ে গেছে। বেলুন সব শিশুদের হাতে হাতে, বড়দের হাত ধরে তারাও দেখতে এসেছে চৈত্র সংক্রান্তির অনুষ্ঠান।


বিকালে শিল্পকলার মাঠে হবে লাঠি খেলা- এ খবরে দুপুর গড়াতেই মাঠে জড়ো হয়ে যায় হাজার মানুষ, অনুষ্ঠান শুরুর আগেই নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন ভরে গেছে। দাঁড়িয়ে আছেন অনেকে। আয়োজকরা একরকম বাধ্য হয়েই নির্দিষ্ট সময়ের কিছুক্ষণ আগে শুরু করে দিলেন অনুষ্ঠান।

জামালপুর থেকে একটি গোষ্ঠী এসেছেন লাঠি খেলা দেখাতে। এটা শুধু লাঠির খেলা নয়, এখানে আছে প্রাচীন শ্লোক, পৌরাণিক গল্প, কিছু লোকজ ছড়া, গান, নৃত্যও। ঢোল, হারমোনিয়াম, ট্রমবোন নিয়ে হাজির বাদক দলও।

বাজনার তালে তালে চিকন বেত নিয়ে চারজন লাঠিয়াল শুরু করলেন তাদের কারসাজি, এটাকে লাঠি খেলার চেয়ে লাঠি হাতে নৃত্য বলাই ভালো, ছোট ছোট করে তারা জানাচ্ছেন তারা কি দেখাচ্ছে। একজন বলছেন টুকরো টুকরো কথা, যা থেকে জানা যায় কোন লাঠির নাম কী। মাঝে মধ্যে কপট আক্রমণ আর আক্রোশ দেখিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন একে অপরের উপরে।

লাঠিয়ালরা শুধু লাঠির কারসাজিই নয়, দেখালেন লাঙ্গল মাথায় তোলার কারসাজি, থালার নৃত্য, সব কিছুর মূল আকর্ষণ তাদের বিভিন্ন আকারের লাঠির কসরত।

মাঠ থেকে একটু থিয়েটার হলের দিকে আসতেই দেখা গেল আজ এবং আগামী কালের জমজমাট আয়োজনের বিবরণ, আজ রাতে তো উৎসব চলবেই কাল সূর্য উঠার পরেই শুরু হবে বর্ষবরণের মূল আয়োজন। এসবের বাইরে আছে সারাদিন ধরে রবীন্দ্রনাথের “চিত্রাঙ্গদা” নৃত্য নাট্যের প্রদর্শনী। আজ বিকাল থেকে শুরু হয়ে কয়েকটি শো চলবে শনিবার রাত পর্যন্ত।

সন্ধ্যা নামতেই লাঠিয়ালদের লাঠি খেলা শেষ হয়। মাঠের মঞ্চে উঠে আসনে লোকসঙ্গীতের শিল্পীরা। দেশের নানান প্রান্ত থেকে তারা এসেছেন নগরবাসীকে মাটির সুর, জলের সুর শুনাতে। এরপর বাউল শিল্পীদের পালা, তারাও বাউল গানে মুগ্ধ করতে প্রস্তুত দর্শক শ্রোতাদের।

মাঠে যখন সাধারণ মানুষের তিল ধরানোর জায়গাও নেই, তখন এক্সপেরিমেন্টার থিয়েটার হলে প্রস্তুতি চলছে থিয়েটার গ্রুপ ফেডারেশনে আয়োজনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মিলন মেলার। মূল হলের বাইরের করিডোরে চারটি বিশাল জাড়ে রাখা হয়েছে চার রঙের শরবত।

প্রথমে করিডরে ফেডারেশনের নেতারা আলোচনা করেন, এরপর শুরু হয় সংক্রান্তির মূল উৎসব, রিনঝিন নূপুরের ধ্বনিতে যেন স্বর্গ থেকে নেমে আসে আনন্দ ধারা।

এই আনন্দ ধারার আবেশে কেটে যাবে চৈত্রের জরা, নতুনের সম্ভাবনা নিয়ে আসবে বাংলা ১৪২৫ সাল, আর কিছুক্ষণ পরেই…

সারাবাংলা/এমএ/এমএস


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

৯০০তম গোলে ইতিহাস গড়লেন রোনালদো
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:০৪

সম্পর্কিত খবর