নতুন সম্ভাবনায় পাটের চা
৫ জুলাই ২০১৯ ১৭:৩৭
ঢাকা: নতুন উদ্ভাবনের মধ্যে দিয়ে আবার সামনে আসতে শুরু করেছে পাট। নতুন সম্ভাবনার উল্লেখযোগ্য একটি পণ্য হলো পাট পাতার চা। বাংলাদেশের বাজারে খুব একটা পরিচিত নয় পণ্যটি। তবে ইউরোপের বাজারে পণ্যটি এরইমধ্যে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছে।
গবেষণা করে ব্যতিক্রমী পণ্যটির উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন (বিজেএমসি) এর জুট লিভস ড্রিংক প্রজেক্টের উপদেষ্টা এইচ এম ইসমাইল খান।
গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে পণ্যটি বাংলাদেশের বাজারে ছাড়া হলেও বাণিজ্যিকভাবে সম্ভাবনাময় পণ্যটি জার্মানিতে রফতানি শুরু হয়েছে আরও আগেই। ২০১৬ সালে বাণিজ্যিকভাবে এর উৎপাদন শুরু করে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট। এখন ইংল্যান্ড, সুইডেন এবং ফ্রান্সের বাজারেও এ চা রফতানি হচ্ছে।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজর ড. মুবারাক আহমেদ খান সারাবাংলাকে জানান, ফুল আসার আগে তোষা পাটের গাছ থেকে প্রথমে পাতা সংগ্রহ করা হয়। সূর্যের আলোয় তা শুকিয়ে গুঁড়ো করলেই তৈরি হয়ে যায় চা। এরপর সেখান থেকে তৈরি পানীয় প্রয়োজন অনুযায়ী চিনি বা মধু মিশিয়ে পান করা যায়।
পাট পাতার তৈরি পানীয়টির গুণাগুণ তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘পাট পাতার পানীয় ডায়াবেটিক, ক্যান্সার, পেটের বিভিন্ন পীড়া, আলসার, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণ, লিভার সুস্থ রাখতে এবং কিডনির রোগ রোধে কাজ করে। এছাড়া অন্যান্য রোগ প্রতিরোধেও পাট পাতার কোমল পানীয় কার্যকর ভূমিকা রাখে। তাছাড়া পাট পাতায় রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন, যেগুলো শরীরের জন্য উপকারী।’
৩ জুলাই মতিঝিলের করিম চেম্বারে শুরু হওয়া বহুমুখী পাটপণ্য মেলার বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের স্টলে পাওয়া যাচ্ছে এই পাটের চা। প্রতিটি প্যাকেটের মূল্য ধরা হয়েছে একশ টাকা।
জানা গেছে, এ পর্যন্ত উৎপাদিত ১০ টন চায়ের মধ্যে আড়াই টন বিদেশে রফতানি করা হয়েছে। পাইপলাইনে আছে আরও তিন টন।
পাটখাতের প্রসারে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে পাট মন্ত্রণালয়ের সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজর ড. মুবারাক আহমেদ খান বলেন, ‘মানুষ পাটের ব্যবহার ভুলে যেতে বসেছিল। কিন্তু সরকারের নজর পড়ায় পাট আবার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। পাটের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সরকার বহুমুখি পদক্ষেপ নিয়েছে। এই পদক্ষেপের একটি অংশ হলো পাট পাতার চা। আশা করি, এই পাট পাতার চা দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’
সারাবাংলা/একে