পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় মুনিয়ারা খুঁকি (৩৫) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) গভীর রাতে উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের সর্দারপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকেই স্বামী জুলফিকার আলী (৪২) পলাতক রয়েছেন।
নিহত খুঁকির পরিবার জানিয়েছে, ১১ বছর আগে জুলফিকার আলীর সঙ্গে মুনিয়ারার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই নানা অজুহাতে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন খুঁকির ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছিল।
মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নির্যাতনে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে খুঁকিকে প্রথমে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে রাত দেড়টার দিকে তার মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে স্বামীর পরিবার খুঁকির মৃত্যুর কারণ ‘ডায়াবেটিস শূন্য হয়ে মৃত্যু’ বলে দাবি করে। তবে মরদেহ গোসলের সময় খুঁকির শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হয় এবং তারা পুলিশে খবর দেন।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
নিহতের বাবা মহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়েকে কারণ-অকারণে নির্যাতন করতো জুলফিকার ও তার পরিবারের সদস্যরা। আমার মেয়েকে ওরা নির্যাতন করে হত্যা করেছে। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
খুঁকির চাচা সামিউল ইসলাম বলেন, ‘জুলফিকারের নির্যাতনের কারণেই তার প্রথম স্ত্রী চলে গিয়েছিল। আমার ভাজতিকে দীর্ঘদিন ধরে অমানবিকভাবে মারধর করতো। স্থানীয়দের মাধ্যমে জেনেছি, মৃত্যুর আগের দুই দিন তাকে খেতে দেওয়া হয়নি।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য মশিয়ার রহমান প্রধান বলেন, ‘ওই গৃহবধূকে প্রায়ই মারধর করতো তার স্বামী। মঙ্গলবার অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং রাতে তিনি মারা যান। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।’
বোদা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিম উদ্দিন বলেন, ‘নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে মরদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। পলাতক স্বামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় তার বাবা-মা ও আরও তিনজনকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে।’