সুনামগঞ্জে ৯ উপজেলার ৫ টিতে নৌকার জয়
১১ মার্চ ২০১৯ ০৩:১৮
।।ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট।।
সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জের ৯ উপজেলার ৫ টিতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। বাকি ৪ টিতে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। রোববার ( ১০ মার্চ) দিনব্যপী ভোট গ্রহণ শেষে রাতে ঘোষিত বেসরকারি ফলাফল থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
জেলার ৯ উপজেলার সবকটিতে এক যোগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন ২৮ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬৭ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩৫ জন প্রার্থী লড়েন। ৯ উপজেলায় ৫শ ৪১ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হয়। তার মধ্য সহিংসতা, জাল ভোট ও ব্যালট ছিনতাইয়ের অভিযোগে ৬ টি কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করে দেয়া হয়।
রাতে জেলা রির্টানিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত ফলাফলে জানা যায়, সদর উপজেলায় জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আওয়ামীলীগের প্রার্থী নৌকা প্রতীকে ৪০ হাজার ৩৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মনিষ কান্তি দে মিন্টু ২৭ হাজার ৩শ ৭৬ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে আবুল হোসেন ২১ হাজার ৫৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাকির হোসেন শাহীন ১৫ হাজার ৫শ ৮৬ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত হওয়ার কারণে নিগার সুলতানা কেয়া ও সাদিয়া বখত সুরভীর ভোটের ব্যবধান কাছাকাছি হওয়ায় সেখানে পুন:ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
ধর্মপাশা উপজেলায় আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোজ্জাম্মেল হোসেন রুকন ঘোড়া প্রতীকে ৩৭ হাজার ৪শ ৭৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীলীগের প্রার্থী নৌকা প্রতীকে ২৯ হাজার ৩শ ৭২ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। এ উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ইয়াসমিন ৩৮ হাজার ১শ ১৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শান্তা চৌধুরী ২৮ হাজার ৪শ ২৫ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিল্লাল হোসেন ২১ হাজার ২শ ২৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল হাই তালুকদার ১৮ হাজার ২শ ২৯ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন।
দিরাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মন্জুর আলম চৌধুরী মোটরসাইকেল প্রতীকে ২০ হাজার ৯শ ২২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীলীগ প্রার্থী নৌকা প্রতীকে ২০ হাজার ৮শ ৬০ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে বেসরকারি ভাবে মোহন চৌধুরী চশমা প্রতীকে ২৮ হাজার ৫শ ৯৬ ভোট বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নূরুল হক উড়োজাহাজ প্রতীকে ১০ হাজার ৩শ ৩৩ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রিপা সিনহা ৪৬ হাজার ৪শ ১২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছবি চৌধুরী ২০ হাজার ৯শ ১৫ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় বিএনপি থেকে বহিস্কৃত ফারুক আহমদ আনারস প্রতীকে ৩৫ হাজার ৪শ ৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আবুল কালাম নৌকা প্রতীকে ২১ হাজার ৯শ ৪১ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে নূর হোসেন ২২হাজার ২৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোবারক হোসেন জাকির চশমা প্রতীকে ১৪ হাজার ১শ ৫ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুলন রানী পদ্মফুল প্রতীকে ১৯ হাজার ৭শ ৪০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রফিকা মহির ফুটবল প্রতীকে ১৬ হাজার ৫শ ২৫ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন।
ছাতক উপজেলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ ফজলুর রহমান নৌকা প্রতীকে ৬৬ হাজার ১শ ৩০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অলিউর রহমান বকুল কাপ পিরিচ প্রতীকে ২৭হাজার ২ শ ৮৩ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে আবু সাদাত লাহিন টিউবওয়েল প্রতীকে ২৪ হাজার ৫১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শাহীন চৌধুরী টিয়া পাখি প্রতীক নিয়ে ১৭ হাজার ৫শ ১৫ ভোট পেয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লিপি বেগম কলস প্রতীকে ৪৯ হাজার ১শ ৭৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শিখা রাণী পদ্মফুল প্রতীকে ২৬ হাজার ৪শ ৬ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন।
বিশ্বম্ভপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সফর উদ্দিন আনারস প্রতীকে ২৩ হাজার ২শ ৫২ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকে রফিকুল ইসলাম তালুকদার ১৭ হাজার ৬শ ১ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে মো.তাজ্জত খান মাইক প্রতীকে ২২ হাজার ১শ ৮৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শাহ দেলোয়ার হোসেন ১৩ হাজার ৮শ ২৮ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাহফুজা আক্তার রীনা কলস প্রতীকে ৩৬ হাজার ৭শ ৩৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মদিনা আক্তার ফুটবল ১২ হাজার ১শ ১৭ ভোট পেয়েছেন।
দোয়ারাবাজার উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. আব্দুর রহিম ৩১ হাজার ৫শ ৮৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দেওয়ান তানভীর আশরাফী ২০ হাজার ১শ ২১ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। ভাইস চেয়াম্যান পদে রফিকুল ইসলাম চশমা প্রতীকে ১০ হাজার ১শ ৫০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল করিম পালকী প্রতীকে ৯ হাজার ৫শ ৬ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সালেহা বেগম ১৮ হাজার ২শ ৪৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সৈয়দা পারভিন কলস প্রতীকে ১৮ হাজার ৩৭ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন।
তাহিপুর উপজেলায় জেলা আওয়ামীলীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আওয়ামী লীগ প্রার্থী করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল নৌকা প্রতীকে ৫০ হাজার ৪শ ৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির বহিস্কৃত নেতা আনিসুল হক ২৪ হাজার ৩শ ৩০ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন খন্দকার ২১ হাজার ৮শ ৫৩ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্ধন্দ্বী আলমগীর খোকন চশমা প্রতীকে ১৬ হাজার ৫শ ৬০ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে খালেদা বেগম প্রজাপতি প্রতীকে ৪১ হাজার ৭শ ৮৫ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হেনা আক্তার পদ্মফুল প্রতীকে ৯ হাজার ৯শত ৩৮ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন।
শাল্লা উপজেলায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (আল-আমিন চৌধুরী) নৌকা প্রতীকে ২৪ হাজার ৯শ ৮০ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী অবনী মোহন দাস আনারস প্রতীকে ১৯ হাজার ৩শ ৩ ভোট পেয়েছেন । ভাইস চেয়ারম্যান পদে দিপু রঞ্জন দাস টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে ৯ হাজার ৪শ ৩১ ভোট পেয়েছেন। তার নিকট তম প্রতিদ্বন্দ্বী পঙ্কজ কুমার উড়োজাহাজ প্রতীক নিয়ে ৭ হাজার ২শ ৫৮ ভোট পেয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে অমিতা রাণী দাস প্রজাপতি প্রতীক নিয়ে ১৪ হাজার ৮শ ৬৫ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অলি বেগম ফুটবল প্রতীকে ৮ হাজার ৮শ ১৭ ভোট পেয়েছেন। এই উপজেলায় তিন কেন্দ্রে ভোট বন্ধ হওয়ার কারণে তিন পদেই পুন:ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
সারাবাংলা/ইএইচটি