ভাল্লুকের থাবায় জখম কিশোরের প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টায় সেনাবাহিনী
১২ মে ২০১৯ ১৬:৪৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: রাঙ্গামাটি জেলার সাজেক ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড় এলাকায় ভাল্লুকের আক্রমণে জখম হওয়া এক কিশোরকে বাঁচানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সেনাবাহিনী। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এই কিশোরকে দুর্গম ওই অঞ্চল থেকে হেলিকপ্টারে এনে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই কিশোরের চিকিৎসায় গঠিত হয়েছে মেডিকেল বোর্ডও।
রোববার (১২ মে) দুপুর সোয়া ২টার দিকে আহত কিশোরকে নিয়ে রাঙ্গামাটি থেকে আসা হেলিকপ্টারটি চট্টগ্রাম সেনানিবাসে অবতরণ করে। এ সময় সেনাবাহিনীর কয়েকজন কর্মকর্তা ওই কিশোরকে হেলিকপ্টার থেকে নামিয়ে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেন।
আহত কিশোর পণবিকাশ ত্রিপুরা (১৬) রাঙ্গামাটির সাজেক ইউনিয়নের নিওথাংনাং পাড়ার অলীন্দ বিকাশ ত্রিপুরার ছেলে।
পণবিকাশের সঙ্গে হেলিকপ্টারে আসা তার চাচাতো ভাই হরেন বিকাশ ত্রিপুরা সারাবাংলাকে জানান, গত শুক্রবার (১০ মে) তাদের বাড়ি থেকে প্রায় দুইঘণ্টার হাঁটা পথের সমান দূরত্বে জঙ্গলে বাবার সঙ্গে জুমচাষ করতে গিয়েছিল পণবিকাশ। বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে কাজ শেষ করে ফেরার পথে পণবিকাশের ওপর একটি হিংস্র ভাল্লুক ঝাঁপিয়ে পড়ে। ভাল্লুকের থাবায় পণবিকাশের বেশ কয়েকটি দাঁত পড়ে গেছে। এছাড়া ভাল্লুকের আঁচড়ে পণবিকাশে মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ মারাত্মক জখম হয়েছে।
স্থানীয়ভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় পণবিকাশের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। রোববার পণবিকাশকে স্থানীয় ৫৪ ব্যাটেলিয়ন বিজিবি’ ক্যাম্পে নেওয়া হলে সেখান থেকে সেনাবাহিনীকে খবর দেওয়া হয়।
হরেন ত্রিপুরা সারাবাংলাকে বলেন, ‘গাড়ির রাস্তা থেকে আমাদের বাড়িতে হেঁটে যেতে সময় লাগে চারদিন। আমাদের এলাকায় কোনো হাসপাতাল নেই, ডাক্তার নেই। সেনাবাহিনীর সহযোগিতা পাওয়ায় আশা করছি আমার ভাইকে বাঁচানো সম্ভব হবে।’
চট্টগ্রাম সেনানিবাসের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোর্শেদ রশিদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে দেখে ওই কিশোরের শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ মনে হয়েছে। তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আরও নিশ্চিত করে বলা যাবে যে, রোগীর প্রকৃত অবস্থা কী। অবস্থা যা-ই হোক, আমরা সর্বোচ্চ সুচিকিৎসা নিশ্চিত করব।’
এর আগে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর রাঙামাটি জেলার জুরাছড়ি উপজেলার বগাখালী গ্রাম থেকে সোনাপতি চাকমা নামে এক প্রসূতিকে হেলিকপ্টারে চট্টগ্রাম সেনানিবাসের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে এনে প্রাণ বাঁচায় সেনাবাহিনী।
এরপর গত ২৯ এপ্রিল একই গ্রাম থেকে জতনি তচঙ্গ্যা নামে আরও এক প্রসূতিকে হেলিকপ্টারে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে এনে প্রাণ বাঁচায় সেনাবাহিনী।
সারাবাংলা/আরডি/একে