লাথি দিয়ে ফেলে বাসচাপায় হত্যা, চালক গ্রেফতার
১০ জুন ২০১৯ ২১:৫৮
গাজীপুর: গাজীপুরে চলন্ত বাস থেকে এক যাত্রীকে লাথি দিয়ে ফেলে তার ওপর গাড়ি চালিয়ে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বাসচালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত বাসচালক রোকন উদ্দিনকে সোমবার (১০ জুন) ময়মনসিংহের ধোবাউড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। এর আগে গত রোববার (৯ জুন) সালাহউদ্দিন আহমেদ নামে এক যাত্রীকে বাসচাপায় হত্যা করা হয়।
সোমবার (১০ জুন) বিকেলে গাজীপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার এ তথ্য জনান।
এসপি শামসুন্নাহার জানান, রোববার দুপুরে আলম এশিয়া পরিবহনের বাস থেকে সালাহউদ্দিন আহমেদ নামে আরেক চালককে লাথি মেরে ফেলে গাড়িচাপা দিয়ে হত্যার অভিযোগে নিহতের ভাই জালাল উদ্দিন চারজনকে আসামি করে জয়দেবপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর বাসটি জব্দ করা হলেও চালক ও তার সহকারীসহ মামলার আসামিরা পালিয়ে যায়। পরে তাদের ধরতে পুলিশের একটি দল অভিযান পরিচালনা করে। জয়দেবপুর থানা পুলিশের ওই দলটি তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সোমবার দুপুরে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সীমান্ত থেকে অভিযুক্ত বাসচালক রোকন উদ্দিনকে গ্রেফতার করে।
নিহতের ছোট ভাই জামাল উদ্দিন জানান, সালাহউদ্দিন তার স্ত্রী পারুলকে নিয়ে বাঘের বাজার এলাকায় ভাড়া থেকে একটি কারখানার গাড়ি চালাতেন। ঈদের ছুটি কাটিয়ে রোববার সকালে স্ত্রীকে নিয়ে ময়মনসিংহের ফুলপুর থেকে গাজীপুরে কর্মস্থলে ফিরছিলেন তিনি। পথে আলম এশিয়া পরিবহনের বাসে ভাড়া নিয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায় হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটে।
মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হুসেন নিহতের স্বজনদের বরাত দিয়ে বলেন, ‘বাসের ভেতরে চালককের সহকারীকে ‘ড্রাইভার’ পরিচয় দিয়ে সালাউদ্দিন ভাড়া কিছু টাকা কম রাখার অনুরোধ জানান। এ নিয়ে সালাউদ্দিন ও তার স্ত্রীর সঙ্গে চালকের সহকারীর বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে চালকের সহকারী সালাহউদ্দিনকে লাথি মেরে ফেলে দেবে বলে হুমকি দেয়। ভয় পেয়ে সালাহউদ্দিন তার ভাই জামালকে মোবাইল ফোনে বাঘের বাজার বাসস্ট্যান্ডে এসে দাঁড়াতে বলেন। পরে জামাল আরও ৫-৬ জনকে সঙ্গে নিয়ে বাঘের বাজার দাঁড়িয়ে থাকেন। কিন্তু সালাহউদ্দিন ও তার স্ত্রীকে বহনকারী দ্রুতগামী বাসটি স্ট্যান্ডে না দাঁড়িয়েই সালাহউদ্দিনকে লাথি মেরে ফেলে দেয়। তবে তার স্ত্রীকে না নামিয়েই বাসটি চলে যেতে থাকলে সালাহউদ্দিন সড়ক থেকে উঠে গাড়ির সামনে গিয়ে সেটির গতিরোধের চেষ্টা করেন। এ সময় স্বজনদের সামনেই চালক বাসটি তার ওপর উঠিয়ে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই সালাহউদ্দিন মারা যান। পরে ঘটনাস্থল থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে নিহতের স্ত্রী পারুলকে নামিয়ে দেয় আলম এশিয়া পরিবহনের বাসটি।’
ঘটনার পর পুলিশ তৎপর হলে বাসটি ফেলে রেখেই চালকসহ অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। পরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। সোমবার দুপুরে ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সারাবাংলা/পিটিএম