Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বর্ষায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভূমিধসের আশঙ্কা, ঠেকাতে একাধিক উদ্যোগ


১৬ জুন ২০১৯ ১৩:৩০

আসন্ন বর্ষায় কক্সবাজারের উখিয়া ও কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘিরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা বাড়ছে। এর মধ্যে পাহাড় ধসের আশঙ্কাকে সবচেয়ে বড় করে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। এ অবস্থায় পাহাড় রক্ষায় বাঁশ পুতে বিশেষ সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও পাহাড়ে পাহাড়ে নালা কেটে পানি সহজে নেমে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ব্র্যাকের ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশান বিভাগ পাহাড় ধস ঠেকানোয় এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে।

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো গড়ে ওঠার সময় পাহাড়ের ওপর অত্যাচার সবচেয়ে বেশি হয়েছে। পাহাড়ের বনভূমি নির্বিচারে উজাড় করে নেওয়ায় উঁচু পাহাড়গুলোয় এখন কেবল মাটি দেখা যায়। পাহাড় ও গাছ কেটে বসতি গড়ে ওঠায় এখন অনেকটাই আলগা হয়ে পড়েছে পাহাড়গুলো। ফলে আসন্ন বর্ষা মওসুমে বড় ধরনের ভূমিধসের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

স্থানীয় প্রশাসন জানায়, রোহিঙ্গা ক্যাম্প বসানোর আগেই এই পাহাড় অঞ্চল ঝুঁকিপূর্ণ ছিলো। ২০১৭’র জুনে ঝুঁকিপূর্ণ এইসব পাহাড় থেকে ২০ হাজারে বেশি স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়া হয়েছিল। সেখানেই এখন বসবাস রোহিঙ্গাদের। সম্প্রতি সুপার সাইক্লোন ফণীর প্রভাবে ঝড়ো বাতাস আর বৃষ্টিতেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাহাড়ের রোহিঙ্গা শিবিরের ঘরবাড়ি।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে সমস্যা ও সঙ্কটগুলো তুলে ধরতে কাজ করছে স্থানীয় কমিউনিটি রেডিও স্টেশন রেডিও নাফ। তারই একটি প্রতিবেদনে পাহাড় ধসের এই আশঙ্কার কথা উঠে আসে। উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ২৪ এর বাসিন্দা মারজিনাকে উদ্ধৃত করে নাফ জানায়, এখানে ঘরগুলো নড়বড়ে, ঝড়বৃষ্টি হলেই ভেঙ্গে পড়ে। বড় ধরণের ঝড় আঘাত হানলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে। ১৭ নম্বর ক্যাম্পের মো. জাহিদ হোসেন বলছেন, ভারি বৃষ্টিতে টিনের চালার পানি গড়িয়ে মাটিতে পড়লেই গর্ত হয়। পানির তোড়ে ঢাল বেয়ে নেমে যায় মাটি। পাহাড় আলগা হয়ে যায়। যেকোন সময় ধসের শঙ্কা নিয়েই এখানে বাস করছেন অন্ততঃ ১৭ হাজার রোহিঙ্গা পরিবার।

রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবক শেকাম্মত প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এখানে। তিনি বলছিলেন, দূর্যোগকালীন সমস্যা কিভাবে মোকাবিলা করতে হয় তা তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

ব্র্যাকের ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশান স্পেশালিস্ট মো. আমিন উদ্দিন রেডিও নাফ’র ‘পালং এর হতা’ নামের একটি কর্মসূচিতে কথা বলছিলেন। তিনি ওই অনুষ্ঠানে জানান কাজটিতে তারা দুই ভাগে ভাগ করে বাস্তবায়ন করছেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছাড়াও স্থানীয় কমিউনিটিকেও এতে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
বাঁশ পুতে পাহাড় রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থার পাশাপাশি পাহাড় ধসের ঝুঁকি এবং পাহাড়ি ঢল জনিত ঝুঁকি প্রবন এলাকায় বসবাস করে এমন দুই হাজার পরিবারকে নতুন জায়গায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

পাহাড় ধস ঠেকাতে বাঁশের ব্যবহার কতটা উপযোগী এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটি এই এলাকায় সহজলভ্য। তাছাড়া পাহাড় ধস ঠেকাতে ইটের দেয়াল নির্মাণ করতে হলে একটি শক্ত ভিতের প্রয়োজন। এখানে সেটা গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া তা ব্যয়বহুলও।

এছাড়াও পাহাড়ে কোথাও যাতে পানি আটকে গিয়ে ধসের সৃষ্টি না হয় সে কারণে সিমেন্টের নালা তৈরি করা হচ্ছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। তথ্য সূত্র: পালং এর হতা, রেডিও নাফ।

সারবাংলা/এমএম

উখিয়া কুতুপালং পাহাড় ধস রোহিঙ্গা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর