Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আন্দোলনের ষষ্ঠ দিনেও অচল বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি


১৮ মে ২০১৮ ১৫:০১

।। তনুজা শারমিন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট।।

দিনাজপুর: দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া শ্রমিকদের টানা কর্মবিরতির ষষ্ঠ দিন শুক্রবারও (১৮ মে) অচল রয়েছে দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল কয়লা খনি।

আন্দোলনের শুরুর দিন থেকেই দফায় দফায় শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবারের  (১৭ মে) সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে খনি এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এদিকে, কর্মবিরতির তৃতীয় দিন গত মঙ্গলবার কর্মকর্তাদের ওপর হামলার ঘটনায় পার্বতীপুর থানায় দু’টি মামলা করেছেন খনির ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) সৈয়দ ইমাম হোসেন। এতে ৩০ থেকে ৩৫ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন পার্বতীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল হক প্রধান। ওই ঘটনায় ১০ জন কর্মকর্তা আহত হয়েছিলেন।

প্রতিষ্ঠানের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, আউটসোর্সিং শ্রমিকদের স্থায়ী নিয়োগ, নতুন টেন্ডার রেশনিং চালু, বিভিন্ন ছুটির প্রাপ্য মজুরি দেওয়া, প্রফিট বোনাসসহ ১৩ দফা দাবিতে গত রোববার (১৩ মে) থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে যান বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির শ্রমিক-কর্মচারীরা। এতে খনির কর্মচারীদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছেন কয়লা উত্তোলনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় ২০টি গ্রামের সমন্বয়ে গঠিত একটি কমিটি। তারা আরো ছয় দফা দাবি জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন। পাশাপাশি শ্রমিকদের ওপর হামলাকারী কর্মকর্তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার হুুঁশিয়ারি দেন।

বিজ্ঞাপন

কর্মকর্তাদের অভিযোগ, টানা কর্মবিরতির পাশপাশি খনির গেটে অবস্থান কর্মসূচি পালন করায় খনির দেশি-বিদেশি কর্মকর্তারা পরিবারসহ ভেতরে অবরুদ্ধ রয়েছেন। শ্রমিকদের দাবিকে অযৌক্তিক উল্লেখ করে তাদেরকে কাজে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

অন্যদিকে, আন্দোলনরত শ্রমিক ও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী বলছেন, তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ভণ্ডুল করতে তাদের ওপর হামলা-নির্যাতন চালানো হচ্ছে। পরিশ্রম করা সত্ত্বেও তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এসবের ইতি টানতেই রাস্তায় নেমেছেন তারা।

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি বলেন, ‘আমরা আমাদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য রাস্তায় নেমেছি। বিভিন্ন ছুটির দিনের টাকা আমাদের অ্যাকাউন্টে যোগ হয় না। কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে এসব টাকা আত্মসাৎ করে খাচ্ছে। ২০১৭ সাল থেকে চাল সহায়তা বাবদ যে অর্থ দেওয়া হতো, তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তারা এসি রুমে বসে বসে ডাস্ট ভাতা পাচ্ছেন, কিন্তু আমরা শ্রমিকরা কয়লা তুলেও সে ধরনের কোনো ভাতা পাই না। সব ধরনের বৈষম্য ও দাবি মেনে না নিলে আমাদের আন্দোলন চলবে।’

বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক এ বি এম কামরুজ্জামান বলেন, ‘শ্রমিকদের বেতন আগের থেকে তিন গুণ বাড়ানো হয়েছে। এখন তারা বেশকিছু দাবি করছে, যার সবগুলোই অযৌক্তিক। আমাদের কর্মকর্তাদের পরিবারের সবাইকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এই অবস্থা থেকে মুক্তি চাই।’ কয়লা উৎপাদন অব্যাহত রাখতে শ্রমিকদের কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/টিএস/এমআইএস

দিনাজপুর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর