Friday 11 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বৃষ্টির বাজারে সবজি-মাছ, ডিম-মুরগির দাম চড়া

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১১ জুলাই ২০২৫ ০৯:৫৯ | আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৫ ১০:১০

ছবি: শাকসবজির দাম কিছুটা বেশী। ছবি: সারাবাংলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বন্দরনগরী চট্টগ্রামের কাঁচাবাজারে সবজি, মাছ, ডিম, সোনালি-দেশি মুরগির দাম বেড়েছে। চালের দামও এখনও চড়া আছে। তবে মুদিপণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, তিনদিন ধরে টানা ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণের কারণে দেশের উৎপাদন অঞ্চল থেকে চট্টগ্রামে সবজিসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। এতে কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে।

ছবি: সারাবাংলা

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) নগরীর কাজীর দেউড়ি কাঁচাবাজার ও বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকানে দর যাচাই করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে আলু ছাড়া প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ১০-৩০ টাকা বেড়েছে। যেমন- কাঁকরোল গত সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছিল কেজি ৬০ টাকা দরে। বৃহস্পতিবার বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। বরবটি, ঝিঙা, পটল, করলা গত সপ্তাহে ৬০ থেকে ৬৫ টাকার মধ্যে ছিল। এখন ৮০ টাকার নিচে এসব সবজি মিলছে না। ২৫ থেকে ৩০ টাকার পেঁপে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাউ ৫০ টাকা, শিম ৮০ টাকা, বেগুন ৭০ টাকা, গাজর দেশি ৮০ টাকা, চায়নার ১৩০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৮০ টাকা, কচুর লতি ৭০ টাকা, কচুরমুখী ৭০ টাকা, শালগম ৭০ টাকা, মূলা ৬০ দরে বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটির দাম কেজিতে অন্তঃত ১০ টাকা বেড়েছে।

বিজ্ঞাপন

ছবি: সারাবাংলা

তবে গত সপ্তাহের দরে মুন্সীগঞ্জের আলু ২৫ টাকা, বগুড়ার লাল আলু ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিষ্টি কুমড়ার দাম কেজিতে ৫ টাকা কমে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচের কেজি অন্তঃত ৪০ টাকা বেড়ে ২০০ টাকায় ঠেকেছে। ধনেপাতা কেজি ২০০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শাকের মধ্যে কচু শাক ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া শাক ৫০ টাকা, পুঁই শাক ৪০ টাকা ও লাল শাক ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আসকার দিঘীর পাড়ের সবজি বিক্রেতা মো. শাহআলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা তো রিয়াজউদ্দিন বাজার আড়ত থেকে বেশিরভাগ সবজি এনে বিক্রি করি। গত তিনদিন যেভাবে বৃষ্টি পড়ছে, আড়তে এখন সবজি নেই বললেই চলে। গাড়ি আসতে পারছে না। এজন্য দাম বেড়েছে। বৃষ্টি কমে সরবরাহ আগের মতো হলে দাম কমে যাবে।’

ছবি: সারাবাংলা

সাগরের মাছের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। যেমন- সাধারণের বেশি চাহিদার লইট্যা মাছ গত সপ্তাহেও প্রতিকেজি ১৪০ টাকা ছিল। এ সপ্তাহে বেড়ে হয়েছে ১৮০ থেকে ২২০ টাকা। ইলিশের দাম আকার ও ওজনভেদে ১৮০০ থেকে ২২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে এক হাজার টাকার মধ্যে ছোট ইলিশ মিললেও এ সপ্তাহে পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া সাগরের লাল পোয়া ২৬০ থেকে ৩৫০ টাকা, টুনা মাছ ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, মাইট্যা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, রুপচাঁন্দা ৪৫০ থেকে ১২০০ টাকা, কোরাল ৭৫০ থেকে ৯০০ টাকা, লাক্ষা ৪৫০ থেকে ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়েছে কেজিতে অন্তঃত ৩০ টাকা।

ছবি: সারাবাংলা

অন্যান্য মাছের মধ্যে রুই ৩০০ থেকে ৫৫০ টাকা, কাতলা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, বেলে ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, কালিবাউশ ৩৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চিংড়ি ৯০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, কাঁচকি ৪০০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, শিং ৫০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, টেংরা ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, চিতল ৬০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব মাছের দাম তেমন বাড়েনি।

নগরীর মোমিন রোডের ভ্রাম্যমাণ মাছ বিক্রেতা কানুরাম দাস সারাবাংলাকে বলেন, ‘সাগরের অবস্থা খারাপ। মাছ ধরা যাচ্ছে না। বৃষ্টি কমলে তখন ঠিক হবে।’

ছবি: সারাবাংলা

বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি গত সপ্তাহের মতোই ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা আছে। তবে সোনালি মুরগি প্রতি কেজিতে অন্তঃত ৪০ টাকা বেড়ে ২৮০ থেকে ৩১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে ৫৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সাদা লেয়ার ও লাল লেয়ার মুরগিও কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে ২৬০ থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে আগের মতোই ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। গরুর মাংস গত সপ্তাহের মতোই ৮০০ থেকে ৯৫০ টাকা, খাসি ও পাঁঠা ছাগলের মাংস ১২০০ থেকে ১২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ফার্মের মুরগির দাম ডজন প্রতি ৫-১০ টাকা বেড়ে ১২০-১৩০ টাকায় বিক্রি জচ্ছে। এছাড়া দেশি মুরগির ডিম ডজনপ্রতি ২৪০ টাকা ও হাঁসের ডিম ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গত দুই সপ্তাহ ধরে চড়া চালের দর এখনও উত্তাপ ধরে রেখেছে। দোকানে ‍খুচরায় সরু চালের মধ্যে ডায়মন্ড, মঞ্জুর, সাগর, রসিদ- এসব ব্র্যান্ডের মিনিটেক চাল প্রতিকেজি ৮০ থেকে ৮২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভালো মানের মিনিকেট আতপ মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের চাল বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়। স্বর্ণা ৫৫ থেকে ৫৭ টাকা, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ জাতের মাঝারি মানের চাল ৬০ থেকে ৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ছবি: সংগৃহীত

খুচরা বাজারে মুদি পণ্যের দামে অবশ্য তেমন হেরফের হয়নি। কেজিপ্রতি পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, দেশি রসুন ১২০ টাকা, চায়না রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, চায়না আদা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, ভারতীয় আদা ১২০ দরে বিক্রি হয়েছে।

এছাড়া প্রতি কেজি ছোট মসুর ডাল ১৩০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেসারি ডাল ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১১০ টাকা, মাষকলাই ডাল ১৮০ টাকা, ডাবলি ৬০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা, কাজু বাদাম ১ হাজার ৭০০ টাকা, পেস্তা বাদাম ২ হাজার ৭০০ টাকা, কাঠ বাদাম ১ হাজার ২২০ টাকা, কিশমিশ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, দারুচিনি ৫২০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ৪০০ টাকা, কালো গোলমরিচ ১ হাজার ৩০০ টাকা, সাদা গোলমরিচ ১ হাজার ৬০০ টাকা, জিরা ৬০০ টাকা, প্যাকেট পোলাও চাল ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, খোলা পোলাও চাল মান ভেদে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

ছবি: সারাবাংলা

আর প্রতি কেজি প্যাকেটজাত সাদা চিনি ১২৫ টাকা, খোলা সাদা চিনি ১২০ টাকা, খোলা লালচিনি ১৪০ টাকা, প্যাকেট লালচিনি ১৭০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৪০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ৯০ টাকা, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৮০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২৫০ টাকায় দরে বিক্রি হয়েছে।

সারাবাংলা/আরডি/এমপি

চাল শাক-সবজি সাপ্তাহিক বাজারদর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর