চট্টগ্রাম ব্যুরো: বন্দরনগরী চট্টগ্রামের কাঁচাবাজারে ব্রয়লার মুরগি এবং সামুদ্রিক মাছের দাম কমেছে। তবে সবজির দাম এখনও চড়া। ডিম, মাংস, মুদিপণ্যের দাম অপরিবর্তিত আছে।

চট্টগ্রাম নগরীর বাজারের চিত্র। ছবি: সারাবাংলা
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) নগরীর আসদার দিঘীর পাড় কাঁচাবাজার ও বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকানে দর যাচাই করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
বাজারে ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি গত সপ্তাহে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচাবাজারের দোকানগুলোতে কেজিতে ৫ টাকা কমেছে। তবে অলিগলির দোকানগুলোতে এখনও আগের দাম পাওয়া গেছে। গত সপ্তাহে সোনালি মুরগি দাম বেড়ে ২৮০ থেকে ৩১০ টাকা, দেশি মুরগি বেড়ে ৫৮০ টাকায়, সাদা লেয়ার ও লাল লেয়ার মুরগি বেড়ে ২৬০ থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। এ সপ্তাহেও এর হেরফের হয়নি। জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়।
অন্যান্য মাংসের মধ্যে গরুর মাংস গত সপ্তাহের মতোই ৮০০ থেকে ৯৫০ টাকা, খাসি ও পাঁঠা ছাগলের মাংস ১২০০ থেকে ১২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের মুরগির ডিম ডজনপ্রতি ১৩০ টাকা, দেশি মুরগি ২৪০ টাকা ও হাঁসের ডিম ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে সামুদ্রিক মাছের সরবরাহ বেড়েছে। এতে সাধারণের চাহিদা বেশি এমন কিছু মাছের দাম কমেছে। যেমন- লইট্যা মাছ গত সপ্তাহে প্রতিকেজি ১৮০ থেকে ২২০ টাকা ছিল। এ সপ্তাহে কমে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নগরীর মোমিন রোডে ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে আরও দেখা গেছে, পোয়া মাছ ২০০ থেকে ২৮০ টাকা, করতি মাছ ২৩০ টাকা, সুরমা মাছ ২৩০ টাকা, আকারভেদে রূপচাঁদা ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা, কোরাল ৭৫০ থেকে ৯০০ টাকা, জাটকা ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব মাছের দাম কেজিতে অন্তঃত ৫০ টাকা কমেছে বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন।
তবে সামুদ্রিক মাছের মধ্যে ভরা মৌসুমেও ইলিশ মাছ এখনও ক্রেতার নাগালে আসেনি। চট্টগ্রামে ইলিশ মাছ আকারভেদে ছোট-মাঝারি ১২০০ থেকে ১৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় সাইজের ইলিশ ২০০০-২২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ছবি: সারাবাংলা
অন্যান্য মাছের মধ্যে রুই ৩০০ থেকে ৫৫০ টাকা, কাতলা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, বেলে ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, কালিবাউশ ৩৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চিংড়ি ৯০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, কাঁচকি ৪০০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, শিং ৫০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, টেংরা ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, চিতল ৬০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব মাছের দামে তেমন কোনো হেরফের হয়নি।

ছবি: সারাবাংলা
বৃষ্টির কারণে গত দুই সপ্তাহ ধরে বাড়তি সবজির দর এখনও নিম্নমুখী হয়নি। শুধুমাত্র কাঁচামরিচের দাম গত সপ্তাহের ২৫০ টাকা থেকে কমে ১২০-১৩০ টাকা হয়েছে। সবজির মধ্যে কাঁকরোল ৯০ টাকা, বরবটি, ঝিঙা, পটল, করলা ৮০ থেকে ৯০ টাকা, পেঁপে ও লাউ ৫০ টাকা, শিম ৮০ টাকা, বেগুন ৭০ টাকা, গাজর দেশি ৮০ টাকা, চায়নার ১৩০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৮০ টাকা, কচুর লতি ৭০ টাকা, কচুরমুখী ৭০ টাকা, শালগম ৭০ টাকা, মূলা ৬০ দরে বিক্রি হয়েছে।

ছবি: সারাবাংলা
মুন্সীগঞ্জের আলু ২৫ টাকা, বগুড়ার লাল আলু ৩৫ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ধনেপাতার দাম কেজিতে ২০ টাকা কমে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শাকের মধ্যে কচু শাক ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া শাক ৫০ টাকা, পুঁই শাক ৪০ টাকা ও লাল শাক ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ছবি: সারাবাংলা
চালের দর এখনও চড়াই আছে। খুচরায় সরু চালের মধ্যে ডায়মন্ড, মঞ্জুর, সাগর, রসিদ- এসব ব্র্যান্ডের মিনিটেক চাল প্রতিকেজি ৮০ থেকে ৮২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভালো মানের মিনিকেট আতপ মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের চাল বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়। স্বর্ণা ৫৫ থেকে ৫৭ টাকা, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ জাতের মাঝারি মানের চাল ৬০ থেকে ৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা বাজারে মুদি পণ্যের দাম অপরিবর্তিত আছে। কেজিপ্রতি পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, দেশি রসুন ১২০ টাকা, চায়না রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, চায়না আদা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, ভারতীয় আদা ১২০ দরে বিক্রি হয়েছে।

ছবি: সারাবাংলা
এছাড়া প্রতি কেজি ছোট মসুর ডাল ১৩০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেসারি ডাল ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১১০ টাকা, মাষকলাই ডাল ১৮০ টাকা, ডাবলি ৬০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা, কাজু বাদাম ১ হাজার ৭০০ টাকা, পেস্তা বাদাম ২ হাজার ৭০০ টাকা, কাঠ বাদাম ১ হাজার ২২০ টাকা, কিশমিশ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, দারুচিনি ৫২০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ৪০০ টাকা, কালো গোলমরিচ ১ হাজার ৩০০ টাকা, সাদা গোলমরিচ ১ হাজার ৬০০ টাকা, জিরা ৬০০ টাকা, প্যাকেট পোলাও চাল ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, খোলা পোলাও চাল মান ভেদে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

ছবি: সারাবাংলা
আর প্রতি কেজি প্যাকেটজাত সাদা চিনি ১২৫ টাকা, খোলা সাদা চিনি ১২০ টাকা, খোলা লালচিনি ১৪০ টাকা, প্যাকেট লালচিনি ১৭০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৪০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ৯০ টাকা, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৮০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২৫০ টাকায় দরে বিক্রি হয়েছে।