চট্টগ্রাম ব্যুরো: দাম একবার কমে, দিন দুয়েক পর আবার বাড়ে- এই চক্রে ঘুরছে শাকসবজি। চাল-ডালসহ অধিকাংশ মুদিপণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকলেও বেড়েছে মুরগি আর ডিমের দাম। মাংসের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞার কারণে বাজারে মাছের দাম বাড়তি।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার ও আগ্রাবাদ সিএন্ডবি কলোনি কাঁচাবাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এ চিত্র দেখা গেছে।

সবজির দাম কিছুটা বেশী। ছবি: সারাবাংলা
বাজারে অধিকাংশ সবজিই বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। তবে নতুন আসা শীতকালীন সবজির দাম বেশি। সবজির মধ্যে প্রতি কেজি টমেটো মানভেদে ১২০ থেকে ২০০ টাকা, দেশি গাজর ৭০ টাকা, চায়না গাজর ১২০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, গোল বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা, দেশি শসা ৭০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ১০০ টাকা, পটল ৮০ থেকে ১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, ধুন্দল ৮০ টাকা, ঝিঙা ১০০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, কচুরমুখী ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে প্রায় ২০০ টাকা কমে ১৬০ টাকায় এসেছে। ধনেপাতা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়।

সবজির বাজার। ছবি: সারাবাংলা
এছাড়া পেঁপে ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মানভেদে লাউ ৮০ থেকে ১০০ টাকা, চালকুমড়া ৭০ থেকে ৮০ টাকা, প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা, প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। শীতকালীন সবজির মধ্যে ফুলকপি ২০০ টাকা, শিম ২২০ টাকা, মূলা ১০০ টাকা, বাঁধাকপি ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শাকের মধ্যে কচুশাক ৪০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া শাক ৫০ টাকা, পুঁইশাক ৪০ টাকা ও লালশাক ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সিএন্ডবি কলোনি বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. সোহেল সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত সপ্তাহের চেয়ে এই সপ্তাহে কিছু সবজির দাম কমেছে। বেগুন, গাজর, চিচিঙ্গার দাম সামান্য বেড়েছে। দাম আসলে বাড়া-কমার মধ্যেই আছে। যেমন-শীতকালীন সবজির দাম এখন বাড়তি। এগুলো মাত্র বাজারে আসতে শুরু করেছে। সপ্তাহ দু’য়েক পর দেখবেন এগুলো কেজি ৪০-৫০ টাকায় নেমে আসবে।’
তবে বাজারের চেয়ে ভ্যানে, ভ্রাম্যমাণ দোকানে শাকসবজির দাম কেজিতে অন্তত ৫টাকা কম দেখা গেছে।

বেড়েছে মুরগীর দাম। ছবি: সারাবাংলা
বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ১০ টাকা ও ডিম ডজনে ১০ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা, সোনালি ৩০০ টাকা, কক মুরগি ২৬০ থেকে ২৯০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা ও দেশি মুরগি ৫৩০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছিল ১৭০ টাকা।

ডিমে ডজনপ্রতি দাম বেড়েছে। ছবি: সারাবাংলা
এছাড়া গত সপ্তাহে ফার্মের ডিমের দাম ছিল ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। বৃহস্পতিবার সেটা বিক্রি হয়েছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়। আবার কোথাও বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা। হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতিডজন ২২০ টাকায়। বাজারে গরু ও মহিষের মাংষ বিক্রি হয়েছে ৭৫০ থেকে ৯৫০ টাকায়। আর খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
বাজারে সামুদ্রিক মাছ তেমন নেই বললেই চলে। ইলিশ রক্ষায় গত ৪ অক্টোবর থেকে সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।
এ অবস্থায় বাজারে প্রকারভেদে মাছের দাম বেড়েছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে চিংড়ির। গত সপ্তাহে বড় সাইজের বাগদা প্রতি কেজি ৮৩০ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকায়। গলদা চিংড়ি ৮৫০ ও ছোট চিংড়ি ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় রুই ৫০০ টাকা, মাঝারি ৪৬০ ও ছোট রুই বিক্রি হয় ৩৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাতলা মাছ ৩৬০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে বড় সাইজের কাতলার দাম ছিল ৩৮০ টাকা। এছাড়া ছোট কোরাল মাছ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, সিলভার কার্প ২৫০, পাবদা ৪০০, রূপচাঁদা ৮৫০ ও টেংরা ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজার। ছবি: সারাবাংলা
সামুদ্রিক মাছের মধ্যে এক কেজি বা তার বেশি ওজনের ইলিশ ২৬০০ টাকা ও এক কেজির কিছুটা কম ওজনের ইলিশ ২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছোট রসুন বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৭৫ থেকে ৮০ টাকা আর বড় রসুন ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। ভারতের কেরালার আদা ১২০ টাকা, চীনের আদা ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
চালের দাম অপরিবর্তিত আছে। খুচরা দোকানে মিনিকেট চালের দাম কেজি প্রতি ৭৮ থেকে ৮৫ টাকা, আটাশ বালাম কেজি প্রতি ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, নাজিরশাইল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, স্বর্ণা মোটা চাল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, পাইজাম ৬২ থেকে ৬৫ টাকা, বাসমতী ৯৫ থেকে ১২০ টাকা, চিনিগুঁড়া প্যাকেট ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা ও খোলা পোলাও চাল মানভেদে ১১০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

চালের দোকান। ছবি: সারাবাংলা
অন্যান্য মুদিপণ্যের মধ্যে বাজারে খোলা আটা বিক্রি হয়েছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায়। প্যাকেটজাত আটার মধ্যে সেনা, ডায়মন্ড, ফ্রেশ, আফতাবসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আটা বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। আর খোলা ময়দা ৫৫ টাকা, প্যাকেটজাত ময়দা ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাজারে কেজিপ্রতি নেপালি মসুর বিক্রি হয়েছে ১৬০ টাকায়। আর মোটা দানার মসুর ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া প্রতিকেজি খোলা সাদা চিনি ১০৫ থেকে ১১০ টাকা, প্যাকেট চিনি ১২০ টাকা, লালচিনি ১১৫ টাকা, ছোট মুগডাল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, খেসারি ডাল ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১১০ টাকা, মাষকলাই ডাল ১৮০ টাকা, ডাবলি ৬০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৭২ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২৫০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৪০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ৯০ টাকা, কাজু বাদাম ১ হাজার ৭০০ টাকা, পেস্তা বাদাম ২ হাজার ৭০০ টাকা, কাঠ বাদাম ১ হাজার ২২০ টাকা, কিশমিশ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, দারুচিনি ৫২০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ৪০০ টাকা, কালো গোলমরিচ ১ হাজার ৩০০ টাকা, সাদা গোলমরিচ ১ হাজার ৬০০ টাকা, জিরা ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।