চট্টগ্রাম ব্যুরো: বন্দরনগরী চট্টগ্রামে বাজারে পেঁয়াজ ও আদার দাম বেড়েছে। তবে শীতকালীন সবজির দাম আরও কমেছে। মাছ-মাংস ও মুদিপণ্যের দামে তেমন কোনো হেরফের হয়নি।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউড়ি কাঁচাবাজার, নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার ও ভ্রাম্যমাণ বিভিন্ন দোকান ঘুরে নিত্যপণ্যের দরের এ চিত্র পাওয়া গেছে।

সবজির বাজার। ছবি: সারাবাংলা
বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি মানভেদে ৮০ থেকে ৯৫ টাকায়। এর মধ্যে ছোট পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৮৫ টাকা ও বড় সাইজের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা করে। বিক্রেতারা জানালেন, আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের মজুত শেষ হয়ে যাওয়ায় বাজার এখন পুরোপুরি দেশি পেঁয়াজের ওপর নির্ভরশীল। এ কারণে চলতি সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম কেজিতে মানভেদে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে।

পেঁয়াজ। ছবি: সারাবাংলা
এছাড়া আদার দামও কেজিতে অন্তত ২০ টাকা বেড়েছে। চায়না আদা ২০০ টাকা, ভারতীয় আদা মানভেদে ২০০ থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে রসুনের দাম স্থিতিশীল আছে। দেশি রসুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা, চায়না রসুন ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজির বাজার। ছবি: সারাবাংলা
বাজারে শীতকালীন সবজির মধ্যে ফুলকপি প্রতিকেজিতে অন্তত ২০ থেকে ৪০ টাকা কমে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, বাঁধাকপি মানভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, মূলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শিম ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বেগুন ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, কচুরমুখী, ঝিঙা ও চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মিষ্টিকুমড়ো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, দেশি গাজর ১৪০ টাকা, চায়না গাজর ১২০ টাকা, দেশি শসা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৭০ টাকা, পটল ৭০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, কচুরমুখী ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টমেটোর দাম কেজিতে প্রায় ৪০ টাকা কমে ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচ ২৬০ টাকা ও ধনেপাতা প্রতিকেজি ১২০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পেঁয়াজ। ছবি: সারাবাংলা
এছাড়া আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, মানভেদে লাউ ৮০ থেকে ৯০ টাকা, চালকুমড়া ৭০ থেকে ৮০ টাকা, প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা, প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। শাকের মধ্যে কচুশাক ৪০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া শাক ৫০ টাকা, পুঁইশাক ৪০ টাকা ও লালশাক ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজির বাজার। ছবি: সারাবাংলা
ব্রয়লার মুরগির দাম বাজারে আবারও কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে এখন ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি ৬০০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কক মুরগি ২৬০ থেকে ২৯০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাজারে ফার্মের ডিম ডজন প্রতি ১৩৫ টাকা এবং হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ২২০ টাকায়।

ছবি: সারাবাংলা
বাজারে অন্যান্য মাংসের মধ্যে গত সপ্তাহের মতো গরু ও মহিষের মাংষ বিক্রি হয়েছে ৭৫০ থেকে ৯৫০ টাকায়। আর খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হয়েছে।

মাংসের বাজার। ছবি: সারাবাংলা
সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়েছে। বাজারে আসতে শুরু করেছে সামুদ্রিক মাছ। তবে এখনও সেভাবে মাছের দাম নিম্নমুখী হয়নি। বাজারে বড় সাইজের বাগদা প্রতি কেজি ৯০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৮৫০ ও ছোট চিংড়ি ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় রুই ৪৫০ থেকে ৫৮০ টাকা, মাঝারি ৪৬০ টাকা ও ছোট রুই ৩৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাতলা মাছ ৩৬০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ছোট কোরাল মাছ ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, সিলভার কার্প ২৫০, পাবদা ৪০০, রূপচাঁদা ৮৫০ ও টেংরা ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ছবি: সারাবাংলা
চালের দাম অপরিবর্তিত আছে। খুচরা দোকানে মিনিকেট চালের দাম কেজি প্রতি ৭৮ থেকে ৮৫ টাকা, আটাশ বালাম কেজি প্রতি ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, নাজিরশাইল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, স্বর্ণা মোটা চাল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, পাইজাম ৬২ থেকে ৬৫ টাকা, বাসমতী ৯৫ থেকে ১২০ টাকা, চিনিগুঁড়া প্যাকেট ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা ও খোলা পোলাও চাল মানভেদে ১১০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

চালের দোকান। ছবি: সারাবাংলা
মুদিপণ্যের মধ্যে বাজারে খোলা আটা বিক্রি হয়েছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায়। প্যাকেটজাত আটার মধ্যে সেনা, ডায়মন্ড, ফ্রেশ, আফতাবসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আটা বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। আর খোলা ময়দা ৫৫ টাকা, প্যাকেটজাত ময়দা ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাজারে কেজিপ্রতি নেপালি মসুর বিক্রি হয়েছে ১৬০ টাকায়। আর মোটা দানার মসুর ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

মুদি দোকান। ছবি: সারাবাংলা
বাজারে ও অলিগলির দোকানে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৭২ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৌটাজাত ঘি ১ হাজার ৪৫০ থেকে ১ হাজার ৫৫০ টাকা, খোলা ঘি ১ হাজার ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতিকেজি খোলা সাদা চিনি ১০৫ থেকে ১১০ টাকা, প্যাকেট চিনি ১১০ টাকা, লালচিনি ১১৫ টাকা, ছোট মুগডাল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, খেসারি ডাল ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১১০ টাকা, মাষকলাই ডাল ১৮০ টাকা, ডাবলি ৬০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

ছবি: সারাবাংলা
দুই কেজির প্যাকেট ময়দা ১৪০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ৯০ টাকা, কাজু বাদাম কেজিপ্রতি ১ হাজার ৭০০ টাকা, পেস্তা বাদাম ২ হাজার ৭০০ টাকা, কাঠ বাদাম ১ হাজার ২২০ টাকা, কিশমিশ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, দারুচিনি ৫২০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ৪০০ টাকা, কালো গোলমরিচ ১ হাজার ৩০০ টাকা, সাদা গোলমরিচ ১ হাজার ৬০০ টাকা, জিরা ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
 
                                     
                         
                         
                        