Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হেফাজত আমিরের কাছে গিয়ে ‘দোয়া নিলেন’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী


১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২০:৫৯

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: দোয়া নিতে হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফী’র কাছে গিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। সুন্দরভাবে ‘বিশ্ব ইজতেমা’ আয়োজনের জন্য হেফাজত আমিরের কাছে মন্ত্রী দোয়া চেয়েছেন। এসময় হেফাজত আমিরসহ উপস্থিতরা সম্মিলিতভাবে দোয়ায় অংশ নেন।

শুক্রবার (০১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসায় যান। এসময় তিনি ওই মাদ্রাসার পরিচালক হেফাজতের আমিরের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ সৌজন্যমূলক কথাবার্তা বলেন।

মাদ্‌রাসার প্রকাশনা ‘মাসিক মঈনুল ইসলাম’র নির্বাহী সম্পাদক সরওয়ার কামাল সারাবাংলাকে বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল নানুপুর ওবাইদিয়া মাদ্‌রাসার বার্ষিক মাহফিলে আমন্ত্রিত হয়ে এসেছিলেন। সেখানে তিনি জুমার নামাজ আদায় শেষে উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। দুপুরের খাওয়া শেষ করে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে মন্ত্রী আমাদের মাদ্‌রাসায় আসেন।’

সরওয়ার কামাল আরও জানান, মন্ত্রী যখন মাদ্‌রাসা ছেড়ে যাচ্ছিলেন তখন স্থানীয় সাংবাদিকরা সেখানে আসার কারণ জানতে চান। জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে একটা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে ইজতেমার আয়োজনটা যাতে সুন্দরভাবে নির্বিঘ্নে করা যায়, এ জন্য হেফাজতের আমিরের কাছে দোয়া চাইতে এসেছিলেন তিনি। হেফাজতের আমির দোয়া করেছেন এবং ইজতেমা সুন্দরভাবে সম্পন্ন হবে বলে আশা করছেন।’

তাবলীগ জামাতের দিল্লির আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বিভিন্ন সময়ে দেওয়া বক্তব্য নিয়ে দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে বাংলাদেশের আলেমরা। একপক্ষে আছেন সাদ কান্ধলভিপন্থী বাংলাদেশে তাবলিগের শুরা সদস্য সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম। আরেকপক্ষে মাওলানা সাদ বিরোধী কওমীপন্থী শুরা সদস্য মাওলানা জুবায়ের আহমেদ।

বিজ্ঞাপন

২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বিশ্ব ইজতেমার সময় বিরোধীদের বাধার মুখে মাওলানা সাদকে বাংলাদেশ ছাড়তে হয়েছিল। এরপর গত ১ ডিসেম্বর ইজতেমা মাঠে দুইপক্ষের সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এর ফলে টঙ্গীতে তুরাগ নদীর তীরে বিশ্বের মুসলমানদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় সম্মেলন ‘বিশ্ব ইজতেমা’ নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়।

এর মধ্যে এবার দু’পক্ষ জানুয়ারি মাসে আলাদাভাবে ইজতেমার তারিখ ঘোষণা করে। নির্বাচনের আগে সরকার দুই পক্ষের সঙ্গে সভা করে ইজতেমা স্থগিত করে। সরকারের পক্ষ থেকে তখন জানানো হয়েছিল, নির্বাচন শেষে দু’পক্ষের সঙ্গে বসে অভিন্ন ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করা হবে। গত ২৩ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দু’পক্ষ একসঙ্গে ইজতেমা আয়োজনে সম্মত হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে এই বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করা হচ্ছে।

সম্প্রতি নারীশিক্ষা নিয়ে ‘বিতর্কিত’ বক্তব্য দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়া হেফাজতের আমিরের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক এবং চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

গত ১১ জানুয়ারি নারীশিক্ষা নিয়ে হেফাজত আমিরের করা মন্তব্য রাষ্ট্রীয় নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে মন্তব্য করেছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

এছাড়া এই বক্তব্য রাষ্ট্রবিরোধী ও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে হেফাজত আমিরের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/একে

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হেফাজতের আমির

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর