বাস থেকে নামিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকে পেটাল ছাত্রলীগ
১২ মার্চ ২০১৯ ১৭:৪৩
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলার পর নগরীতে ফেরার পথে গাড়ি থেকে নামিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের নেতা গৌরচাঁদ ঠাকুরকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। এসময় ছাত্র ইউনিয়নের দুই নেত্রীকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। ছাত্র ইউনিয়ন এই হামলার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করেছে।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুর আড়াইটার দিকে চট্টগ্রাম-হাটহাজারী সড়কের ফতেয়াবাদ এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে।
আহত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক গৌরচাঁদ ঠাকুরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
চমেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িতে দায়িত্বরত উপ-সহকারি পরিদর্শক (এএসআই) আলাউদ্দিন তালুকদার সারাবাংলাকে বলেন, ‘গৌরচাঁদ ঠাকুরের মাথায় এবং শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। তাকে ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ডে নেওয়া হয়েছে।’
আহত চবি ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবা জাহান রুমি সারাবাংলাকে বলেন, ‘ক্যাম্পাসে প্রথম দফা আমাদের মিছিলে হামলা করে ছাত্রলীগ। নিরাপত্তার স্বার্থে সেখান থেকে গৌরচাঁদ, আমি এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আশরাফী নীতুকে পুলিশ তাদের গাড়িতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেইটে নিয়ে আসে। আমাদের চট্টগ্রাম শহরগামী তিন নম্বর বাসে তুলে দিয়ে বলা হয়- বাকি পথের নিরাপত্তার দায়িত্ব পুলিশের। বাসটি ফতেয়াবাদ পর্যন্ত পৌঁছানোর পর সেটি থামিয়ে আবারও হামলা করেছে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা।’
রুমি জানান, বাস ফতেয়াবাদে আসার পর ১০-১৫ জন যুবক লাঠিসোঁটা নিয়ে গাড়ির গতিরোধ করে। এসময় চালক গাড়ি থামাতে না চাইলে ভাঙচুরের হুমকি দেয় তারা। থামানোর পর প্রথমে গাড়িতে উঠে চালক এবং সহকারীকে মারধর করা হয়। এরপর গৌরচাঁদকে টেনে-হিঁচড়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে নিতে চাইলে রুমি ও নীতু বাধা দেয়। তাদের লাথি মেরে বাস থেকে ফেলে দেওয়া হয়। গৌরচাঁদকে টেনে নামিয়ে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক পেটানো হয়।
সেখান থেকে স্থানীয়রা প্রথমে গৌরচাঁদকে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে এবং পরবর্তীতে চমেকে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছেন রুমি।
চবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ধীষণ প্রদীপ চাকমা সারাবাংলাকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাই গৌরচাঁদের উপর হামলা করেছে। ক্যাম্পাসে যারা আমাদের বিক্ষোভ মিছিলে হামলা করেছে, তারাই আবার ফতেয়াবাদে এসে হামলা করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি করছি।’
এই বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপু সারাবাংলাকে বলেন, ‘ক্যাম্পাসে দুপুরে একটি ঘটনা ঘটেছিল। সেটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এরপর ফতেয়াবাদে হামলার ঘটনায়ও উনারা আমাদের জড়াচ্ছেন। এ বিষয়ে আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে- ছাত্রলীগ কোনোভাবেই এর সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়।’
সারাবাংলা/ আরডি/এমএইচ