Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আত্মহত্যার প্ররোচনার প্রতিবাদ: লাঠিপেটায় আহত ১০ পোশাককর্মী


১৩ মার্চ ২০১৯ ২১:১২

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: সহকর্মীকে আত্মহত্যার প্ররোচনার করার প্রতিবাদ জানাতে এসে পুলিশের লাঠিপেটায় আহত হয়েছেন একটি পোশাক কারখানার কমপক্ষে ১০ জন শ্রমিক। এঘটনার ছবি তুলতে গিয়ে পুলিশের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন একজন আলোকচিত্রী। পুলিশ ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে আক্রান্ত আলোকচিত্রী জুয়েল শীলের তোলা ছবি মুছে দিয়েছে।

বুধবার (১৩ মার্চ) বিকেলে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার বালুচড়া এলাকায় ফোর এইচ গ্রুপের মালিকানাধীন ফোর এইচ অ্যাপারেলসের সামনে এই ঘটনা ঘটেছে।

আহতরা হলেন—পাখি আকতার, রুবি আকতার, মনোয়ারা বেগম, রেজাউল করিম, সোনিয়া আকতার, সুলতানা আকতার, রুমা আকতার, মোহসেনা আকতার, নার্গিস আকতার ও মরিয়ম বেগম। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।

আহতদের মধ্যে পাখি আকতারের অবস্থা গুরুতর বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। তাকে চমেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।

নগর পুলিশের বায়েজিদ বোস্তামি জোনের সহকারী কমিশনার (বায়েজিদ বোস্তামী জোন) সোহেল রানা বলেন, গত শনিবার হাজেরা খাতুন নামে এক নারী শ্রমিককে কারখানা থেকে চুরি করার অভিযোগে প্রহরীরা আটক করে। রাতে বাসায় গিয়ে হাজেরা আত্মহত্যা করে। এটা নিয়ে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল। আসলে কী ঘটনা ঘটেছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

শনিবারের ঘটনায় বুধবার বিক্ষোভের পেছনে শ্রমিকদের কেউ ইন্ধন দিতে পারে বলে মনে করছে এই পুলিশ কর্মকর্তা।

পোশাক শ্রমিকদের অভিযোগ, চুরির অপবাদ দিয়ে হাজেরাকে (২৬) অপমান করা হয়। অপমান সহ্য করতে না পেরে হাজেরা বাসায় গিয়ে আত্মহননের পথ বেছে নেন।

পুলিশ ও পোশাক শ্রমিকরা জানিয়েছেন, হাজেরাকে আত্মহননে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে কারখানার কয়েক’শ শ্রমিক বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে প্রথমে কারখানা প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেন। এরপর তারা নগরীর বালুচরা এলাকায় চট্টগ্রাম-হাটহাজারী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।

অবরোধের কারণে চট্টগ্রাম-হাটহাজারী সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তা থেকে শ্রমিকদের সরাতে পুলিশ তাদের ওপর চড়াও হয়। এসময় নির্বিচারে লাঠিপেটা করা হয়। শ্রমিকরা লাঠিপেটা থেকে বাঁচতে ছুটোছুটি করতে গিয়েও রাস্তায় পড়ে আহত হন। এসময় শ্রমিকদের উদ্ধার করে কারখানার একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ঘটনাস্থলে বায়েজিদ বোস্তামি থানা পুলিশের ২০-২৫ জন সদস্য ছিলেন বলে জানা গেছে।

এদিকে বিক্ষোভ ও লাঠিপেটার ছবি তোলার সময় দৈনিক প্রথম আলোর আলোকচিত্রী জুয়েল শীলের ক্যামেরা কেড়ে নেয় পুলিশ। এসময় তার তোলা ছবি মুছে দেওয়ার পাশাপাশি তাকে লাঞ্ছিত করা হয় বলে জুয়েল সারাবাংলাকে জানিয়েছেন। বায়েজিদ বোস্তামি থানার উপ-সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) শরীফুল ইসলাম এসময় জুয়েলের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে জুয়েল শীলকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদ জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিমুদ্দীন শ্যামল ও সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস। এক বিবৃতিতে তারা দোষী পুলিশের শাস্তি দাবি করেছেন।

এছাড়া বিএফইউজে’র সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, যুগ্ম-মহাসচিব মহসীন কাজী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, চট্টগ্রাম ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দিদারুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।

সারাবাংলা/আরডি/এমএইচ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর