রুগ্ন পোশাক কারখানায় সুদিন ফেরাতে চান সাকিফ
২২ মে ২০১৯ ১৫:৫৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: আমেরিকার কাইজার ইউনিভার্সিটি থেকে ২০১৫ সালে বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ও অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর শেষ করে দেশে ফেরেন সাকিফ আহমেদ সালাম। দেশে ফিরেই বাবা তারকা পোশাক ব্যবসায়ী এম এ সালামের সঙ্গে ব্যবসায় যুক্ত হন। মাত্র তিনবছরে নিরলস পরিশ্রম ও মেধা দিয়ে বাবার গড়ে তোলা দু’টি স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানকে রুগ্নবস্থা থেকে লাভজনক করে তোলেন। পারিবারিক ব্যবসায় সাফল্য দেখিয়ে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী মহলে অল্পদিনেই আলোচনায় আসেন তরুণ সাকিফ।
বাবা এম এ সালাম তৈরি পোশাক ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ী সংগঠনে নেতৃত্ব দেয়া সালামপুত্র সাকিফও এবার এসেছেন ব্যবসায়ীদের নেতৃত্বদাতা আরেকটি সংগঠনে। দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়ী সংগঠন চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এই সংগঠনে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রেও রুগ্ন পোশাক শিল্প নিয়ে কাজ করার কথা জানিয়েছেন সাকিফ।
বর্তমানে হংকংয়ে অবস্থান করা সাকিফ আহমেদ সালাম টেলিফোনে সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের চট্টগ্রামে অনেক টেক্সটাইল কারখানা, গার্মেন্টস কারখানা কিন্তু বন্ধ হয়ে গেছে। গত পাঁচবছরে যত কারখানা বন্ধ হয়েছে, আমি সেগুলো নিয়ে কাজ করতে চাই। আমি বন্ধ কারখানাগুলো চালু করে সেগুলোকে লাভজনক হিসেবে গড়ে তুলতে ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়াবো। একইসঙ্গে আমাদের হাজার হাজার শ্রমিক যে বেকার হয়ে গেছে, তাদেরও আমি ফিরিয়ে আনতে চাই।’
পারিবারিক প্রতিষ্ঠান এশিয়ান গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাকিফ জানান, ২০০৪ সালে তার বাবা গড়ে তোলেন এশিয়ান পেপার মিল। কিন্তু ক্রমাগত লোকসানের কারণে পাঁচ বছর পর সেটি ভাড়ায় দিয়ে দেন তিনি। ২০১৫ সালে এসে সাকিফ প্রথম চ্যালেঞ্জ নেন সেই প্রতিষ্ঠানটিকে আবারও নিজেদের আয়ত্তে নেওয়ার। তিনি ভাড়া থেকে ফিরিয়ে আবারও পেপার মিলটি পরিচালনার দায়িত্ব নেন। ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো লাভের মুখ দেখে এশিয়ান পেপার মিল।
সী-টেক্স নামে তাদের আরেকটি টেক্সটাইল কারখানাও রুগ্ন অবস্থায় পড়েছিল। ২০১৫ সালে দেশে ফিরে সাকিফ সেই প্রতিষ্ঠানটিকেও লাভজনক করার দায়িত্ব নেন। সেটি মাত্র দুই বছরেই আলোর মুখ দেখে। বর্তমানে লাভজনক প্রতিষ্ঠানটিতে সাড়ে পাঁচ হাজার শ্রমিক কাজ করছে। আর এশিয়ান গ্রুপের সব প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে শ্রমিক-কর্মচারির সংখ্যা প্রায় ৩৭ হাজার।
সাকিফ আহমেদ সালাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসি। সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েই আমি চেম্বারে এসেছি। পিতৃতুল্য ব্যবসায়ী নেতারা আমার উপর আস্থা রেখেছেন। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। চেষ্টা করব, চট্টগ্রামের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনীতিকে কিভাবে আরও গতিশীল করা যায়। চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়নেও ভূমিকা রাখব।’
সাকিফ আহমেদ সালাম দুই বছর অর্থাৎ ২০২১ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম চেম্বারের দায়িত্ব পালন করবেন। ব্যবসার পাশাপাশি সাকিফ আহমেদ সালাম চট্টগ্রামের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত আছেন।
সারাবাংলা/আরডি