খুনীদের দম্ভ দেখে আত্মহত্যা করতে ইচ্ছে করে, আ.লীগ নেতার আর্তি
১৭ জুন ২০১৯ ২১:২৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে আবু জাফর অনিককে খুনের আসামিরা জামিনে মুক্ত হয়ে তার পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে ছবি তুলে সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিয়ে দম্ভ প্রকাশ করছে বলেও অভিযোগ তাদের। নিহতের বাবা ‘খুনীদের’ সঙ্গে দলের নেতাদের ছবি দেখলে তার ‘আত্মহত্যা করতে ইচ্ছা করে’ বলেও জানিয়েছেন।
সোমবার (১৭ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অনিকের বাবা মোহাম্মদ নাসির এসব অভিযোগ করেছেন। অনিক হত্যার এক বছর পূর্ণ হওয়ায় এই মামলার দ্রুত বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন তার পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।
২০১৮ সালের ১৭ জুন রাত সাড়ে ৯টার দিকে নগরীর চকবাজার থানার দামপাড়া ব্যাটারি গলির মুখে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিরের ছেলে আবু জাফর অনিক (২৬) খুন হন। তাদের বাসা নগরীর দামপাড়া পল্টন রোডে। পরদিন নাসির বাদী হয়ে ১২ জন আসামির নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
হত্যাকাণ্ডের পর মামলার প্রধান আসামি কথিত যুবলীগ নেতা মো. মহিনউদ্দিন তুষার ভারতের কোলকাতায় পালিয়ে গিয়েছিল। ২৪ জুন তাকে কোলকাতা পুলিশের সহায়তায় যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ফেরত এনে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া তুষারসহ মামলার ১২ আসামিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।
তবে এক বছরের মধ্যেই গ্রেফতার ১২ জনের সবাই জামিনে বেরিয়ে এসেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান মোহাম্মদ নাসির।
তিনি বলেন, ‘মামলার সব আসামি জামিনে এসে প্রকাশ্য ঘোরাঘুরি করছে। আমার ছোট ছেলে রনিক ও পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে। তুষার প্রকাশ্যে বলেছে- একবার বড়টাকে (অনিক) খেয়েছি, এবার ছোটটার (রনিক) পালা।’
‘আমি আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। আমি নিজে চকবাজার থানা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য। অথচ আমার সন্তানকে আমার সামনে নির্মমভাবে যারা হত্যা করেছে সেসব খুনীরা বর্তমানে সরকারি দলের নাম ব্যবহার করে এলাকায় ঘোরাঘুরি করছে। খুনীরা স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি দিয়ে দম্ভ প্রকাশ করছে। খুনীদের নিয়ে দলের কতিপয় নেতা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছে।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে নাসির বলেন, ‘খুনীদের এমন সাহস, অহঙ্কার ও ক্ষমতার দম্ভ দেখে আমার আত্মহত্যা করতে ইচ্ছে করে। সারাজীবন আওয়ামী লীগ করে আজ আমরা অসহায়। আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে বিচার দিলাম।’
হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচার শেষ করার দাবি জানিয়েছেন নাসির।
সংবাদ সম্মেলনে আবু জাফর অনিকের মা আক্তার বেগম, চাচা আবু বকর সুমন, চাচী শারমিন আক্তার ও রোকেয়া বেগম তিশা, আওয়ামী লীগ নেতা শরফুদ্দীন আহামেদ চৌধুরী রাজু, নগরীর বাগমনিরাম ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল বশর ও ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ছিলেন।
সারাবাংলা/আরডি/এমআই