ঢাকা: মোহাম্মদপুর থানার রায়েরবাজার এলাকায় প্রকাশ্যে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা, অপহরণ ও অস্ত্রসহ ভিডিও ভাইরাল করে আতঙ্ক সৃষ্টির অভিযোগে পিচ্চি মুন্নাসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-২।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-২ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. খালীদুল হক হাওলাদার।
তিনি বলেন, ‘মোহাম্মদপুর থানার রায়েরবাজার এলাকায় চাঞ্চল্যকর মো. ফজলে রাব্বি সুমন হত্যা মামলার প্রধান আসামি মুন্না ওরফে পিচ্চি মুন্নাকে (২১) রাজধানীর চকবাজার থানাধীন ইসলামবাগ এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভিকটিমের সঙ্গে মাদক বিক্রয় কেন্দ্র করে আসামির সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। এই বিরোধের জের ধরে ভিকটিম মো. ফজলে রাব্বি সুমন আসামি মুন্না ওরফে পিচ্চি মুন্নাকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়। পরে জামিন বের হয়ে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের সামনে পূর্বের বিভিন্ন বিরোধ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ভিকটিমকে ধারাল চাপাতি দিয়ে আসামি পিচ্চি মুন্না ও তার সহযোগীরা কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন ভিকটিমকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার ভিকটিমকে মৃত ঘোষণা করেন। ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে ২ জনের নাম উল্লেখসহ ও অজ্ঞাতনামা আরো ৫ থেকে ৬ জনকে আসামি করে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
র্যাব-২ এর অধিনায়ক বলেন, গত ১৬ জুলাই মোহাম্মদপুরের লাউতলা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স আল আমিনকে হত্যা করা হয়। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের একটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় গত কয়েকদিন আগে কিশোর গ্যাং লিডার ও মাদক ব্যবসায়ী মোশারফের ছোট ভাই মান্নানকে পুলিশে ধরিয়ে দিতে সাহায্য করেন আল-আমিন। পরবর্তীতে মোশারফ, রিপন ওরফে গিট্টু রিপনসহ কয়েকজন কিশোর গ্যাং সদস্যরা আল-আমিনকে নৃশংসভাবে ধারাল সামুরাই দিয়ে ভিকটিমের শরীরের কুপিয়ে ডান পায়ের হাটুর রগ কেটে দেয় এবং ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল কেটে ফেলে। ঐ সময় স্থানীয়রা ছুটে এলে আসামিরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় ভিকটিমকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক ভিকটিমকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের মা বাদী হয়ে ২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪ থেকে ৫ জনকে আসামি করে মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ভোলার চরফ্যাশন থানাধীন বেতুয়া লঞ্চঘাট হতে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে আসামিদ্বয়কে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, গত ১৯ জুলাই মাকছুদা খানম (৬০) নামের এক নারীকে সোহেল রানা (২০) ও তার দুই সহযোগী অপহরণ করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের দেবর গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। পরে র্যাব-২ গত ২১ জুলাই গুলশান-১ এলাকা থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এই ঘটনায় ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পরে ২৯ জুলাই সোহেল রানাকে নরসিংদীর মাধবদী শ্রীনগর এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। আসামির দেওয়া তথ্য মতে রাজধানীর ভাষাটেক এলাকা থেকে মো. সারোয়ার হোসেন (২১) ও পল্লবী থানা এলাকা হতে আশরাফুল ইসলাম (২৫) দেরকে গ্রেফতার করা হয়।
খালীদুল হক হাওলাদার বলেন, সম্প্রতি মোহাম্মদপুরে একটি যুবকের অস্ত্রসহ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়, যা এলাকায় আতংক ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। পরে র্যাব-২ গত ৪ জুলাই অস্ত্রসহ ভাইরাল হওয়া সেই যুবককে একটি সামুরাইসহ র্যাব-২ গ্রেপ্তার করে। অস্ত্রসহ ভাইরাল হওয়া যুবক মো. মোশারফ হোসেন ওরফে আলভির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গ্রেফতার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।