Friday 18 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অভিজিৎ হত্যার আগে দুই মাস ধরে তথ্য সংগ্রহ করে জঙ্গিরা


১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৪:৩৮ | আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৪:৪০
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: লেখক ও ব্লগার অভিজিত রায় আমেরিকা থেকে কবে দেশে আসবেন সেই তথ্য জঙ্গিরা বিভিন্ন প্রকাশনী ও বন্ধু-বান্ধবদের কাছ থেকে প্রায় দুই মাস আগেই সংগ্রহ করেছিল। এরপরই জঙ্গিদের ইনটেলিজেন্স গ্রুপ জানতে পারে বইমেলার সময় দেশে আসতে পারে অভিজিত।

অভিজিৎ হত্যায় মেজর জিয়াসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রস্তুত

সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।

তথ্য অনুযায়ী আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ইনটেলিজেন্স ও কিলার গ্রুপ এলিফ্যান্ট রোডে একটি বাসা ভাড়া করে মারকাস বা অপারেশন হাউস হিসেবে। সেখান থেকেই মূলত জঙ্গিরা অভিজিতকে রেকি করা শুরু করে।

বিজ্ঞাপন

এরপর ২২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় প্রথম জাগৃতি প্রকাশনীতে অভিজিতকে দেখেন। সেখান থেকে অভিজিত ধানমন্ডির একটি কফি হাউজে যান। পিছে পিছে জঙ্গিরাও যান। ওইদিনও তারা অভিজিতকে কিছু করেনি। এভাবে ২৩, ২৪, ২৫ ফেব্রুয়ারি অভিজিতকে রেকি করে জঙ্গিরা। এরপর ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে বইমেলা থেকে ফেরার পথে অভিজিতকে কুপিয়ে হত্যা করে জঙ্গিরা। ঘটনার সময় মুকুল রানা কিলার গ্রুপে ছিলেন। আশেপাশে ছিলেন মেজর জিয়া, সায়মন। সোহেল রানা ও আরাফাত কিলার ও ইনটেলিজেন্স দুই গ্রুপেই ছিলেন।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে অভিজিত হত্যায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট পলাতক মেজর জিয়াসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে, বলে জানান সিটিটিসির প্রধান মনিরুল ইসলাম। তারা হলেন মেজর জিয়া, আকরাম, ফারাবি, সোহেল রানা, সাইমন ও আরাফাত।

মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পর চার্জশিট আদালতে পাঠানো হবে। অভিজিৎ হত্যার পর মামলাটি ৩০২ ধারায় হলেও তদন্তে জঙ্গি গোষ্টীর সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তা সন্ত্রসবিরোধী মামলা হয়। হত্যাকাণ্ডে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট তদন্তে ১১ জনের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে। এর বাইরে অভিজিৎ হত্যায় র‌্যাবের গ্রেফতার হওয়া প্ররোচনাকারী হিসেবে শফিউর রহমান ফারাবীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

কাউন্টার টেরোজিম ইউনিট গ্রেফতার করেছে মোজাম্মেল হোসেন সায়মন, সোহেল রানা ও আরাফাতকে। তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। তাদের জবানবন্দি থেকে জানা গেছে মেজর জিয়ার নেতৃত্বে ১১ জন কিলিং মিশনে অংশ নেয়। কিলিং মিশন সফলে মূল ভূমিকা রাখে মুকুল রানা, যে ডিবি পুলিশের সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছে।

বাকি ছয় জনের নাম ঠিকানা পাওয়া না যাওয়ায় চার্জশিট থেকে নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এই মামলায় বিভিন্ন সময় র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া ৮ জনের মধ্যে ফারাবি বাদে বাকি ৭ জনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এক প্রশ্নোত্তরে মনিরুল ইসলাম বলেন, ফারাবিকে উস্কানিমুলক পোস্ট ও প্ররোচনার অভিযোগে এই মামলায় চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। ফারাবি ফেসবুকে লিখেছিলেন, একে (অভিজিত) কেউ কোপায় না কেন? দেশে আসলে তাকে কুপিয়ে টুকরো টুকরো করতে হবে।

বিশ্বাসের ভাইরাস ও অবিশ্বাসের দর্শন এই দুই বইয়ের জন্য অভিজিতকে হত্যার পরিকল্পনা করে জঙ্গিরা বলে তদন্তে জানা যায়।

মেজর জিয়া এখন কোথায় রয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মেজর জিয়া কোথায় আছেন তা জানা নেই। তবে গা ঢাকা দিয়ে আছে। কারণ তার কোনো অ্যাক্টিভিজম নেই। তার অ্যাক্টিভিজম থাকলে গোয়েন্দা জালে ধরা পড়ত। ২০১৬ সালে জুলহাস মান্নান ও তনয় হত্যার পর আর কোনো কিলিংয়ের ঘটনা ঘটেনি।

সারাবাংলা/ইউজে/এমআই

অভিজিৎ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর