Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তিতাস গ্যাসে ২২ খাতে দুর্নীতি, ১২ সুপারিশ দুদকের


১৭ এপ্রিল ২০১৯ ২০:৩৩

ঢাকা: তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (টিজিটিডিসিএল) এর ২২ খাতে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুর্নীতির উৎসগুলো চিহ্নিত করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে ১২ দফা সুপারিশও করেছে দুদক। এদিন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর কাছে তিতাসের দুর্নীতি বিষয়ক অনুসন্ধানী এবং পর্যবেক্ষণমূলক প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন দুদক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান।

বিজ্ঞাপন

দুদকের প্রতিবেদনে তিতাসের দুর্নীতির সম্ভাব্য খাতগুলো হলো— অবৈধ সংযোগ, নতুন সংযোগে অনীহা এবং অবৈধ সংযোগ বৈধ না করা, অবৈধ লাইন পুনঃসংযোগ, অবৈধ সংযোগ বন্ধে আইনগত পদক্ষেপ না নেওয়া, অদৃশ্য হস্তক্ষেপে অবৈধ সংযোগ, গ্যাস সংযোগে নীতিমালা অনুসরণ না করা, বাণিজ্যিক শ্রেণির গ্রাহককে শিল্পশ্রেণির গ্রাহক হিসেবে সংযোগ প্রদান, মিটার টেম্পারিং, অনুমোদনের অতিরিক্ত বয়লার ও জেনারেটরে গ্যাস সংযোগ, মিটার বাইপাস করে সংযোগ প্রদান সংক্রান্ত দুর্নীতি, এস্টিমেশন অপেক্ষা গ্যাস কম সরবরাহ করে সিস্টেম লস দেখানো, ইচ্ছাকৃতভাবে ইভিসি (ইলেকট্রনিক ভলিউম কারেক্টর) না বসানো ইত্যাদি। এসব দুর্নীতি প্রতিরোধে কমিশনের প্রতিবেদনে ১২ দফা সুপারিশ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

২২টি দুর্নীতির উৎস

(১) অবৈধ সংযোগ: তিতাস গ্যাস কোম্পানিতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি সংঘটিত হয় গ্যাসের অবৈধ সংযোগের মাধ্যমে। অবৈধভাবে বিভিন্ন কারখানায় লোড নেওয়া হয় এবং বৃদ্ধি করা হয়। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে- তিতাসে ৬ শতাংশ সিস্টেম লস হয় অবৈধ সংযোগের কারণে। ঢাকার আশেপাশের এলাকাগুলোতে বিশেষ করে সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুর, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জে বিপুল পরিমাণ অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগের তথ্য পাওয়া যায়। গৃহস্থালির চেয়ে শিল্পেই বেশি অবৈধ সংযোগ রয়েছে।

(২) নতুন সংযোগে অনীহা এবং অবৈধ সংযোগ বৈধ না করা: কেউ নতুন সংযোগের জন্য আবেদন করলে বা অবৈধ সংযোগ বৈধ করার জন্য আবেদন করলে সেটি সহজে অনুমোদন পায় না। কারণ বৈধ সংযোগের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার সুযোগ পায় না। ২০১৩-২০১৪ অর্থ বছরের অডিট রিপোর্টে দেখা যায়, একটি অবৈধ সংযোগ নিতে তিতাসের কর্মচারীকে অবৈধভাবে ৪৫ হাজার টাকা ঘুষ হিসেবে দিতে হতো। বর্তমানে সেটি আরও বেশি। তাই তারা অবৈধ সংযোগকে বৈধ করতে আগ্রহী নয়।

(৩) অবৈধ লাইন পুনঃসংযোগ: অনেক সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অবৈধ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দিলেও রাতের আঁধারে সেটি অর্থের বিনিময়ে পুনঃসংযোগ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

(৪) অবৈধ সংযোগ বন্ধে আইনগত পদক্ষেপ না নেওয়া: অবৈধ সংযোগ চিহ্নের পর গ্রাহকের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের আদেশে সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হলেও অবৈধ সংযোগ বন্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

(৫) অদৃশ্য হস্তক্ষেপে অবৈধ সংযোগ: অনেক সময় অদৃশ্য হস্তক্ষেপে অবৈধ সংযোগ দেওয়া হয় বা ওই হস্তক্ষেপের কারণে অবৈধ সংযোগ বন্ধ করা যায় না। উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সভাপতি ও সংশ্লিষ্ট এলাকার তিতাস গ্যাস কর্মকর্তার (ম্যানেজার) সমন্বয়ে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ কমিটি রয়েছে। জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক এর নেতৃত্বে কমিটি রয়েছে। কিন্তু তাদের কাজে অনেক সময় অদৃশ্য প্রভাব কাজ করে।

(৬) গ্যাস সংযোগে নির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণ না করা: শিল্প-কারখানায় গ্যাস সংযোগ প্রদানে জ্বালানি উপদেষ্টাকে সভাপতি এবং পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানকে সদস্য সচিব করে একটি কমিটি রয়েছে। কমিটির সিদ্ধান্তেই গ্যাস সংযোগ প্রদান করা হয়। এক্ষেত্রে স্বচ্ছতার স্বার্থে শিল্প কারখানায় গ্যাস সংযোগের ক্ষেত্রে কমিটির পাশাপাশি একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা প্রয়োজন।

(৭) একই কর্মকর্তার একাধিক দায়িত্ব পালন: একই কর্মকর্তা একাধিক দায়িত্ব পালন করায় কোন দায়িত্বই সঠিকভাবে পালন না করে দুর্নীতির আশ্রয় নেয়।

(৮) বাণিজ্যিক শ্রেণির গ্রাহককে শিল্প শ্রেণির গ্রাহক হিসেবে সংযোগ প্রদান: শিল্প শ্রেণির গ্রাহকদের কম মূল্যে গ্যাস সংযোগ দেয়ার নিয়ম থাকায় অনেক সময় অর্থের বিনিময়ে বাণিজ্যিক শ্রেণির গ্রাহক যেমন: হোটেল, রেস্টুরেন্ট, বেকারী,সুপারশপ ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানকে শিল্প শ্রেণির গ্রাহক হিসেবে সংযোগ দেয়া হয়।

(৯) মিটার টেম্পারিং: অবৈধ সংযোগের পাশাপাশি মিটার টেম্পারিং এর মাধ্যমেও দুর্নীতি হয়ে থাকে। কিছু অসাধু কর্মকর্তা ঘুষের বিনিময়ে মিটার টেম্পারিং করে গ্রাহকের প্রকৃত বিল গোপন করে থাকে।

(১০) অনুমোদনের অতিরিক্ত বয়লার ও জেনারেটরে গ্যাস সংযোগ: ঢাকার আশেপাশের এলাকাগুলোতে তিতাসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের যোগসাজশে নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনুমোদনের অতিরিক্ত বয়লার ও জেনারেটর সংযোগ দেওয়া হয়।

(১১) বৈধ সংযোগ দিতে হয়রানি: যে সব শিল্প প্রতিষ্ঠান বা আবাসিক গ্রাহক বৈধভাবে সংযোগ নিতে চায় বা মিটারের নাম পরিবর্তন করতে চায় তাদের কাছ থেকেও অতিরিক্ত টাকা নেয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্যথায় তাদেরকে খুব হয়রানি করা হয়।

(১২) মিটার বাইপাস করে সংযোগ প্রদান সংক্রান্ত দুর্নীতি: ঢাকা এবং এর আশেপাশের অনেক কোম্পানির মিটার বাইপাস করে অবৈধ সংযোগ আছে বলে জানা যায়। তিতাসের কর্মীরা ঘুষের বিনিময়ে এ রূপ বাইপাসের মাধ্যমে গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হয় মর্মে অভিযোগ আসে।

(১৩) ইচ্ছাকৃতভাবে গৃহস্থালিতে গ্যাসের চাপ কমিয়ে দেওয়া: ইচ্ছাকৃতভাবে তিতাসের কর্মচারীরা গৃহস্থালিতে গ্যাসের চাপ কমিয়ে দিয়ে সে সময় বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে বাইপাস করে থাকে।

(১৪) ইচ্ছাকৃতভাবে ইভিসি (ইলেকট্রনিক ভলিউম কারেক্টর) না বসানো: তিতাসসহ অন্যান্য কোম্পানি অনেক সময় ইচ্ছাকৃতভাবে গ্রাহক পর্যায়ে অনুমোদনের কম/বেশি গ্যাস সাপ্লাই দেয় কিন্তু সাপ্লাই ভেরিয়েশন পরিমাপ করার জন্য এক ধরনের মিটার রয়েছে। কিন্তু তিতাসের কর্মচারীরা ইচ্ছাকৃতভাবে ইভিসি মিটার বসায় না বা ইচ্ছা করেই গরমিল করা হয়।

(১৫) দীর্ঘদিন ধরে শিল্প এলাকায় পোস্টিং: কিছু কর্মকর্তা কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে অর্থের বিনিময়ে শিল্প এলাকায় পোস্টিং নিয়ে আছেন। যে কারণে এরা খুব সহজেই শিল্প এলাকায় সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন।

(১৬) এস্টিমেশন অপেক্ষা গ্যাস কম সরবরাহ করেও সিস্টেম লস দেখানো: ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের অডিট রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে আবাসিক খাতে এস্টিমেটেড প্রবাহ ছিল ১০,৩১৭,৬৯,৩৫,৫৬৮ সিএফটি। কিন্তু ব্যবহার হয়েছে ৮,৮৩৯,৭৪,৯৬,৮৯৯ সিএফটি। দেখা যায়, এস্টিমেশন অপেক্ষা ১,৪৭৭,৯৪,৩৮,৬৬৯ সিএফটি বা ৪১৮৫০৬৭০৩ ঘনমিটার কম ব্যবহার হয়েছে। যার মূল্য ২৯২,৯৫,৪৬,৯২১ টাকা। অথচ এস্টিমেশন থেকে গ্যাস কম ব্যবহার হওয়া সত্ত্বেও সিস্টেম লস দেখানো হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা যায়,বিভিন্ন শিল্পকারখানায় অবৈধ সংযোগ বা বাইপাস করে তা গৃহস্থালীতে সিস্টেম লস হিসেবে দেখানো হয়।

(১৭) অবৈধ চুলাপ্রতি বৈধ চুলার সমান টাকা আদায় করে আত্মসাৎ: ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে জিনজিরা, ফতুল্লা, সোনারগাঁও, নরসিংদী ও গাজীপুর এই ৫ এলাকায় ১ লাখ ১৮ হাজার ৪৫৫টি অবৈধ চুলা/সংযোগ চিহ্নিত করা হয়। প্রতিমাসে প্রতি চুলা বাবদ ৬৫০ টাকা নেওয়া হয়।

(১৮) গ্যাস বিক্রি বেশি দেখিয়ে আত্মসাৎ: কোম্পানির ভিজিল্যান্স ডিভিশন এর রিপোর্ট অনুযায়ী— ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত ১৬৫৬২.৭৩৮ এমএমসিএম গ্যাস বিক্রয় হয়েছে অথচ কোম্পানির ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরের বার্ষিক রিপোর্ট অনুযায়ী উক্ত সময়ে গ্যাস বিক্রির পরিমাণ ১৬৫৮৩.৩৩ এমএমসিএম। উভয়ের মধ্যে পার্থক্য ২০.৫৯২ এমএমসিএম বা ২,০৫,৯২,০০০ ঘনমিটার গ্যাস। যার মূল্য ১৪ কোটি ৪১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা।

(১৯) ভুয়া সংকেত দিয়ে অবৈধ গ্রাহকের কাছে বিল আদায়: তিতাসের কিছু অসাধু কর্মচারী সিন্ডিকেট করে বিল ভাউচারে ভুয়া সংকেত দিয়ে অবৈধ গ্রাহকের কাছে বিল আদায় করে। ভুয়া সংকেত হওয়ায় সেগুলো তিতাসের ব্যাংক হিসাবে পোস্টিং এবং লেজারে এন্ট্রি দেওয়া হয় না। যেমন ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরের অডিটে ১৬ কোটি ৭১ লাখ ৩৭ হাজার ২২৬ টাকা শুধু আবাসিক গ্রাহকের নন পোস্টেড ভাউচার এর তথ্য দেওয়া হয়েছে। যার গ্রাহক সংকেতের কোনো মিল ছিল না। ফলে এগুলো অবৈধ গ্রাহকের কি না সে ব্যাপারে সন্দেহ থেকে যায়।

(২০) তিতাসের মাদার অ্যাকাউন্টে টাকা স্থানান্তর না হওয়া: তিতাস গ্যাস টিএন্ডডি কোম্পানি এর বিপণন বিভাগ থেকে নিয়ম অনুযায়ী এক মাসের জমাকৃত অর্থ স্থানীয় ব্যাংকের মাধ্যমে পরের মাসের প্রথম সপ্তাহে কোম্পানির মাদার অ্যাকাউন্টে পাঠাতে হয়। স্থানীয় ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা থাকলে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ সুদ পাওয়া যায়। মাদার অ্যাকাউন্টে জমা থাকলে ৮ শতাংশ সুদ পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে ব্যাংক শাখাসমূহ ইচ্ছাকৃতভাবে টাকা মাদার অ্যাকাউন্টে পাঠাতে দেরি করে। এভাবে কোম্পানির কোটি কোটি টাকা লোকসান হয়।

(২১) বকেয়া বিল আদায় না করা: ২০১০-২০১১ অর্থবছর থেকে ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরের সরকারি অডিট পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, বিভিন্ন শিল্প কারখানা যেমন-এশিয়ান টেক্সটাইল মিল্স, পিংক ফুড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ, লিথুন ফেব্রিক্স, কুশিয়ারা কম্পোজিট, বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন সিএনজি ফিলিং স্টেশনের গ্রাহক, আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের কাছে তিতাস গ্যাস টিএন্ডডি কোং লিমিটেডের শত কোটি টাকার বেশি বকেয়া পাওনা আছে। কারখানার মালিক কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করে অথবা অদৃশ্য প্রভাব খাটিয়ে গ্যাস সংযোগ অব্যাহত রেখেছে। অথচ গ্যাস নীতিমালা অনুযায়ী কোম্পানি যথাসময়ে ব্যবস্থা নিলে তারা মামলা করার সুযোগ পেত না।

(২২) অন্যান্য: উল্লিখিত সমস্যা/দুর্নীতি ছাড়াও দরপত্রে অনিয়ম করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ, মালামাল ক্রয়ে দুর্নীতি, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কর্তৃক সার্বক্ষণিক কোম্পানির গাড়ি ব্যবহার, জরিমানা, সংশোধিত বিল ও জামানত আদায়ে গ্যাস বিপণন নীতিমালা অনুসরণ না করা ইত্যাদি অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।

দুর্নীতি প্রতিরোধে সুপারিশমালা

তিতাসের দুর্নীতি প্রতিরোধে ১২ দফা সুপারিশ দিয়েছে দুদক। সুপারিশের মধ্যে রয়েছে— ডিস্ট্রিবিউশন ও গ্রাহক উভয়ক্ষেত্রে প্রিপেইড মিটার চালু করা, আকস্মিক পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা, অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর ফলোআপে রাখা, শিল্প এলাকায় দীর্ঘদিন পোস্টিং না রাখা, জনবলের দক্ষতা বাড়ানো, অনিয়মের সাথে জড়িত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তি, অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ, অডিট আপত্তিগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা, সিস্টেম লসের সর্বোচ্চ হার নির্ধারণ, নিজস্ব সার্ভিলেন্স এবং মোবাইল কোর্ট, নিজস্ব প্রসিকিউশন বিভাগ, বকেয়া পাওনা আদায়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া প্রভৃতি।

যা বললেন দুদক কমিশনার

দুদক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, ‘কমিশনের প্রতিবেদন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হলে দুর্নীতি প্রতিরোধ সহজ হবে। এভাবে দুর্নীতি সংঘটনের আগেই তা প্রতিরোধ করা গেলে, মামলা-মোকদ্দমার করার প্রয়োজন পড়বে না। সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতার ঘোষণা দিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে এ প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি বন্ধে ২৫টি প্রাতিষ্ঠানিক টিম গঠন করা হয়। এসব টিম অনুসন্ধান চালিয়ে দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করে। তিতাস গ্যাস সংক্রান্ত প্রাতিষ্ঠানিক টিম তাদের অনুসন্ধানকালে তিতাস গ্যাস কোম্পানির অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বর্তমানে কর্মরত কর্মকর্তা এবং যারা সম্যক ধারণা রাখে তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে।’

এদিকে, দুদকের কার্যক্রমের প্রশংসা করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, ‘দুদকের এ প্রতিবেদন গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি ঘোষণা করেছেন। দুদক যে সুপারিশ দিয়েছে সেগুলো বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সারাবাংলা/এসজে/এইচএ/একে

তিতাস দুদক দুর্নীতি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর