আইডিয়াল স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে সহকর্মীকে উত্যক্তের অভিযোগ
১৩ জুলাই ২০১৯ ১৫:০৩
ঢাকা: আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের (মুগদা শাখার) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক আবদুস সালামের বিরুদ্ধে তার এক সহকর্মীকে উত্যক্ত করার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ওই সহকর্মী বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম বরাবর দুইদিন আগে (১১ জুলাই) চিঠি দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষিকা সারাবাংলাকে বলেন, ‘মাস্টার্স পাস করার পর ছয়মাস আগে আমি চাকরিতে ঢুকি। এই স্কুলের আটশ শিক্ষকের মধ্যে আমিই সবচেয়ে কনিষ্ঠ। আমি আমার বড় বোনকে নিয়ে মুগদার এক বাসায় ভাড়া থাকি। গত চার মাস ধরে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক সালাম মিয়া আমাকে উত্ত্যক্ত করে আসছেন।’
ওই শিক্ষিকা বলেন, ‘সালাম মিয়া আমার বাবার বয়সী। গত ২২ জুন আমার বাবা মারা গেছেন। বর্তমানে আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় আছি। তারপরও সালাম মিয়া আমাকে হয়রানি করে যাচ্ছেন। তার প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় তিনি মানুষের কাছে আমার সম্পর্কে আজেবাজে কথা বলে বেড়াচ্ছেন।’
‘আমি কখনও চাই না বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষ সমাজে আরও বাড়ুক। উনি একজন বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষ। তা না হলে আমার থেকে ২৫/৩০ বছর বড় হয়ে, বাবার বয়সী একজন মানুষ এভাবে আমাকে বিরক্ত করতে পারতেন না’ বলেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষিকা।
সূত্র জানায়, গত ১১ জুলাই আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মুগদা (দিবা) শাখার ইংরেজি শিক্ষক সালাম মিয়ার বিরুদ্ধে অধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন হয়রানির শিকার ওই শিক্ষিকা। তবে এ বিষয়ে এখনও প্রতিকার মেলেনি।
এ বিষয়ে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত ১১ জুলাই চিঠি দিয়ে থাকলে আমি এখনও পাইনি। কারণ ১১ জুলাই সকালে আমি জরুরি কাজে কলেজ থেকে বের হয়ছি। মাঝে দুইদিন শুক্র, শনিবার স্কুল বন্ধ ছিল। ফলে এ মুর্হূতে আমি কিছু বলতে পারছি না। চিঠি পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে অধ্যক্ষের কাছে লিখিত বক্তব্যে ওই শিক্ষকা বলেন, আমি আপনার প্রতিষ্ঠানের মুগদা দিবা শাখার একজন সহকারী শিক্ষিকা। গত ৩ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠানের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক (সালাম মিয়া স্যার) নিজ থেকে আমার সঙ্গে পরিচিত হন। আমার বাড়ি নরসিংদী জেনে নিজ এলাকার মানুষ বলে আন্তরিকতা দেখান। পরবর্তীতে আমি আমাদের প্রতিষ্ঠানের অংকের শিক্ষক শাহজাহান স্যারের বাসা ভাড়া নেই। বাসাটা ওনার (সালাম মিয়া স্যার) পাশের ফ্ল্যাট। আমি আমার বড় বোনের পরিবারের সঙ্গে মুগদার এ বাসায় উঠি। বাসায় ওঠার পর থেকেই ফোনে এবং সামনাসামনি উনি (সালাম মিয়া স্যার) প্রথমে আমাকে এবং পরবর্তী সময়েও আমার বোনকেও নানানভাবে উত্যক্ত করেছে। যেমন ফোন দিয়ে আমাদের মিস করে, দেখতে ইচ্ছে করে ইত্যাদি আপত্তিকর কথা বলেছেন। আমাকে দেখলেই নানারকম মন্তব্য করেন যেমন সুন্দর লাগছে, শাড়িতে ভালো লাগে, মাথায় কাপড় দিলে বউয়ের মতো দেখায় এ সব কথাবার্তা বলেন।
চিঠিতে বলা হয়, আমি প্রতিবাদ করলে আমার প্রতি প্রচণ্ড ক্ষেপে যান। ওনার কথাবার্তা ও আচরণে খুবই অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করায় আমি এখন উনাকে এড়িয়ে চলি। ফোন রিসিভ করি না, দেখলেও কথা বলতে চাই না। আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বাবা মারা যাবার ৪ দিনের দিন আমার বাড়িওয়ালাকে (শাহজাহান স্যার) বলেছে আমি লিভ টুগেদার করি। আমাকে নিয়ে এমন মন্তব্য করায় আমি মর্মাহত বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
এ ব্যাপারে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক সালাম মিয়া সারবাংলাকে বলেন, ‘এটা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ।’
ওই শিক্ষক বলেন, ‘আমরা একই বিল্ডিংয়ে থাকি। অন্য কারও দ্বারা প্ররোচিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে এ সব অভিযোগ করছে কি না জানি না। তার চলাফেরা আপত্তিকর, তার বাসায় বাইরের লোকজন আসে। আমি কেন এটা দেখলাম এবং নানা লোকজন আসার বিষয়ে অপছন্দ করি এটিই হলো অভিযোগের মূল কারণ।’
সালাম মিয়া বলেন, ‘গত ৩০ বছর ধরে আমি শিক্ষকতা করছি। আমার সুনাম ক্ষুণ্ন করতেই মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।’
সারাবাংলা/জিএস/একে