Thursday 31 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ফ্যাসিবাদের পক্ষের’ কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষকের বহিষ্কার চান শিক্ষার্থীরা

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
৩০ জুলাই ২০২৫ ১৩:৪৬ | আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৫ ১৩:৫১

‘ফ্যাসিবাদের পক্ষের’ বক্তব্যের প্রতিবাদে শিক্ষক নীলিমা আক্তারের অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে ইংরেজি বিভাগের একদল শিক্ষার্থী। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নীলিমা আক্তারের আপত্তিজনক কর্মকাণ্ড ও ‘ফ্যাসিবাদের পক্ষের’ বক্তব্যের প্রতিবাদে তার অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে ইংরেজি বিভাগের একদল শিক্ষার্থী। আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষকদের প্রতিনিধি দল উপাচার্যের সঙ্গে মিটিং করে তদন্ত কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেন এবং ড. নীলিমা আক্তারকে বিভাগের সব কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেন।

বুধবার (৩০ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের একদল শিক্ষার্থী সারাবাংলা ডটনেটের এ প্রতিবেদককে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বিজ্ঞাপন

এর আগে এক সপ্তাহ যাবৎ এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়কগুলোতে বিক্ষোভ মিছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান, শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনাসহ বিভিন্ন প্রতিবাদ করেন তারা। এসময় দু’টি দাবি জানান তারা।

তাদের দাবিগুলো হলো- ড. নীলিমা আক্তারকে অবিলম্বে ও স্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা এবং তার বিতর্কিত বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডের জন্য একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

বিক্ষোভকারীরা বলেন, ড. নীলিমা আক্তার, যিনি আওয়ামীপন্থী নীল দলের সাবেক সিন্ডিকেট সদস্য, গত জুলাই মাস থেকে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে আসছেন। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, তিনি প্রতিনিয়ত শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানকে ‘মব’ বা উচ্ছৃঙ্খল জনতা বলে আখ্যায়িত করেন। এই ধরনের বক্তব্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে গভীর ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থী। গণঅভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীরা তার ক্লাস বর্জন করলেও, তার বিরুদ্ধে তখন কোনো শান্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, বরং কতিপয় শিক্ষক তার প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন। তবে এখন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ বিষয়টি গুরুত্বের সহিত নিয়েছেন ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোকে আপাতত আমরা সাধুবাদ জানাই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের স্নাতকের শিক্ষার্থী ফেরদৌস নাঈম সারাবাংলাকে বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আন্দোলনে ইংরেজি বিভাগের অধিকাংশ শিক্ষক আমাদের আন্দোলনে সরাসরি জোরালো সমর্থন করেন, এবং ব্যক্তিগত পর্যায়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের খোঁজ নেন। আমরা আশা রাখি, গণহত্যা ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষকগণ অনড় অবস্থান বজায় রাখবেন।’

বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী শামীম আহমেদ বলেন, ‘‘ড. নীলিমা আক্তারের জুলাই বিরোধিতার বিচারের দাবিতে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা ৩০ জুলাই ডিপার্টমেন্টের আয়োজনে অনুষ্ঠিতব্য July Commemoration Event বর্জন করে। কিন্তু আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকগণ এবং ডিপার্টমেন্ট আমাদের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করায় এবং ড. নীলিমা আক্তারকে সব অ‍্যাকাডেমিক এবং প্রশাসনিক কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়ায়, আমরা সব বর্ষের শিক্ষার্থীরা আমাদের ‘বর্জন’ থেকে সরে এসে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের অভিপ্রায় ও অঙ্গীকার প্রকাশ করছি। আমাদের সকল শিক্ষক এবং চেয়ারপার্সন ম‍্যামের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।’’

ইংরেজি বিভাগের স্নাতকের আরেক শিক্ষার্থী ফাহিম শাহরিয়ার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সেই উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। বিভাগের সম্মানিত শিক্ষকরাও এ ব্যাপারে যে আন্তরিকতা দেখিয়েছেন তাতেও আমরা বেশ খুশি হয়েছি। তবে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাকে স্থায়ী বহিষ্কার না করা হলে আমরা পুনরায় কঠোর কর্মসূচিতে যাবো।’

প্রসঙ্গত, গত ২২ জুলাই ড. নীলিমা আক্তার তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম স্ট্যাটাসে গতবছর জুলাই থেকে আজ অবদি সকল লাশের দায় ‘আন্দোলনকারীদের’ ওপর চাপিয়েছেন যা বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হলে দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে। এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন ও উসকানিমূলক মন্তব্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মনে অসন্তোষ সৃষ্টি করে।

সারাবাংলা/কেকে/এমপি

ইংরেজি বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সহযোগী অধ্যাপক ড. নীলিমা আক্তার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর