ঢাকা: বৃষ্টির মাঝেই কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ইমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
শনিবার (১১ অক্টোবর) সকাল ১১টায় জাতীয় কবিতা পরিষদের উদ্যোগে এ আয়োজন করা হয়। সকাল ১০টার দিকে তার মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আনা হয়। বেলা ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ফটোসাংবাদিক শহিদুল আলমসহ একাধিক অধ্যাপক, লেখক, সাংবাদিক, কবি ও সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের সাবেক শিক্ষার্থীরা।
এছাড়াও প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর, বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস, আর্কাইভ ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগ, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, কালী ও কলম প্রকাশনী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ, লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন, ব্র্যাক ফ্যামিলি, এশিয়াটিক সোসাইটি, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল, ছায়ানট, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউট, বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “এই মানুষটির মধ্যে কোনো অহংকার ছিল না। আমরা তাকে কখনো বিষণ্ণ দেখিনি। হাঁটা ছিল তার প্রিয় কাজ। তার সাহিত্যকর্ম আমাদের পথ দেখাবে। তার প্রস্থান আমাদের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।”
তিনি আরও বলেন, “শিক্ষার্থীরা তাকে গভীর ভালোবাসত। সাহিত্যের সঙ্গে তার সংযোগ ছিল অনন্য। এজন্যই তিনি একুশে পদকসহ বহু সম্মাননা পেয়েছেন—যা তার প্রাপ্য ছিল।”
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, “আমি ফুলার রোডে স্যারের পাশের বাসায় থাকতাম। উনি দেখলেই এমন এক মনভোলানো হাসি দিতেন! মনে হতো, যার আত্মা এতটা পরিষ্কার না, যার হৃদয় এত বিশুদ্ধ না—সে এমনভাবে হাসতে পারে না। সেই হাসিটাই ছিল তার সিগনেচার। স্যার ছিলেন অসম্ভব জ্ঞানী ও জনপ্রিয় শিক্ষক।”
তিনি আরও বলেন, “উনাকে সবাই ভালোবাসত—বিভিন্ন মতের মানুষও। তিনি যা বলতেন, নিজের বিবেক ও হৃদয়ের বিশ্বাস থেকে বলতেন। তিনি ছিলেন বড় মাপের লেখক ও শিল্পসমালোচক। তার মতো একজন মানুষ আরও অনেক বছর বেঁচে থাকলে সমাজ উপকৃত হতো। তার মৃত্যুতে আমরা এক বিশাল ক্ষতির মুখে পড়েছি।”