Tuesday 23 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভাসানী ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেননি: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৬:১২ | আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৬:১৬

ঢাবি: মওলানা ভাসানী ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেননি। তিনি মন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূত হতে চাননি, বরং মেহনতি মানুষের সঙ্গে থেকেছেন এবং তাদের মুক্তির সংগ্রামে আজীবন যুক্ত ছিলেন বলে উল্লেখ করেছেন ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘বি-উপনিবেশায়ন ও মওলানা ভাসানী’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

ঢাবির সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেসের (কারাস) আয়োজনে দুই দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

সম্মেলনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার, অধ্যাপক আহমেদ কামাল, মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ইউনিভার্সিটি ব্রুনাই দারুসসালামের সহযোগী অধ্যাপক ড. ইফতেখার ইকবাল, স্বাগত বক্তব্য দেন কারাসের পরিচালক অধ্যাপক ড. আশফাক হোসেন।

বক্তব্য প্রদানকালে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম মওলানা ভাসানীকে সাম্রাজ্য বিরোধী উল্লেখ করে বলেন, আমরা বর্তমানে যে উপনিবেশীকরণের আলোচনা করছি সেখানে ভাসানীর বিশ্বাস প্রথম দিক থেকেই ছিল। এই উপমহাদেশে বিখ্যাত রাজনৈতিকরা জন্মগ্রহণ করলেও মওলানা ভাসানী ওই রকমের খ্যাতি পাননি। কিন্তু মওলানা তাদের থেকে স্বতন্ত্র ও অসাধারণ ছিলেন। ভাসানীর মতো মেহনতি মানুষের সমর্থনে রাজনীতি করার দ্বিতীয় মানুষ এই উপমহাদেশে আমরা দেখিনি।

মওলানা ভাসানী ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে বিশ্বাস করতেন না বরং সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে ভাসানী কংগ্রেসে থাকলেও পুঁজিপতির প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় তিনি কংগ্রেস ত্যাগ করেন। পরে মুসলিম লীগে যোগ দেন এই প্রত্যাশায় যে দলটি কৃষক ও গরিব মানুষের কথা বলবে। তবে তার কল্পিত পাকিস্তান ছিল কায়েদে আজমের পুঁজিবাদী পাকিস্তানের বিপরীতে একটি গণতান্ত্রিক ও মুক্তির পাকিস্তান— যেখানে একাধিক জাতিসত্তার সমান অধিকার ও সুযোগ নিশ্চিত হবে এবং ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ঘটবে। এই দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন দেখা যায় তার ২১ দফা, ১৪ দফা ও ১১ দফা কর্মসূচিতে, যেখানে নদী, পানি ও বন্যা সমস্যার মতো সাধারণ মানুষের জীবনঘনিষ্ঠ বিষয় গুরুত্ব পায়।

তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানকে তিনি বিভিন্ন জাতিসত্তার কারাগার হিসেবে দেখতেন এবং শুধু বাঙালির নয়— পাঞ্জাবি, সিন্ধি, বেলুচ ও পাঠানসহ সব জাতিসত্তার মুক্তির কথা বলেছেন। এই কারণেই তাকে একটি নির্দিষ্ট পরিচয়ে নয়, বরং একজন সমাজ বিপ্লবী হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়, যিনি জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস রেখে আজীবন মুক্তির স্বপ্ন লালন করেছেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, মওলানা ভাসানী কেবল একজন রাজনৈতিক নেতা ছিলেন না। তিনি ছিলেন একটি নৈতিক কন্ঠস্বর ও বিবেক। তিনি বিশ্বাস করতেন ধর্ম মানুষের নৈতিক শক্তির উৎস হতে পারে। কিন্তু, রাষ্ট্র পরিচালন করা নাগরিক অধিকার এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সাম্য, ন্যায়বিচার এবং মানবিক মর্যাদায় হতে হবে মূল ব্যক্তি। এই দৃষ্টিভঙ্গি তাকে তার সময় অন্যান্য নেতার চেয়ে আলাদা করে তুলেছিল এবং আজও বর্তমান বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষার জায়গা হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে দুপুর ১২টায় প্রতিকৃতি আলোকচিত্রী ও লেখক নাসির আলী মামুনের একটি বিশেষ আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এবং এরপরে মওলানা ভাসানীর উপরে পেপার প্রেজেন্টেশন অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞাপন

আমাদের সীমান্ত পরিচিতি
২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৬:০০

নরসিংদীতে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৫:৫৮

আরো

সম্পর্কিত খবর