শিক্ষা আলোকবর্তিকা, যা জীবনের পথে ছড়ায় আলো। সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (এসআইইউ) ইংরেজি বিভাগ যেন সেই আলোর এক প্রাণময় উৎস। এই বিভাগ থেকে গ্র্যাজুয়েটরা নিজেদের মেধা ও দক্ষতা দিয়ে দেশ-বিদেশে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলেছেন।
বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলাম রাজীব রাশিয়ার মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছেন। তার এই উচ্চ শিক্ষার যাত্রায় অনুপ্রেরণা জাগায় বর্তমান শিক্ষার্থীদের। একই সঙ্গে আতিকুর রহমান যুক্তরাজ্যের পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যাপ্লাইড লিংগুইস্টিকস অ্যান্ড টিসলে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী নওরীন আক্তার কলি যুক্তরাষ্ট্রের মনাটোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর করেছেন।
দেশেও গৌরব ছড়াচ্ছেন বিভাগের গ্র্যাজুয়েটরা। ইংরেজি গ্র্যাজুয়েট রামাকান্ত দাস এখন দক্ষিণ সুরমা থানায় উপপরিদর্শক হিসেবে কর্মরত, সালমান রহমান তারেক কাজ করছেন সিটি ব্যাংকের ছাতক শাখায়। আতিক, নওরীন ও তারেকের মতো আরও বহু সাবেক শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নিজেদের দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে বিভাগের নাম উজ্জ্বল করেছেন।

ইংরেজি বিভাগে একাডেমিক কর্মশালা। ছবি: সংগৃহীত
বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাফল্যের এ গল্পগুলো অনুপ্রাণিত করছে বর্তমান শিক্ষার্থীদেরও। স্বপ্নগুলো ছড়িয়ে যাচ্ছে এক প্রাণ থেকে আরেক প্রাণে। ইংরেজি বিভাগের বর্তমান স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী পূজা গোয়ালা জানান, চা শ্রমিকসহ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও সুবিধাবঞ্চিতদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ তৈরির প্রত্যয় হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুল স্কলারশিপ নিয়ে তিনি পড়ছেন ইংরেজি বিভাগে।
তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাকারিয়া আহমদ ও দিনার মিয়া জানান, এসআইইউর ইংরেজি বিভাগ এরই মধ্যে স্বতন্ত্র একটি জায়গা তৈরি করে নিয়েছে। শুধু পাঠদান নয়, সেমিনার-সিম্পোজিয়াম, সাংস্কৃতিক আয়োজন ও খেলাধুলাসহ বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়।
এসআইইউ ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও ক্যারিয়ারসহ সময়োপযোগী বিভিন্ন জ্ঞান লাভের জন্য অনলাইন ও ক্যাম্পাসে নিয়মিত অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বিশেষ করে বিভাগের নিয়মিত আয়োজন ‘এক্সপার্ট ইনসাইটস’ ও ‘মেন্টর টক’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সিলেবাসের বাইরের জ্ঞানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার আয়োজন চলে সবসময়। এরই মধ্যে এসব আয়োজনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের নানা প্রান্তের খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ ও শিক্ষা গবেষকরা অংশ নিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য উপযুক্ত কারিকুলামের পাশাপাশি ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ফ্রি ল্যাংগুয়েজ ক্লাব। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা লাভের জন্য প্রতি সেমিস্টারে দেওয়া হয় ‘স্টুডেন্ট এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’।

এসআইউয়ের ইংরেজি বিভাগে নবীন বরণ অনুষ্ঠান। ছবি: সংগৃহীত
বিভাগটির প্রধান সহযোগী অধ্যাপক প্রণবকান্তি দেব জানান, ইংরেজি বিভাগ শুধু ক্লাস-পরীক্ষায় সীমাবদ্ধ নয়, শিক্ষার্থীদের একুশ শতকের উপযোগী সব ধরনের দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করে থাকে। এই বিভাগের গ্র্যাজুয়েটরা জ্ঞান ও দক্ষতা দিয়ে যেন দেশে ও দেশের বাইরে সাফল্য অর্জন করতে পারে সেটিই আমাদের প্রচেষ্টা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আশরাফুল আলম জানান, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি নিজস্ব ক্যাম্পাসে তুলনামূলক কম টিউশন ফিতে গুণগত শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্কলারশিপও রয়েছে। সব ধরনের শিক্ষার্থীর উচ্চ শিক্ষা নিশ্চিত করতে এসআইইউ বদ্ধপরিকর।
অভিভাবকরাও এসআইইউয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষা ও সহশিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে ভীষণ সন্তুষ্ট। তারা বলছেন, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগ সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা দিয়ে একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আধুনিক পাঠ্যক্রম, গবেষণাধর্মী শিক্ষা ও সৃজনশীল কার্যক্রমের সমন্বয়ে এই বিভাগ শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য প্রস্তুত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।