ঢাকা: চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, খেজুরসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনগুলোকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)–এর প্রশাসক মো. আবদুর রহিম খান।
বুধবার (১২ নভেম্বর) মতিঝিলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
সভায় উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই–এর সাবেক পরিচালক, বিভিন্ন চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনের নেতা, বাজার সমিতির প্রতিনিধি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, টিসিবি, কৃষি বিপণন অধিদফতর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, প্রাণিসম্পদ অধিদফতরসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে মো. আবদুর রহিম খান বলেন, “সরকারের একার পক্ষে নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখা সম্ভব নয়। এজন্য সরকার, বেসরকারি খাত ও গণমাধ্যমকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
সভার শুরুতে এফবিসিসিআই’র মহাসচিব মো. আলমগীর নিত্যপণ্যের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। প্রতিবেদনে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ, নিয়ন্ত্রণের উপায় এবং সংশ্লিষ্ট তথ্য–উপাত্ত তুলে ধরা হয়।
আলোচনায় চিনি ও ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা জানান, মিল মালিকরা সরবরাহ স্বাভাবিক রাখলে আসন্ন রমজানেও বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। মিল মালিকদের প্রতিনিধিরা বলেন, এ বছর চিনির আন্তর্জাতিক বাজার স্থিতিশীল থাকায় দামও তুলনামূলক কম; তবে শীতকালে গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হলে উৎপাদনে সমস্যা হতে পারে।
ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কম দামে সয়াবিন ও পামঅয়েল বিক্রি হচ্ছে। সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে রমজানে তেলের দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা নেই। পাশাপাশি কিছু পণ্যের আমদানি শুল্ক পুনর্বিবেচনা ও সরকারি উদ্যোগেও তেল আমদানির পরামর্শ দেন তারা।
ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, অনেক সময় সরকারি সংস্থার অভিযানের নামে ব্যবসায়ীদের অযৌক্তিকভাবে হয়রানি করা হয়। এই পরিস্থিতি নিরসনে প্রশাসকের হস্তক্ষেপ চান তারা।
প্রশাসক আবদুর রহিম খান বলেন, “সরকারি অভিযানের উদ্দেশ্য হলো ভোক্তা ও ব্যবসায়ী—দু’পক্ষেরই স্বার্থ রক্ষা করা। কাউকে হয়রানি করা সরকারের উদ্দেশ্য নয়।” তিনি ব্যবসায়ীদেরও আইন–কানুন মেনে ব্যবসা পরিচালনার আহ্বান জানান এবং বলেন, সভায় উত্থাপিত সব প্রস্তাব দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স উইংয়ের প্রধান মো. জাফর ইকবাল এনডিসিসহ অন্যান্য কর্মকর্তা।