Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নেটফ্লিক্স অবৈধ! বছরে নিয়ে যাচ্ছে ২০০ কোটি টাকা


১৮ জানুয়ারি ২০১৮ ১৯:১৫

মাহমুদ মেনন ও তুহিন সাইফুল

ঢাকা: প্রতিবছর দেশ থেকে অবৈধভাবে দুই শ’ কোটি টাকারও বেশি নিয়ে যাচ্ছে নেটফ্লিক্স। যার কোনও খবর কারো কাছে নেই। সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর কাছে নেটফ্লিক্স সংক্রান্ত কোনো তথ্যও মিলছে না। অথচ ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশে দিব্যি ব্যবসা করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশে নেটফ্লিক্স ব্যবহারকারীর সংখ্যা দুই লাখেরও বেশি বলে জানাচ্ছে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)’র একটি দায়িত্বশীল সূত্র। যাদের কাছ থেকে মাসে গড়ে অন্তত ১০ ডলার করে চার্জ করছে নেটফ্লিক্স। অনলাইন স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে সিনেমা, নাটক ও সিরিজ দেখিয়ে, কার্ড থেকে অনলাইনেই চার্জ করে নিয়ে নিচ্ছে এই অর্থ। যার জন্য কোনো ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপ করা হচ্ছে না। যা অবৈধ ও দেশের জন্য বড় ক্ষতি বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিজ্ঞাপন

“হঠাৎ করে নেটফ্লিক্স এসে ব্যবসা করে চলে যাচ্ছে, জিনিষটা খুবই আনফেয়ার”
সৈয়দ আলমাস কবীর, সভাপতি বেসিস

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সভাপতি নেটফ্লিক্স-এর ব্যবসাকে ‘আনফেয়ার’ যেমন বলছেন, সারাবাংলার নিজস্ব অনুসন্ধানেও দেখা গেছে বছরে ২০০ কোটি টাকারও বেশি অংক নেটফ্লিক্স দেশ থেকে চুপিসারে, স্রেফ কার্ড চার্জিংয়ের মাধ্যমে নিয়ে যাচ্ছে। তার জন্য আরোপ করা হচ্ছে না কোনও ভ্যাট, ট্যাক্স।

নেটফ্লিক্সের ব্যাংক এগ্রিমেন্ট তো নাই, এরা ভ্যাট ট্যাক্সও দেয় না।
সরকার এদের কাছ থেকে 
কোন রাজস্ব পাচ্ছে না।

ফাহিম মাশরুর, সাবেক সভাপতি, বেসিস

কেবল তা-ই নয় দেশের যে কোনও অনলাইন চার্জিংয়ে অটো রিন্যুয়াল নিষিদ্ধ থাকলেও, মাস শেষে স্বয়ংক্রিয় নবায়ন প্রক্রিয়ায় ডলার চার্জ করে নিচ্ছে নেটফ্লিক্স। কিন্তু দেখার কেউ নেই!

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে দফতরে ঘুরে সারাবাংলার অনুসন্ধানী টিম জেনেছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কিংবা দায়িত্বশীল কারো কাছেই নেটফ্লিক্সের এই অনিয়ম সংক্রান্ত কোনও তথ্য নেই। কেউ কেউ তো বিস্ময় প্রকাশ করেছেন এই জেনে যে, বাংলাদেশে নেটফ্লিক্স এমন ব্যবসা করছে!

বিশ্বের ১৯০টি দেশে সাত কোটি মানুষ নেটফ্লিক্স ব্যবহার করছে। আর এশিয়ায় প্রতিষ্ঠানটি তাদের ব্যবসা ছড়ায় ২০১৬ সালের গোড়ার দিকে।

নেটফ্লিক্স’র সিইও রিড হ্যাস্টিংস সেবছরের এপ্রিলে এশিয়ায় ব্যবসা শুরু করার পর বলেছিলেন, ‘এশিয়ায় তাদের সাফল্য সময়ের ব্যপার মাত্র।’

‘উই হ্যাভ মেড অ্যা গুড স্টার্ট’
– রিড হ্যাস্টিংস, সিইও নেটফ্লিক্স

এশিয়ায় যাত্রা শুরুর তিন মাস কাটিয়ে শততম দিনে হ্যাস্টিংস জানান দেন, এক কোয়ার্টারে তাদের ৪০ লাখেরও বেশি আন্তর্জাতিক সাবস্ক্রাইবার বেড়েছে।

ভারত নেটফ্লিক্সে অর্থ আয়ে নিজের বড় ভবিষ্যত দেখে স্বাগত জানায়। আর এরই মধ্যে সে পথে অনেকটা এগিয়েও গেছে দেশটি। নেটফ্লিক্স ভরে যাচ্ছে বলিউডের সিনেমায়।

তবে তখনই বেঁকে বসে ইন্দোনেশিয়া। কোনও লাইসেন্স ছাড়া নেটফ্লিক্স ঢুকে পড়ছে দেখে তা আটকে দেয় দেশটি। শুধু ইন্দোনেশিয়া কেনো বিশ্বের আরও অনেক দেশেই নেটফ্লিক্সকে নানা বাধার মুখে পড়তে হয়েছে।

কিন্তু বাংলাদেশে! এ দেশে নেটফ্লিক্সকে এ নিয়ে সামান্য ভাবতেও হয়নি। সরাসরি ঘোষণা দিয়ে যাত্রা শুরু। এরপর শুধুই আয়ের অংক গণনা। যাত্রা শুরুর সময় বাংলাদেশের কোনও কর্তৃপক্ষের সাথে তাদের কোনো কথা হয়েছে এমনটাও জানা যায়নি।

“নেটফ্লিক্স যেহেতু বাংলাদেশের বিভিন্ন নেটওয়ার্ক দিয়ে সব জায়গায় দেখানো হচ্ছে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের কাছে তাদের আসার কথা। কিন্তু এরা আসেনি।”

শাহজাহান মাহমুদ, চেয়ারম্যান, বিটিআরসি

এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তখনও কোনও প্রশ্ন করেনি। আর সবশেষ অনুসন্ধানে জানা গেলো প্রায় দুই বছর পার হয়ে গেলেও বিষয়টি নিয়ে ভাবা হচ্ছে খুব কমই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে নেটফ্লিক্স নিয়ে কোনও তথ্যই মিললো না। সংশ্লিষ্ট দফতরের একজন কর্মকর্তা সারাবাংলা টিমকে প্রথমে বললেন, নেটফ্লিক্স একটি আবেদন করেছে। তারা যাচাই করে দেখছেন। তবে পরে জানা গেলো সেটি নেটফ্লিক্স নয়, আইফ্লিক্স’র আবেদন। যারা বাংলাদেশের একটি টেলকোর মাধ্যমে নিয়ম মেনে ব্যবসা করার প্রস্তাব দিয়েছে। যা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। নেটফ্লিক্সের পক্ষ থেকে এমন কোনও প্রস্তাবই তাদের কাছে নেই।

বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করলেও দেশে কোন আঞ্চলিক অফিস খোলেনি নেটফ্লিক্স। এমনকি ফি বাবদ ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে অর্থ নেয়ার ক্ষেত্রে কোন ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তিও নেই প্রতিষ্ঠানটির। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগের যুগ্ন পরিচালক মো. মোকসুদুজ্জামান ও হারুন অর রশিদ উভয়ই সারাবাংলাকে বিষয়টি এভাবেই জানালেন।

অথচ ২০১৬ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নেটফ্লিক্স যখন ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৩০টি দেশে তাদের ব্যবসা ছড়ায় তখন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো তা ফলাও করে প্রকাশ করে।

দ্য ডেইলি স্টার সেবছরের ৭ জানুয়ারি তার খবরের শিরোনাম করেছিলো- নেটফ্লিক্স কামস টু বাংলাদেশ!

সে খবরেও হ্যাস্টিংসের উদ্ধৃতিটি ছিলে এমন-
টুডে উই আর উইটনেসিং দ্য বার্থ অব নিউ গ্লোবাল ইন্টারনেট টিভি নেটওয়ার্ক।

রীতিমতো একটি আইপিটিভি হিসেবে সারাবিশ্বে ব্যবসা চালাচ্ছে নেটফ্লিক্স। আর অপেক্ষাকৃত দ্রুত গতিতে আইটি ব্যবহার ছড়িয়ে পড়া বাংলাদেশে দুই বছরে দুই লাখের বেশি গ্রাহক তৈরি হয়েছে। যাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে নেটফ্লিক্স প্রতিমাসে গড়ে ১০ ডলার করে নিচ্ছে। সে হিসাবে- প্রতিমাসেই চলে যাচ্ছে ২০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা বছরে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। যা অবৈধ পথে যাচ্ছে।

“এক নম্বর কথা এটা আইপি টিভি, তো আইপিটিভি এদেশে গাইডলাইনের অভাবে, বিটিআরসির পারমিশানের অভাবে কেউ দিতে পারছে না। সেখানে হঠাৎ করে নেটফ্লিক্স এসে ব্যবসা করে চলে যাচ্ছে তো জিনিষটা খুবই আনফেয়ার।”
– সৈয়দ আলমাস কবীর, সভাপতি,  বেসিস

স্রেফ কার্ড চার্জিংয়ের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করে সিনেমা, নাটক, টিভি সিরিজ দেখতে পারেন এর ব্যবহারকারীরা। বাংলাদেশে এর তিন ধরনের সাবস্ক্রিপশন প্রযোজ্য। যার মাসিক চার্জ ধরন ভেদে ৮ থেকে ১২ ডলার পর্যন্ত।

শুরু থেকেই জনপ্রিয়তা পাওয়ায় বাংলাদেশে গত দুই বছরে এর গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়ায় দুই লাখেরও বেশি।

খবর হয়েছে বাংলাদেশে নেটফ্লিক্সের প্রচারিত বিবিসি’র তৈরি এমি অ্যাওয়ার্ড জয়ী ড্রামা ‘শার্লক’ সবচেয়ে বেশি দেখা হয়েছে। আধুনিক লন্ডনে শার্লক হোমস ও জন ওয়াটসনকে দেখানো হয়েছে এই শো’তে।

নেটফ্লিক্স প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, নেটফ্লিক্স নিয়ে ব্যাংকটি নিজেই রয়েছে ধোঁয়াশায়। এমনকি অনলাইনে ব্যবসা করা বেশিরভাগ বিদেশি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কেই প্রর্যাপ্ত তথ্য নেই ব্যাংকটির কাছে!

এদিকে, নেটফ্লিক্স’র মতো একই ধরনের সিনেমা নাটক দেখানো স্থানীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশেও রয়েছে। র‌্যাবিটহোলবিডি, বায়োস্কোপ, থার্ডবেল যার অন্যতম। এসব প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা মেনেই ব্যবসা করতে হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে একই ধরনের সার্ভিস বা ব্যবসার জন্য স্থানীয় উদ্যোগকে নিয়ম মানতে হলে, বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে কেনো ছাড় দেওয়া হচ্ছে?

‘নেটফ্লিক্স নিয়ে আমরা কথা বলছিলাম। আমাদের দেশের যারা এ ধরণের সার্ভিস দিচ্ছে বা দিতে চাচ্ছে তাদের জন্য এটা একটা বড় থ্রেট। আমরা বলছিনা বিদেশি কেউ এখানে ব্যবসা করতে পারবে না। কিন্তু দেশীয় কোম্পানিগুলো একই ব্যবসা করতে পারছে না, সেটাই বড় সমস্যা।
– সৈয়দ আলমাস কবীর, বেসিস সভাপতি

তবে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন ও রেগুলারিটি কমিশন জানিয়েছে নেটফ্লিক্সের ব্যপারে খুব শিগগিরই ‘সিরিয়াস’ পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে তারা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডও বলেছে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

‘নেটফ্লিক্সের ব্যপারে আমরা সচেতন আছি।’
– শাহজাহান মাহমুদ, বিটিআরসি চেয়ারম্যান

‘এটা আনফরচুনেট। আমরা এটা অ্যাড্রেস করবো।’
– কানন কুমার রায়, সদস্য এনবিআর

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)’র এই চেয়ারম্যান অবশ্য অন্য কথাও বলেছিলেন । তিনি বলেন, ‘মুশকিল হচ্ছে- এখানকার আইনে কতগুলো বিষয় আছে যেটা ওয়েল ডিফাইনড না। এটা কি তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে, নাকি বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে, নাকি এনবিআর’র অধীনে তা নিশ্চিত না।’

আর কানন কুমার রায় বলেন, ‘আমাদের মেশিনারি দিয়ে এ ধরনের অনলাইন বিজনেস যারা করছে তাদের ধরার ব্যবস্থা পুরোপুরি নিশ্চিত করা যায়নি।’

তবে শিগগিরই এ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা বিটিআরসি ও এনবিআর’ এই দুই প্রতিষ্ঠান থেকেই এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকও বলেছে তারা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছে।

‘নেটফ্লিক্সসহ এমন যে প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে এদের সবগুলোর ব্যাপারে আমরা এখনো কিছু না করলেও খুব শিগগিরই সিরিয়াস পদক্ষেপ নেবো,’ বলেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ।

এদিকে নিবন্ধন খরচেও বাংলাদেশের গ্রাহকদের ঠকাচ্ছে নেটফ্লিক্স। কারণ মেক্সিকো, জাপান, কলম্বিয়া, কানাডা, ব্রাজিলের মতো দেশগুলোতে ৬ ডলারে নেটফ্লিক্স সদস্য হওয়া যায়, কিন্তু বাংলাদেশের গ্রাহকদেরকে খরচ করতে হয় সর্বনিম্ন ৮ ডলার।

এছাড়াও নেটফ্লিক্স ব্যবসা করে এমন দেশগুলোর সিনেমা খাতে বিস্তর লগ্নি করলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে উদাসীন তারা।

নেটফ্লিক্সের প্রধান নির্বাহী রিড হ্যাস্টিংসের দক্ষিণ এশিয়া সংক্রান্ত আলোচনায় একরকম অনুপস্থিতই থাকে বাংলাদেশ। অথচ ভারতে শাহরুখ-আমির খানের সিনেমাসহ বিভিন্ন অভিনেতার একশরও বেশি সিনেমা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কিনে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে কিনেছে মাত্র দুটি সিনেমা! দুটি ছবিই জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর।

২০১৭’র এপ্রিলে নেটফ্লিক্স যখন তার নির্মিত ‘পিঁপড়াবিদ্যা ও টেলিভিশন’ নামের দুটি ছবি কিনে নেয় তখন নিজেই সামাজিক মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছিলেন ফারুকী। যা নিয়ে সে সময়ে মূলধারার সংবাদ মাধ্যমগুলোতে খবর আসে। ২০১৭’র ১৫ মে সিনেমা দুটি প্রকাশ করে নেটফ্লিক্স।

নেটফ্লিক্স নিয়ে বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর’র পুরো বক্তব্য:
এটা (নেটফ্লিক্স) নিয়ে আমরা কথা বলছিলাম। আমাদের দেশের যারা এ ধরণের সার্ভিস দিচ্ছে বা দিতে চাচ্ছে তাদের জন্য এটা একটা বড় থ্রেট। একনম্বর কথা এটা আইপি টিভি, তো আইপিটিভি এদেশে গাইডলাইনের অভাবে, বিটিআরসির পারমিশানের অভাবে দিতে পারছে না। সেখানে হঠাৎ করে নেটফ্লিক্স এসে ব্যবসা করে চলে যাচ্ছে তো জিনিষটা খুবই আনফেয়ার। আমরা বেসিস থেকে এটা নিয়ে বিটিআরসিকে একটা গাইডলাইন প্রপোজ করবো। আমরা বলছি না বিদেশি কেউ এখানে ব্যবসা করতে পারবে না। বাট দেশীয় কোম্পানিগুলো ব্যবসা করতে পারছে না, তাদের একমাত্র অপরাধ তারা দেশীয় কোম্পানি। আমার দেশেরই একটা কোম্পানি যদি বিদেশে বসে, সিঙ্গাপুরে বসে সার্ভার বসিয়ে ব্যবসা দেয় তখন তো বিটিআরসি এখানে কিছু করতে পারছে না। ইটস হ্যাজ টু বি আ ফেয়ার প্লে। যাতে দেশীয় যে কোম্পানিগুলো আছে তারা যেন সমান সুযোগ পায়।
টাকা নিয়ে যাওয়ার ব্যপারটাও খুব ইম্পরট্যান্ট। এই যে আমি মাসে ৮ ডলার বা ১০ ডলার করে নেটফ্লিক্সকে দিচ্ছি, টাকাটা কিন্তু আমি পে করছি আমার ক্রেডিট কার্ড দিয়ে। বেশির ভাগ লোকই এটা ইউজ করছে ট্রাভেল কোটার খরচ থেকে। ট্রাভেল কোটার তো তাহলে এটা মিসইউজ হলো। কারণ এই টাকাটা তো ট্রাভেলের জন্য দেয়া হচ্ছে। আমরা বাধা দিচ্ছি না। বাংলাদেশে ব্যাংকের কাছ থেকে তাদের এগ্রিমেন্ট করে নেয়া উচিত, আমার টাকা আমি খরচ করবো ঠিক আছে তবে সেটা লিগ্যাল ওয়েতে খরচ করা উচিত। এখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটা গাইডলাইন দরকার।’

নেটফ্লিক্স প্রসঙ্গে বেসিসের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর’র পুরো বক্তব্য
নেটফ্লিক্সের ব্যাংক এগ্রিমেন্ট তো নাই, এরা ভ্যাট ট্যাক্সও দেয় না। সরকার এদের কাছ থেকে কোন রাজস্ব পাচ্ছে না। একই কাজ কিন্তু ফেসবুকও করছে। কোটি কোটি টাকার ব্যবসা চলে যাচ্ছে ফেসবুকে, গুগলে। এখানকার লোকজন ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, গুগলে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে তিন্তু এদের তো এদেশে কোন বিজনেস রেজিস্ট্রেশন নাই। আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে বাংলাদেশে ব্যবসা করতে হলে তার কোম্পানির রেজিস্ট্রেশন লাগবে এবং তার টাকা পয়সা আসুক যাক তা লোকাল কারেন্সিতে হতে হবে। এবং লোকাল কোন ব্যাংকে তাকে টাকাটা রিসিভ বা ট্রান্সফার করতে হবে। এটাই বাংলাদেশের আইন। তো নেটফ্লিক্সরা যেটা করতেছে সেটা আইনের পরিপন্থী। নেটফ্লিক্স আসলে বিটিআরসি থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইস্যুটা বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের যে ফরেইন অ্যাফেয়ার্স রেগ্যুলেশন আছে, কাস্টমস রেগ্যুলেশন আছে, নেটফ্লিক্স সেটারও পরপিন্থী।

সারাবাংলা/এমএম

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

দশম গ্রেড দাবি করায় ৬৪ অডিটরকে বদলি
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৩৫

সম্পর্কিত খবর