এডিপিতে নতুন প্রকল্প বাছাইয়ে শুরু হচ্ছে সিরিজ বৈঠক
১০ এপ্রিল ২০১৯ ১৯:০৪
ঢাকা: ২০১৯-’২০ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) নতুন প্রকল্প নির্ধারণের উদ্যাগ নিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। অননুমোদিত নতুন প্রকল্প অন্তর্ভুক্তির জন্য শুরু হচ্ছে পাঁচদিনের সিরিজ বৈঠক। ১৮ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় প্রোগ্রামিং কমিটির এ বৈঠক চলবে।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি-১ সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন পরিকল্পনা সচিব মো. নূরুল আমিন। চলতি অর্থবছর মূল এডিপিতে এরকম অননুমোদিত নতুন প্রকল্প ছিল ১ হাজার ৩২৪টি। সংশোধিত এডিপিতে এ সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৯৮৫টিতে।
পরিকল্পনা সচিব মো. নূরুল আমিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আগামী অর্থবছরের এডিপিতে চলমান মেগা প্রকল্পগুলো এবং যেসব প্রকল্প সমাপ্ত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হবে সেসব প্রকল্পে সর্বোচ্চ বরাদ্দ নিশ্চিত করা হবে। তাছাড়া নতুন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে গুরুত্ব পাবে চলমান সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার শেষ বছর (২০২০ সাল), জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি), সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার, বৈষম্য হ্রাস, দারিদ্র্য নিরসন, অঞ্চলভিত্তিক সুষম উন্নয়ন, নদী ভাঙন-জলাবদ্ধতা রোধে ড্রেজিং, নদীশাসন ও রক্ষণাবেক্ষণের লক্ষ্যে পরিবেশ ও প্রতিবেশের বিষয় এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সফটওয়্যার শিল্প ও তথ্য প্রযুক্তি খাতের প্রকল্প।’
পরিকল্পনা কমিশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, ১৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে যোগাযোগ এবং ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ণ খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সঙ্গে বৈঠক। এতে অংশ নেবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, জননিরাপত্তা বিভাগ, সেবা ও সুরক্ষা বিভাগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, সব সিটি করপোরেশন, সব ওয়াসা ও ডিপিএইচই, পাবর্ত্য জেলা পরিষদ, আইন ও বিচার বিভাগ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, দুদক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, পাবলিক সার্ভিস কমিশন এবং পরিকল্পনা বিভাগ।
২১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে পরিবহন, শিল্প, বিদ্যুৎ এবং তেল-গ্যাস ও প্রাকৃতিক সম্পদ খাত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বৈঠক। এতে অংশ নেবে সড়ক পরিবহন ও সেতু বিভাগ, রেলপথ মন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহর মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, শিল্প, বস্ত্র ও পাট এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, গণসংযোগ সমাজকল্যাণ-মহিলা বিষয়ক ও যুব উন্নয়ন এবং ক্রীড়া ও সংস্কৃতি খাত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে বৈঠক।
এতে অংশ নেবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়,তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, তথ্য মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ২৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে স্বাস্থ্য-পুষ্টি-জনসংখ্যা ও পরিবারকল্যাণ, জনপ্রশাসন, শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান খাতের সঙ্গে বৈঠক। এতে অংশ নেবে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা বিভাগ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
এছাড়াও অংশ নেবে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, পর্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়। শেষ দিন ২৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে পানি সম্পদ ও কৃষি খাত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সঙ্গে বৈঠক। এতে অংশ নেবে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়,খাদ্য মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, পরিবেশ-বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি নতুন এডিপি তৈরির ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে বেশ কিছু বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছিল পরিকল্পনা কমিশন। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো— সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার ও কাঙ্ক্ষিত সুফল প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে এডিপিতে নতুন প্রকল্প গ্রহণের চেয়ে চলমান প্রকল্প সমাপ্ত করার দিকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া শুধুমাত্র অনুমোদিত প্রকল্প বরাদ্দসহ অর্ন্তভুক্ত করতে হবে। যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত এবং প্রশাসনিক আদেশ জারি ছাড়া কোনো প্রকল্প এডিপিতে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করা যাবে না।
সম্পদের সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় নিয়ে যৌক্তিকতাসহ নতুন প্রকল্প তালিকায় যুক্ত করার প্রস্তাব দিতে হবে। পরিকল্পনা শৃঙ্খলা ও বাজেট ব্যবস্থাপনার স্বার্থে চলতি অর্থবছরে সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত কোনো প্রকল্প নতুন এডিপিতে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করা যাবে না।
সারাবাংলা/জেজে/এসআই