রফতানি আয়ে হোঁচট
৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:১১
ঢাকা: চলতি অর্থবছরের (২০১৯-২০) প্রথম মাসে ভালো প্রবৃদ্ধির পর দ্বিতীয় মাসে হোঁচট খেয়েছে দেশের রফতানি আয়। জুলাই মাসে দেশ থেকে ৩৮৮ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হলেও আগস্টে তা ২৮৪ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। অর্থবছরটির দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) ৬৭৩ কোটি ২১ লাখ ৭ হাজার ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে। এই আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে শূন্য দশমিক ৯২ শতাংশ কম। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কমেছে ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
ইপিবি’র প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে সব ধরনের পণ্য রফতানিতে বৈদেশিক মুদ্রার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৫৫০ কোটি মার্কিন ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছর শেষ রফতানি আয় অর্জিত হয়েছে ৪ হাজার ৫৩ কোটি ৫০ লাখ ৪ হাজার ডলার। চলতি অর্থবছর দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) রফতানির আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৬৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এই দুই মাসে রফতানি আয় এসেছে ৬৭৩ কোটি ২১ লাখ ৭ হাজার মার্কিন ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ কম। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে রফতানি আয় অর্জিত হয়েছিল ৬৭৯ কোটি ৫০ লাখ ২ হাজার ডলার। সে হিসেবে রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে শূন্য দশমিক ৯২ শতাংশ।
ইপিবির তথ্যমতে, একক মাস হিসেবে আগস্টের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৮৫ কোটি ডলার। এই সময়ে দেশে রফতানি আয় এসেছে ২৮৪ কোটি ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৬ শতাংশ কম। এর আগের অর্থবছরে আগস্টে রফতানি আয় এসেছিল ৩২১ কোটি ডলার। সে হিসেবে চলতি অর্থবছরের আগস্টে রফতানি কমেছে ১১ শতাংশ। এর আগে, অর্থবছরটির প্রথম মাসে (জুলাই) ৩৮৮ কোটি ৭৮ লাখ ৬ হাজার ডলারের পণ্য রফতানি হয়। যে আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ বেশি এবং চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেশি ছিল।
ইপিবির তথ্য বলছে, আগস্ট মাসে প্রবৃদ্ধি ও লক্ষ্যমাত্রা স্পর্শ করতে পারেনি দেশের তৈরি পোশাক খাত। চলতি অর্থবছরের দুই মাসে ৫৭১ কোটি ৬৪ লাখ ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছে। এই আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে শূন্য দশমিক ৩৩ শতাংশ কম। একই সঙ্গে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় কমেছে ১১ দশমিক ৪০ শতাংশ।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত দুই মাসে নিট পোশাক রফতানি থেকে আয় এসেছে ২৯২ কোটি ৮ লাখ ৫ হাজার ডলার। যা আগের বছরের একই সময়ের শূন্য দশমিক ২৭ শতাংশ বেশি। নিট পোশাকে প্রবৃদ্ধি সামান্য বাড়লেও লক্ষ্যমাত্রা কমেছে ৮ দশমিক ২৬ শতাংশ। অন্যদিকে ওভেন পোশাক রপ্তানি করে আয় হয়েছে ২৭৯ কোটি ৫৬ লাখ ৪ হাজার ডলার। যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় শূন্য দশমিক ৯৪ শতাংশ কম। পাশাপাশি ১৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা কমেছে ওভেনে।
ইপিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে ১ দশমিক ৩২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে। এ খাত থেকে আয় এসেছে ১৮ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রফতানি আয় বেড়েছে শূন্য দশমিক ৪৩ শতাংশ। যদিও গত অর্থবছর জুড়েই চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে আয় ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। সম্প্রতি দেশের বাজারে গত ১৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হয়েছে কাচা চামড়া।
এদিকে গত জুলাই মাস শেষে প্লাস্টিক পণ্যে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ২৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এ সময়ে আয় হয়েছে ২ কোটি ৭ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। গত দুই মাসে হোম টেক্সটাইল খাতে প্রবৃদ্ধি ও লক্ষ্যমাত্রা দুটোই কমেছে। এ সময় আয় এসেছে ১১ কোটি ৬৭ লাখ ডলার। চলতি অর্থবরের দুই মাসে পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি আয় কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে লক্ষ্যমাত্রা। এ সময়ে এ খাত থেকে আয় এসেছে ১৩ কোটি ৫ লাখ ডলার। ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট মাস শেষে কৃষি পণ্য রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি ও লক্ষ্যমাত্রা কোনটাই অর্জিত হয়নি। এ খাত থেকে আয় এসেছে ১৩ কোটি ৪৪ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রফতানি আয় কমেছে ২৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ। অন্যদিকে আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি কমেছে ২৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ।