Monday 21 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নির্ধারিত মেয়াদে শেষ হচ্ছে না পল্লি বিদ্যুৎ সম্প্রসারণ প্রকল্প

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপনডেন্ট
২৭ মার্চ ২০২১ ০৮:৩৬

প্রতীকী ছবি

ঢাকা: নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে না পল্লী বিদ্যুৎ সম্প্রসারণ ও ভৌত অবকাঠামো উন্নতকরণ প্রকল্প। মেয়াদ শেষের পথে হলেও এখন আবার নতুন করে ৬ মাস বাড়ানো হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন অংশে ব্যয় হ্রাস-বৃদ্ধি করে প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।

এটি নিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় ‘সিলেট বিভাগ পল্লী বিদ্যুতায়ন কার্যক্রম সম্প্রসারণ এবং বিআরইবি’র সদর দপ্তরের ভৌত সুবিধাদির উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প মূল্যায় কমিটির (পিইসি) সভা। এতে সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য (সচিব) শরিফা খান। গত ১৮ মার্চ জারি করা হয় ওই সভার কার্যবিবরণী।

বিজ্ঞাপন

পিইসি সভার কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে— সিলেট বিভাগের বাপবিবোর বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ এবং সিলেট বিভাগীয় সদর দফতরের ভৌত সুবিধাদি উন্নয়নের জন্য ২০১৬ সালের ১০ মে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এই প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত মোট ব্যয় ১ হাজার ৪১৭ কোটি ১০ লাখ টাকা এবং মেয়াদ ২০১৬ সালের জানুয়ারি হতে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরবর্তীতে প্রকল্পের প্রথম সংশোধিত ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) ১ হাজার ৪০১ কোটি ১৬ লাখ প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল পরিকল্পনামন্ত্রী অনুমোদন দেন।

বর্তমানে বিদ্যুৎ বিভাগ হতে প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল বৃদ্ধিসহ কয়েকটি অংশের পরিমাণ ও ব্যয় পুনঃপ্রাক্কলন করে দ্বিতীয় সংশোধিত ডিপিপি প্রণয়ন করা হয়েছে। দ্বিতীয় ডিপিপি অনুযায়ী প্রকল্পটির প্রাক্কলিত মোট ব্যয় ১ হাজার ৩১৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা এবং মেয়াদ ২০১৬ সালের জানুয়ারি হতে ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। অনুমোদিত প্রথম সংশোধিত ডিপিপি হতে প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় হ্রাস পেয়েছে ৮৩ কোটি ৬৪ লাখ ৪৭ হাজার টাকা এবং মেয়াদ বৃদ্ধি পেয়েছে ৬ মাস। প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ১ হাজার ২২৬ কোটি ৬২ লাখ টাকা (৮৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ) এবং ভৌত অগ্রগতি ৮৯ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

কার্যবিবরণীটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সভায় আলোচনা অংশে বলা হয়েছে— প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২০ সালের ডিসেম্বরে সমাপ্ত হয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন, অনুমোদন ও সংশোধন পদ্ধতি অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার কমপক্ষে ৩ মাস আগে সংশোধনের প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানোর কথা। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার ১১দিন আগে প্রস্তাবটি পাওয়া গেছে। আরডিপিপি পাঠানোর কারণ ব্যাখ্যা করে আরডিপিপি পুনর্গঠনের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। অনুমোদিত প্রথম সংশোধিত ডিপিপিতে প্রতিটি জিপ বাবদ ৮০ লাখ টাকা করে মোট ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। কিন্তু একটি জিপ ৯৯ লাখ ১০ হাজার টাকায় কেনা করা হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের অনুমোদন ছাড়াই অতিরিক্ত ব্যয়ে জিপ ক্রয়ের কারণ জানতে চাওয়া হলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে ৯৪ লাখ ৭৯ হাজার টাকায় একটি জিপ ক্রয় করা হয়। গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, ট্যাক্স টোকেন এবং বীমাসহ গাড়ীর ব্যয় হয়েছে ৯৯ লাখ ১০ হাজার টাকা। প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ তাদের মূল্য বৃদ্ধি করায় গাড়ি ক্রয় বাবদ মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।

সংশোধিত ডিপিপির প্রস্তাব মতে সিলেট আঞ্চলিক ওএন্ডএম কমপ্লেক্স ই এবং এফ টাইপ আবাসিক ভবনের আওতা পরিমাণ হ্রাস করে ১৫তলা বিশিষ্ট ফাউন্ডেশনের ৮ তলার স্থলে ৮ তলার ফাউন্ডেশনে ৫ তলা নির্মাণের প্রস্তাব করার কারণ জানতে চাওয়া হলে বিআরইবির চেয়্যারম্যান মেজর জেনারেল (অব) মঈন বলেন, কমপ্লেক্সের জনবলের বর্তমান সেটআপ অনুযায়ী ১৫ তলার ফাউন্ডেশনে অষ্টম তলা ই অ্যান্ড এফ আবাসিক ভবন নির্মাণের প্রয়োজন নেই।

এ ক্ষেত্রে বাপবিবোর (বাংলাদেশ পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি) এই আঞ্চলিক কার্যালয়ের বিদ্যমান জনবল এবং কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রাধিকার অনুযায়ী কমপ্লেক্সের ডিজাইন করা হয়েছে কি না তার ব্যাখ্যা আরডিপিপিতে দেওয়ার জন্য সকলে একমত পোষণ করেন।

এই দ্বিতীয় সংশোধিত ডিপিপিতে বসবাসরত স্থাপনা অংশের পরিমাণ অনুমোদিত ২ হাজার ৭৪৬ বর্গমিটার হতে হ্রাস করে ২ হাজার ১২৫ বর্গমিটার করা হয়েছে। পরিমাণ হ্রাস পেলেও এ অংশের ব্যয় ১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে অন্যান্য পূর্ত নির্মাণ কাজের পরিমাণ বৃদ্ধির সঙ্গে ব্যয়ও ৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যান্য পূর্ত নির্মাণ কাজের অধীন অভ্যন্তরীণ রাস্তা, বাউন্ডারি ওয়াল, গেইট, সিকিউরিটি পোস্ট, মাস্টার ড্রেন, সুয়ারেজ সিস্টেম, শেডেড ওপেন স্টোর ইয়ার্ড, স্টোর ইয়ার্ড ফেন্সিং, গ্যারেজ, আনসার ব্যারাক, গ্যাস ও বিদ্যুৎ ইত্যাদি কাজ বাবদ অনুমোদিত প্রথম সংশোধিত ডিপিপিতে বরাদ্দের পরিমাণ ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। কিন্তু এই দ্বিতীয় সংশোধিত ডিপিপিতে এ বাবদ ৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে ।

এই অংশ দুটিতে ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক সভায় বলেন, ‘গণপূর্ত অধিদপ্তরের রেট শিডিউল ২০১৪ অনুযায়ী প্রাক্কলন করে ২০১৬ সালে মূল ডিপিপি প্রণয়ন করা হয়েছিল। পরবর্তীতে প্রথম সংশোধিত ডিপিপি অনুমোদনের সময় এই প্রাক্কলন অপরিবর্তিত রাখা হয়েছিল। তবে ২০১৯ সালে পি ডব্লিউ ডির রেট শিডিউল ২০১৮ অনুযায়ী প্রাক্কলন করে টেনন্ডার করা হয়। এ কারণে পূর্ত কাজের ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া পরামর্শকের দেওয়া ডিজাইন অনুযায়ী বসবাসরত স্থাপনা অংশের ২টি স্থাপনায় ১১০-১২০ ফুট প্রি-কাস্ট পাইলের প্রয়োজন হওয়ায় সার্বিকভাবে এই অংশের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া পরামর্শক প্রস্তুত বাউন্ডারি ওয়ালের ডিজাইন অনুযায়ী ৫৫ ফুট পাইলের প্রয়োজন হওয়ায় এ অংশে প্রাক্কলিত ব্যয় ৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।’

সারাবাংলা/জেজে/একে

উন্নয়ন জিপ পল্লি বিদ্যুৎ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর