বেসিসের ভোট, নানা প্রশ্নের মুখে লুনা শামসুদ্দোহা
২৫ মার্চ ২০১৮ ১৫:৪১
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: আগেই প্রশ্ন উঠেছিলো- কার স্বার্থ দেখবেন তিনি? ব্যাংকের নাকি বেসিসের! বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফর্মেশন সার্ভিসেস-বেসিস’র আসন্ন নির্বাচনে হেভিওয়েট প্রার্থী লুনা শামসুদ্দোহাকে নিয়ে এ প্রশ্ন উঠেছে।
রাষ্ট্রায়ত্ব জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। আর এবারের বেসিস নির্বাচনে উইন্ড অব চেঞ্জ নামে নয় সদস্যের একটি প্যানেলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ উইমেন ইন টেকনোলজি- বিডব্লিউআইটি’র সভাপতির পদে রয়েছেন ২০১০ সাল থেকে।
তবে নির্বাচনের ঠিক আগেই অভিযোগ উঠেছে, বেসিস নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে নিজের ব্যাংককে ব্যবহার করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন লুনা শামসুদ্দোহা।
দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, জনতা ব্যাংকের বোর্ডসভায় সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তাদের বিশেষ ঋণ সুবিধার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। তাতে বেসিস বা একই ধরনের প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের বিনা জামানতে জনতা ব্যাংক থেকে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ সুবিধার কথা বলা হয়েছিলো। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। গত ২১ মার্চ অনুষ্ঠিত জনতা ব্যাংক পর্ষদের ওই সভায় পরিচালকদের আপত্তিতে প্রস্তাবটি বাতিল হয়ে যায়।
ধারণা করা হচ্ছে- আগামী ৩১ মার্চ অনুষ্ঠেয় নির্বচনে সুবিধা নিতেই এই প্রস্তাব এনেছিলেন লুনা শামসুদ্দোহা।
ব্যক্তি স্বার্থে ব্যাংকের পদটি ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিলো বলেই মনে করছেন পরিচালনা পর্ষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য। আর সে কারণেই তারা প্রস্তাবটি বাতিল করেছেন বলে সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছে একাধিক বৈঠক সূত্র।
এ বিষয়ে ব্যাংকটির একজন পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, বিশেষ সংগঠনের জন্য জামানতবিহীন ঋণ দেয়ার এমন প্রস্তাব অভিনব এবং এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন অধিকাংশ পরিচালক। আর সে কারণে প্রস্তাবটি বোর্ডসভায় পাস হয়নি।
কেবল বিনা জামানতেই নয়, বেসিস সদস্যদের জন্য কিংবা তথ্য প্রযুক্তিখাতে ঋণে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ সুদহার নির্ধারণ করারও প্রস্তাব করা হয়েছিলো।
এ বিষয়ে সারাবাংলার কথা হয় লুনা শামসুদ্দোহার সঙ্গে। তিনি অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করে বলেন, এমন কোনও প্রস্তাবই ব্যাংকে দেওয়া হয়নি।
ওদিকে নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, জনতা ব্যাংকের বোর্ডসভায় তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তাদের ঋণ সুবিধা বাড়ানোর বিষয়ে একটি এজেন্ডা ছিল যেটি পাস হয়নি।
আর লুনা সারাবাংলাকে বলেন, ব্যাংক চেয়ারম্যান হিসেবে বেসিস সদস্যদের বিশেষ সুবিধা দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।
এদিকে, বেসিস নির্বাচন সামনে রেখে লুনা শামসুদ্দোহাকে নিয়ে আরেকটি আলোচনা বাজারে ঘুরপাক খাচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে, বাংলাদেশ উইমেন ইন টেকনোলজি- বিডব্লিউআইটিতে তার আট বছর ধরে সভাপতির পদে থাকা নিয়ে। সমালোচকরা বলছেন- এই পদটি আঁকড়ে থাকতে চান তিনি। ২০১০ সালের ২৯ ডিসেম্বর প্রথম পদটিতে নির্বাচিত হওয়ার পর এ পর্যন্ত দুই দফায় তিনি এই পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
এ বিষয়ে সারাবাংলাকে লুনা শামসুদ্দোহা বলেন, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি এই পদে আছেন। তবে দীর্ঘ সময় একই পদে থাকাতে কোনও সমস্যা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন না। বিডব্লিউআইটি এমন কোনও বড় সংগঠন নয় যে, এখানে অনেক আইনের বাধ্যবাধকতা থাকবে, বলেন এই নারী উদ্যোক্তা।
এবারের নির্বাচনে ‘ভোট ফর রাইট ক্যান্ডিডেট’ বিষয়ক একটি ক্যাম্পেইন চলছে, যা নিয়েও রয়েছে আলোচনা। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন- কারা এই ক্যাম্পেইনের উদ্যোক্তা? এবং তারা সঠিক প্রার্থী বলে কাদের নির্দেশ করছেন? সে নিয়ে।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে, প্রসঙ্গটি এড়িয়ে যান লুনা শামসুদ্দোহা।
সারাবাংলা/জেএএম/এমএম