বেলজিয়াম: বিশ্বমুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে ব্রাসেলসে ইউনেস্কো আয়োজিত সেমিনারে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইন্টিনের নির্বাহী পরিচালক কুইন ম্যাককিউ ফিলিস্তিনে সাংবাদিকদের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সাংবাদিকদের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানান তারা।
আর্টিকেল নাইন্টিনের নির্বাহী পরিচালক কুইন ম্যাককিউ বলেন, ‘জেনেভা সমঝোতা ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন স্পষ্টভাবেই নির্দেশ দেয়: সাংবাদিকেরা যুদ্ধে কোনোভাবেই লক্ষ্যবস্তু নয়। তবে গত কয়েক মাসে গাজা এবং পশ্চিম তীরের সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে হামলা এবং নিহতের শামিল অন্তত ১৩৪টি ঘটনা ঘটেছে, যা গণতান্ত্রিক বিশ্বে এক ভয়াবহ পটপরিবর্তন।’
ওই আলোচনায় ম্যাককিউ বলেন, ‘‘ফিলিস্তিনি সাংবাদিকরা শুধু ‘তথ্যবাহক’ নন, তারা যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ সংগ্রাহক। তারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শোকজকারীর মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।’’
তিনি বলেন, “গাজার সাংবাদিকরা বারবার সরাসরি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে, ফলে তথ্যের স্বচ্ছতা নষ্ট হচ্ছে এবং অপরাধীদের দায়বদ্ধ করা দুরূহ হয়ে পড়েছে” ।
তিনি আরও বলেন, “তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার সুরক্ষায় তৃতীয় দেশগুলোকেও ভূমিকা রাখতে হবে। যদি সাংবাদিকরা নিরাপদে কাজ করতে না পারে, তাহলে ঐতিহাসিক সূত্রগুলো অনির্ভরযোগ্য হয়ে পড়বে এবং গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি ধসে যাবে।”
সেমিনারে আরও অংশ নেন বিশ্বব্যাংক, ইউরোপিয়ান কমিশন, Reporters Without Borders, এবং উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশনের শীর্ষ নেতারা ।
এ দিনের আলোচনায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম স্বাধীনতা রক্ষায় নিম্নলিখিত সুপারিশগুলো গুরুত্ব পেয়েছে:
দ্রুত ও স্বচ্ছ তদন্ত: আইন অনুসারে সাংবাদিক হত্যাকাণ্ড ও হামলার ঘটনা দ্রুত তদন্ত ও পরিপূর্ণ বিচার নিশ্চিত করা।
আইনি কাঠামো: বেসরকারি ও সরকারি দফতরগুলোতে মিডিয়া স্বাধীনতা ও তথ্যপ্রাপ্তির অধিকারকে মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া।
দমনে অবনতি: গাজার মতো যুদ্ধক্ষেত্রে বিদেশি গণমাধ্যমের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করে ‘তথ্য শূন্যতার’ প্রতিরোধ।
এই সেমিনারটি বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকদের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন সারা বিশ্ব থেকে আসা আলোচকরা।