তানজানিয়ায় সাধারণ নির্বাচনের পর দেশজুড়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা ও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। শনিবার (৮ নভেম্বর) বিরোধী দল চাদেমার উপমহাসচিব আমানি গোলুগওয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এর আগে দলের নেতা তুন্ডু লিসু ও উপনেতা জন হেচেও আটক ছিলেন।
দেশজুড়ে বিক্ষোভের একদিন আগে ২৫০ জনকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। আইনজীবী পিটার কিবাতালা জানিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে ‘রাষ্ট্রদ্রোহের ষড়যন্ত্র’ ও ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’।
সরকারি নির্বাচনী কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন। তবে চাদেমা দল নির্বাচনের ফলাফলকে ‘ভুয়া ও প্রহসনমূলক’ বলে অভিহিত করেছে। তারা অভিযোগ করেছে, সরকার দলের নেতৃত্বকে পঙ্গু করে দেওয়া এবং কর্মীদের কার্যক্রম স্থবির করার চেষ্টা করছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গোলুগওয়াসহ নব গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৯ জন রয়েছেন। চাদেমার মহাসচিব জন মনিয়িকা ও যোগাযোগ প্রধান ব্রেন্ডা রুপিয়া বর্তমানে ওয়ান্টেড তালিকায়।
বিক্ষোভ ২৯ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে রাজধানী দার এস সালাম, আরুশা, মওয়াঞ্জা, মবেয়া সহ বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। তানজানিয়ার ক্যাথলিক চার্চ জানিয়েছে, শত শত মানুষ নিহত হয়েছে। চাদেমা দলের দাবি, ১,০০০ এরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যদিও সরকারিকর্তারা সংখ্যা প্রকাশ করেননি।
প্রতিবেশী কেনিয়া মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ এখনও নিখোঁজ। তাদের সংগ্রহ করা ছবিতে অনেক মৃতদেহে মাথা ও বুকে গুলির চিহ্ন দেখা গেছে, যা ‘টার্গেটেড কিলিং’ নির্দেশ করে।
আফ্রিকান ইউনিয়ন (AU) উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বলেছে, তানজানিয়ার নির্বাচন গণতান্ত্রিক মানদণ্ড ও আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা পূরণ করেনি। পর্যবেক্ষকরা ভোটকেন্দ্রে ভোট বাক্স ভর্তি ও একাধিক ব্যালট প্রদানের ঘটনা দেখেছেন।
১৯৯২ সালে বহুদলীয় রাজনীতি চালুর পর থেকে তানজানিয়ায় কার্যত একদলীয় প্রভাব বজায় রয়েছে। প্রেসিডেন্ট সামিয়া হাসানের বিরুদ্ধ বিরোধীদের মতপ্রকাশের সুযোগ সীমিত।