আগামী বছরের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচন হলেও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভোটের মাঠে না থেকেও কার্যত নির্বাচনি অভিযানে নেমে পড়েছেন। নিজের রাষ্ট্রপতিত্ব ঝুঁকির মুখে রেখেই তিনি রিপাবলিকানদের ২০২৬ সালের নির্বাচনি কৌশলের নিয়ন্ত্রণ দখল করেছেন। নির্বাচনী পরিকল্পনায় যুক্ত নয়জন রিপাবলিকান নেতার ভাষ্য— ট্রাম্প প্রার্থীদের ফোন করছেন, আগাম সমর্থন দিচ্ছেন, কৌশল সাজাচ্ছেন এবং কংগ্রেসে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখতে অর্থনৈতিক বার্তা তৈরি করছেন।
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা, ট্রাম্পের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা এবং একজন দলীয় কর্মী জানান— এই বছরের গ্রীষ্ম থেকেই ট্রাম্প রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের পুনর্নির্বাচনে দাঁড়াতে উৎসাহিত করছেন, যাতে সিনেট বা গভর্নরের দৌড়ে দলীয় প্রাথমিক লড়াই এড়ানো যায়। মধ্যবর্তী নির্বাচনের এত আগেই কোনো মার্কিন রাষ্ট্রপতির সরাসরি জড়িত থাকা আধুনিক যুগে নজিরবিহীন।
প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সাবেক সিনিয়র উপদেষ্টা বিল গ্যালস্টন বলেন, ‘প্রেসিডেন্টরা সাধারণত প্রচারণার শেষ দিকে সক্রিয় হন। ট্রাম্পের এই তাড়াহুড়ো অত্যন্ত অস্বাভাবিক।’
৪ নভেম্বর রাজ্য ও স্থানীয় নির্বাচনের এক্সিট পোল দেখায়, জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ায় ভোটাররা রিপাবলিকানদের শাস্তি দিয়েছেন। এর পরই ট্রাম্প ক্ষুব্ধ হয়ে কয়েক দফা বৈঠকে সহযোগীদের বলেন—রিপাবলিকানদের অবশ্যই সাশ্রয়ী জীবন-যাপনের বার্তাকে কেন্দ্র করে প্রচার চালাতে হবে।
এক হোয়াইট হাউস কর্মকর্তা জানান, ট্রাম্প তার টিমকে স্মরণ করিয়ে দেন যে মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলার প্রতিশ্রুতি নিয়ে তিনি পুনরায় হোয়াইট হাউসে ফিরেছেন। তাই ডেমোক্র্যাটদের কাছে অর্থনৈতিক বার্তার ক্ষেত্র ছেড়ে দেওয়া যাবে না। বরং তার প্রশাসন যে জায়গাগুলোতে দাম কমাতে সফল হয়েছে, সেগুলো সামনে আনতে হবে।
হোয়াইট হাউস কর্মকর্তা বলেন, ‘‘ক্রয়ক্ষমতা’— এটাই এখন আমাদের অর্থনৈতিক এজেন্ডার কেন্দ্রবিন্দু।’’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয় বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে, যার অন্যতম কারণ ট্রাম্পের বিদেশি আমদানির ওপর আরোপ করা ব্যাপক শুল্ক। মূল্যবৃদ্ধির চাপ কমাতে তিনি এই মাসে গরুর মাংস, কফি, ফলসহ কিছু আমদানিতে শুল্ক কমিয়েছেন।
ট্রাম্পের এক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা বলেন, ‘তিনি অবশ্যই প্রশাসনের ওপর আরও দ্রুত নীতিগত সমাধান দিতে চাপ সৃষ্টি করবেন।’
হোয়াইট হাউস সূত্র জানায়, নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ট্রাম্প নিয়মিত উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন, রাজনৈতিক মিত্রদের সঙ্গে ফোনে কথা বলছেন এবং ভোটারদের মনোভাব, ভোটদান প্রবণতা ও তহবিল সংগ্রহ নিয়ে গবেষণা পর্যালোচনা করছেন।