সৌদি তরুণীর ধর্মত্যাগ, দিন কাটছে মৃত্যু আতঙ্কে
৭ জানুয়ারি ২০১৯ ১৯:১২
।। রোকেয়া সরণি ডেস্ক ।।
ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করায় পরিবার হত্যা করতে পারে— এমন আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন এক সৌদি তরুণী। ব্যাংকক বিমানবন্দরে আটকা পড়া রাহাফ মোহাম্মদ মুতলাক আল-কুনুন নামের ১৮ বছরের ওই তরুণী জানিয়েছেন, তার ভাই ও সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তারা কুয়েতে তার জন্য অপেক্ষা করছে। তার পরিবার অনেক ছোট ছোট অনেক বিষয়েই মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তাই এখন তাকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হলে তাকে হত্যা করা হবে।
রাহাফ তার পরিবারের সঙ্গে কুয়েতে ছুটি কাটিয়ে ফিরছিলেন। ফেরার পথে ব্যাংকক হয়ে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার চেষ্টা করলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় ব্যাংকক বিমানবন্দরে আটক হন তিনি। থাইল্যান্ডের ভিসা না থাকায় কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করে একটি হোটেল কক্ষে আটকে রাখে। সেখান থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের অবস্থা তুলে ধরেন রাহাফ।
এক টুইটে তিনি বলেন, তার কাছে অস্ট্রেলিয়ার ভিসা আছে। কিন্তু বিমানবন্দরে সৌদি আরবের এক কুটনীতিক তার সাঙ্গে দেখা করে তার পাসপোর্ট জব্দ করেছেন। সেখানে সৌদি দূতাবাস ও কুয়েত এয়ারলাইন্সের লোকজন তাকে দেখে গেছে বলেও জানান রাহাফ।
বিবিসিকে রাহাফ বলেন, তিনি ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করেছেন। তাই নিজের জীবন নিয়ে সংশয়ে আছেন।
টুইটারে নিজের ছবি ও পাসপোর্টের ফটোকপি প্রকাশ করে রাহাফ লিখেন, ‘যেহেতু এখন আমার হারানোর কিছু নেই, তাই আমি আমার আসল নাম এবং সব তথ্য প্রকাশ করছি। আমার নাম রাহাফ মোহাম্মদ মুতলাক আল-কুনুন এবং এটা আমার ছবি।’
অন্যদিকে একজন সৌদি কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, রাহাফের কাছে পাসপোর্ট থাকলেও দেশে ফেরার টিকিট নেই। এরই মধ্যে তার বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা রাহাফের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের ডেপুটি ডিরেক্টর/উপ পরিচালক ফিল রবার্টসন সোমবার (৭ জানুয়ারি) এক টুইটার বার্তায় জানিয়েছেন, রাহাফ নিজেকে একটি কক্ষের মধ্যে আটকে রেখেছেন। তার দরজার বাইরে কুয়েত এয়ারের কর্মকর্তারা, থাই অভিবাসন দফতরের কর্মকর্তারা ও অন্যান্যরা অপেক্ষা করছেন। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত তাকে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার কারও সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না, ততক্ষণ তিনি (রাহাফ) বের হতে রাজি হচ্ছেন না বলে টুইট বার্তায় জানিয়েছেন ফিল।
থাইল্যান্ডের অভিবাসন দফতরের প্রধান পুলিশ কর্মকর্তা সুরাচেত হাকপার্ন সংবাদ মাধ্যমের কাছে বলেন, রাহাফ মোহাম্মাদের নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাকে আপাতত ফেরত পাঠাচ্ছেন না তারা। তিনি আরও বলেন, রাহাফের বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘের শরণার্থী শিবিরের (ইউএনএইচসিআর) সঙ্গে যোগাযোগ করবেন তারা।
অন্যদিকে রাহাফের ডিপোর্টেশন রদ করার জন্য ব্যাংককের ক্রিমিনাল কোর্টে থাই আইনজীবীরা একটি ইনজাংকশন ফাইল করেছেন। কিন্তু সোমবার কেসটা ডিসমিস করা হয়।
সারাবাংলা/আরএফ