মিয়ানমারের সুপ্রিম কোর্টে আপিল রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের
১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৪:১২
।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
মিয়ানমারে কারাদণ্ডিত বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দুই সাংবাদিক তাদের রায়ের বিরুদ্ধে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছেন। শুক্রবার (১ জানুয়ারি) তাদের আইনজীবীরা এই আপিল করেন। খবর রয়টার্সের।
গত সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দেশটির একটি নিম্ন আদালত রয়টার্সের সাংবাদিক ওয়া লোন(৩২) ও কিয়াও সোয়ি ও’কে (২৮) দোষী সাব্যস্ত করেন। শাস্তি হিসেবে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন। পরবর্তীতে ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন তারা। কিন্তু গত মাসে এক রায়ে তাদের আপিল খারিজ করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন- রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের আপিল নাকচ
হাইকোর্ট আপিল খারিজ করে দেওয়ায় শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন তাদের আইনজীবীরা। ধারণা করা হচ্ছে, সাজা থেকে মুক্তি পেতে এই আপিলই দুই সাংবাদিকের শেষ সুযোগ। আপিলে পুলিশের ফাঁদ পাতার প্রমাণ ও গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে অপরাধ করার প্রমাণের অভাবের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে রয়টার্স এক বিবৃতিতে বলেছে, আমরা আমাদের পিটিশনের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের প্রতি আহ্বান জানায় চূড়ান্তভাবে ওয়া লোন ও কিয়াও সোয়ি ও’কে ন্যায় বিচার প্রদান করা হোক। নিম্ন আদালতের ভুল পাল্টানো হোক এবং আমাদের সাংবাদিকদের তাৎক্ষণিকভাবে মুক্ত করে দেওয়া হোক।
গ্রেফতার ও কারাদণ্ড
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতন নিয়ে তদন্তকালীন সময়ে গ্রেফতার করা হন ওয়া লোন ও কিয়াও সোয়ি। পুলিশ সদস্যদের আমন্ত্রণে এক রেস্টুরেন্টে যাওয়ার পরই নিখোঁজ হন তারা।
ওয়া লোন ও কিয়াও সোয়ির দাবি, মিয়ানমার পুলিশ তাদেরকে ফাঁসিয়েছে। গ্রেফতারের সময় তারা রাখাইনের এক গ্রামে ১০ রোহিঙ্গা হত্যার ঘটনার তদন্ত করছিলেন।
আরও পড়ুন- মিয়ানমারে রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের ৭ বছর কারাদণ্ড
পরবর্তীতে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনের দায়ে তাদের সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সরকারি আইনজীবীদের দাবি, রাখাইন অঙ্গরাজ্যে সামরিক বাহিনীর অভিযান নিয়ে গোপন তথ্য ছিল ওয়া লোন ও কিয়াও সোয়ির কাছে।
তাদের বিচারকার্য বিশ্বজুড়ে সমালোচিত হয়েছে। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সসহ বিশ্ব নেতারা তাদের শাস্তির বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়েছেন।
এদিকে মিয়ানমারের বাইরে বীর হিসেবে দেখা হচ্ছে লোন ও সোয়ি’কে। টাইম ম্যাগাজিনের পার্সন অফ দ্য ইয়ার ২০১৮’র তালিকায় যৌথভাবে স্থান পেয়েছেন তারা।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন অঙ্গরাজ্যে সামরিক বাহিনীর নৃশংস অভিযান থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ৭ লাখ ২০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা। ওই অভিযান ঘিরে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, স্থলবোমা দিয়ে হামলাসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। জাতিসংঘ অভিযানটিকে জাতি নিধন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
সারাবাংলা/ আরএ