ওহাবি মতাদর্শের বিপরীতে অবস্থানের কথা জানালেন সৌদি যুবরাজ
৬ জুন ২০২১ ১৭:৩৭
সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান (এমবিএস) বলেছেন, দেশের শাসন এবং বিচারের ক্ষেত্রে কেবলমাত্র কুরআন এবং বিশুদ্ধ হাদিস ব্যতীত অন্যান্য উৎসগুলোকে বাতিলের মাধ্যমে সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, পবিত্র কুরআনে লিখিত বর্ণনার বাস্তবভিত্তিক এবং সময় উপযোগী প্রয়োগ নিশ্চিত করেত কাজ করছেন তিনি।
রিয়াদভিত্তিক আল-এরাবিয়া নিউজ নেটওয়ার্ককে দেওয়া এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে সৌদি যুবরাজ ভিশন-২০৩০ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এসব সংস্কার পরিকল্পনার কথা জানান।
এমবিএস-এর এই সংস্কার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে, স্নায়ুযুদ্ধের সময় থেকে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় প্রচারিত ওহাবি মতাদর্শ বা রাজনৈতিক ইসলাম তত্ত্ব অকেজো হয়ে পড়বে।
সেক্ষেত্রে অপরাধের শাস্তি হিসেবে পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা-দোররা মারা-খোঁজাকরণ প্রক্রিয়া বাতিল হবে। এছাড়াও, অবিশ্বাসী ও সমকামীদের মৃত্যুদণ্ডের শাস্তিও বৈধতা হারাবে।
লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, যুবরাজ যে ধর্ম সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছেন সৌদি আরবে এ ব্যাপারে আলোচনা করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এর আগে, সৌদি আরবে প্রচলিত ইসলামের আধুনিকায়ন এবং ইসলামি আইনের যুগোপযোগী প্রয়োগের দাবি তুলে অনেক মুসলিম বুদ্ধিজীবী এবং চিন্তক মৃত্যুদণ্ড সাজা ভোগ করেছেন, এখনও কারাবন্দী আছেন অনেকেই। অথচ তার বক্তব্য টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়েছে।
এ ব্যাপারে মোহাম্মাদ বিন সালমান বলেন, তিনি নিশ্চিত যে, ওহাবি মতাদর্শের জনক শেখ মোহাম্মাদ আবদুল ওহাব জীবিত থাকলে এই আদর্শিক অন্ধত্বের বিপরীতে নিজেই সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে হাজির হতেন।
প্রসঙ্গত, সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ ক্ষমতার উত্তরসূরি হিসবে মোহাম্মাদ বিন সালমানের নাম ঘোষণা করার পর থেকেই ধর্ম এবং রাষ্ট্রীয় সংস্কারের ব্যাপারে যুবরাজের নানান পরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়নের খবর সংবাদ মাধ্যমে আলোচিত হয়েছে। এর আগেও তার দেশে নারী স্বাধীনতার ব্যাপারে বিভিন্ন মন্তব্য করেন এমবিএস। রক্ষণশীল দেশটিতে ২০১৮ সালের ২৪ জুন নারীরা প্রথমবারের মতো গাড়ি চালানোর অনুমতি পেয়েছিলেন।
যদিও তার সমালোচকদের মতে ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করার স্বার্থে যুবরাজ মোহাম্মাদ সংস্কারের নামে তার প্রতিদ্বন্দ্বীদেরকে দমন করেছেন।
সারাবাংলা/একেএম