ঢাকা: দুর্যোগ বা সংকটকালে মানবাধিকার অক্ষুণ্ন রেখে সাংবাদিকদের কাজ করা উচিত। তবে এ সময়ে সবার আগে মানবাধিকারকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। দুর্ঘটনা বা দুর্যোগকালে আইন মেনে মানবিক প্রতিবেদন তৈরিতে গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক এক কর্মশালায় এসব কথা বলেন বক্তারা।
শনিবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর হোটেল হলিডে ইন-এ আন্তর্জাতিক মানবিক আইন এবং দুর্যোগে বা সংকটকালে ‘মানবিক প্রতিবেদন’ শীর্ষক কর্মশালা হয়। আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি (আইসিআরসি) বাংলাদেশ ও সুপ্রিম কোর্ট রিপোর্টার্স ফোরামের (এসআরএফ) উদ্যোগে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের (আইএইচএল) ওপর বিস্তর আলোচনা করেন আইসিআরসি বাংলাদেশের লিগ্যাল অ্যাডভাইজার ফাহমিদা করিম। বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে ছিলেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোহসীন-উল হাকিম।
তিনি বলেন, ‘আইনটির মূল উদ্দেশ্যে হলো সশস্ত্র সংঘাতের ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সীমিত রাখা। আর যারা সংঘাত বা সংঘর্ষে অংশ নেন না, তাদের সুরক্ষা দেয় আইএইচএল। মানবতার একটি আবহকে সংরক্ষণের চেষ্টা করে এই নীতি। একইসঙ্গে বিশেষ প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি বিবেচনা করে নারী-শিশুদের সুরক্ষা দেয় আন্তর্জাতিক মানবিক আইন।
দুর্যোগে আইন মেনে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা নিয়ে মোহসীন-উল হাকিম বলেন, আইন ও মানবাধিকার সবার জন্য সমান। দুর্যোগের পর উদ্ধারকাজে বাধা সৃষ্টি করে এমন সংবাদ প্রচার, শরীর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন ব্যক্তির নাম, পরিচয়, ছবি, ভিডিও প্রচার করা থেকে সাংবাদিকদের বিরত থাকতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সংঘাত-সংঘর্ষ কিংবা দুর্যোগকালে অবশ্যই আইন ও মানবাধিকার মেনে চলে সাংবাদিকতা করতে হবে। তা না হলে সাংবাদিকতা অর্থহীন হয়ে পড়বে। পাশাপাশি ক্ষুণ্ন হবে পেশার সম্মান। সংঘাত বা দুর্যোগকালে প্রতিবেদন তৈরিতে ব্যক্তির মানবাধিকারের বিষয়টি অগ্রাধিকারে রাখার আহ্বানও জানান এই সাংবাদিক।
এসআরএফের সভাপতি মাসউদুর রহমান বলেন, দুর্যোগ বা সংকটকালে সাংবাদিকদের সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। বিশেষ করে ছবি ও ভিডিও ধারনের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির যেন কোনোভাবেই মানবাধিকার লঙ্ঘন না হয়। সে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই সংবাদকর্মীদের কাজ করতে হবে।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য দেন আইসিআরসি বাংলাদেশের কমিউনিকেশন অ্যান্ড প্রিভেনশন অফিসার দীপালি গোঢ়। আইসিআরসির পরিচিতি তুলে ধরেন সংস্থাটির ডিজিটাল অফিসার মো. সাবির হোসেন। সমাপনী বক্তব্য রাখেন এসআরএফের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ডালিম।
দিনব্যাপী কর্মশালায় দেশ-বিদেশি বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সুপ্রিম কোর্ট রিপোর্টার্স ফোরামের ৩০ জন সদস্য অংশ নেন। কর্মশালা শেষে অংশগ্রহণকারীদের হাতে সনদ তুলে দেন বক্তারা।