ঢাকা: জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আশুলিয়ায় ছয়জনের লাশ পোড়ানোসহ সাতজনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন ও সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হচ্ছে আজ।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে এ সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে গত ২১ আগস্ট এ মামলায় ১৬ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। ওই দিন আসামিদের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে উপস্থিত আট আসামিকে অভিযোগ পড়ে শোনানো হয়। তাদের মধ্যে সাতজন নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। তবে এসআই শেখ আবজালুল হক দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তার স্বীকারোক্তির অংশ আদালতে রেকর্ড করা হয় এবং পরবর্তীতে লিখিত আবেদনের পর তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে অনুমোদন পান।
সেদিন প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ান ও তারেক আবদুল্লাহ। স্টেট ডিফেন্স এবং আসামিপক্ষের আইনজীবীরাও উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৩ আগস্ট স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষে আট আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। তবে পলাতক সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ আটজন হাজির না হওয়ায় তাদের পক্ষে সরকারি খরচে আইনজীবী নিয়োগ করা হয়।
গ্রেফতার আসামিদের মধ্যে আছেন— ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান, এসআই আবজাল ও কনস্টেবল মুকুল। পলাতক আসামিদের গ্রেফতার ও হাজিরের জন্য গত ১৬ জুলাই পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
প্রসিকিউশন এ মামলায় ৬২ জন সাক্ষী, ৩১৩ পৃষ্ঠার তথ্য, ১৬৮ পৃষ্ঠার দালিলিক প্রমাণ ও দুটি পেনড্রাইভ জমা দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান ছয় তরুণ। পরে পুলিশ ভ্যানে তাদের লাশ তুলে আগুনে পোড়ানো হয়। নৃশংস ওই ঘটনায় জীবিত এক ব্যক্তিকেও পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়।